বিষয়টি শোনার পর বিএমপি কমিশনারের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ
বরিশালে কিশোরীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগে মা-বাবা জেলে
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালে মা-বাবাই নিজের কিশোরী মেয়েকে (১৪) দেহব্যবসায় বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাবা-মায়ের নামে। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা-মাসহ তিনজনের নামে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনারের নির্দেশে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বরিশাল নগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সার্কুলার রোড়ের গাজী বাড়ি মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগকারী কিশোরী ওই এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। লিখিত অভিযোগে ভিকটিম উল্লেখ করে, তার মা-বাবা বাসায় বসে বিভিন্ন ধরণের মাদক এবং দেহব্যবসা করেন। তাদের বিরুদ্ধে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। অতীতে তারা দু’জনেই পুলিশের হাতে একাধিকবার আটকও হয়েছেন।অভিযোগে আরও বলা হয়, বেশ কয়েকমাস ধরে তাকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছেলেন বাবা-মা। কিন্তু সে অস্বীকৃতি জানালে প্রতিনিয়তই নির্যাতন করতেন তারা। মহামারী করোনার সময় মা একাধিক ছেলের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে মারধর করে জোরপূর্বক তাকে দিয়ে ছেলেদের সঙ্গে কথা বলিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিত। চলতি বছরের জুন মাসে মা নগরীর মিম মধুঘরের মালিক আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের বাসায় নিয়ে যায় কিশোরীকে। সেখানে আনোয়ারের সঙ্গে একটি কক্ষে তাকে আটকে রাখে। পরে আনোয়ার তার শ্লীলতাহানি করে। কিশোরীর দাবি, সেই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আনোয়ারের সঙ্গে তাকে বহুবার যৌনকাজে বাধ্য করেছে বাবা-মা। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর অভিযোগ, বিষয়টি তার বড় বোন ও দুলাভাইকে জানালে তাদেরকে হাত-পা ভেঙে মাদকসহ পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। কিশোরীর বড় বোন অভিযোগ করেন, তাকেও মা-বাবা দেহব্যবসায় বাধ্য করতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি একটি ছেলেকে বিয়ে করে রক্ষা পান। এ অবস্থায় শনিবার (নভেম্বর ১৩) বিকেলে কিশোরী ঘর থেকে পালিয়ে বিএমপি মো: শাহাবুদ্দিন খানকে তার অফিসে যেয়ে বিস্তারিত জানালে তিনি এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ শনিবার রাতেই অভিযান চালিয়ে কিশোরীর মা-বাবা ও মধু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে। রোববার (নভেম্বর ১৪) তাদের বিরুদ্ধে ভিকটিমের বড় বোন মামলা দায়ের করার পর পুলিশ অভিযুক্তদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, ওই কিশোরীর অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মাসুম বিল্লাহর আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।