|
‘ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও’ স্লোগানে কর্মসূচি
বরিশালে চালের দাম বাড়ায় মানববন্ধন
মুুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালে চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (জুলাই ১) নগরীর অশ্বিনী কুমার হলের সামনে ‘ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও’ স্লোগানে এ কর্মসূচি পালন করে প্রান্তজন ও খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক। এ সময়ে তারা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে। কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং প্রতি ১০ জনে তিনজন প্রয়োজনীয় খাদ্য সংস্থান করতে পারছেন না। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের আয় না বাড়ায় ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। ২০২৪ সালের শেষ সপ্তাহে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির হিসাব অনুযায়ী, এখন প্রতি মাসে ন্যূনতম খাদ্যশক্তি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে একজন মানুষের ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ৫১ টাকা, যা খাদ্য দারিদ্র সীমার চেয়ে ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ দত্ত বলেন, ‘পরিকল্পনা কমিশনের জুন ২০২৫-এর তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের সামগ্রিক খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে এককভাবে চালের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব ছিল প্রায় ৪০ শতাংশ। বোরো মৌসুমে চালের উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকা সত্ত্বেও প্রত্যাশিত স্বস্তি আসেনি বাজারে। তিনি বলেন, মিল পর্যায়ে খরচ বৃদ্ধি, ধানের দামে অস্থিরতা, অবৈধ মজুতদারি এবং বাজার নজরদারির অভাবে চালের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। এর ফলে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। অথচ ভোক্তাকে চড়া মূল্যে চাল কিনতে হচ্ছে। বরিশাল পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরামের সদস্যসচিব সুভাষ দত্ত বলেন, ‘আয় ও ক্রয়ক্ষমতার ভারসাম্য না থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ তাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা থেকে পুষ্টিকর উপাদান যেমন:-মাছ, মাংস, ডাল বা সবজি বাদ দিয়ে শুধু ভাত-নির্ভর খাবার খাচ্ছেন, যা দীর্ঘমেয়াদি পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করেছে। আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতা মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ সময়ে খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) কৃষকের কাছ থেকে সরকারের সরাসরি চাল ক্রয়ের আওতা বৃদ্ধি করা, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা, উৎপাদন মূল্য নির্ধারণ এবং ভোগের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার সহায়তায় টিসিবি এবং ওএমএস কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রয়োজনভিত্তিক সহায়তার উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং যথাযথ মনিটরিং ও সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা রোধ করার মাধ্যমে দ্রুত বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে চালের মূল্য ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আনার দাবি জানায়। কর্মসূচিতে স্থানীয় জনগণ এবং পরিবেশ সচেতন মানুষ, যুব প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, পরিবেশকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
Post Views: ০
|
|