|
২২ থেকে ২৩ টি কোম্পানি রয়েছে বরিশালে, ডিলার রয়েছেন অন্তত ১৫ জন, এরাই মূলত বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন
বরিশালে এক মাসের ব্যবধানে ফের বাড়ল এলপি গ্যাসের দাম : জনজীবনে নাভিশ্বাস
এম. বাপ্পি, অতিথি প্রতিবেদক : বরিশাল নগরীতে ফের বেড়েছে এলপি গ্যাসের দাম। ঈদুল আজহার পরপরই ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সিলিন্ডার প্রতি গ্যাসের মূল্য। এমনিতেই করোনার প্রভাবে ভোগান্তিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। তার উপর হঠাৎ করে কোন কারণ ছাড়াই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তবে এই দাম বৃদ্ধির সঠিক কোন কারণ দেখাতে পারেননি খুচরা বিক্রেতারা। তাদের দাবি কোম্পানি তাদের কাছ থেকে যে দাম রাখছে তার উপর ভিত্তি করে তারাও দাম বাড়িয়েছেন। চলতি মাসে কোম্পানি থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনাও এসেছে। সে অনুযায়ী সিলিন্ডার প্রতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সবধরনের এলপি গ্যাসের দাম। সর্বশেষ গত জুলাই মাসে গ্যাসের দাম সিলিন্ডার প্রতি বেড়েছিল ৩০ টাকা পর্যন্ত। আর এক মাসের ব্যবধানে গ্যাসের এমন মূল্য বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। যদিও সরকারি গ্যাসের দাম ৬০০ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। তবে চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বিধায় বাজারে এই গ্যাসের সংকট অনেকটাই তীব্র। আর তাই বাধ্য হয়েই ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি মূল্যে বাজার থেকে গ্যাস কিনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এদিকে সিলিন্ডারের গায়ে মূল্য উল্লেখ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। তবে সেই নির্দেশনা কেবল কাগজে কলমেই রয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন। সরেজমিন পরিদর্শনে বরিশাল নগরীতে বিক্রিত কোন কোম্পানির সিলিন্ডারেই মূল্য তালিকার উল্লেখ দেখা যায়নি। এমনকি বিক্রয় রশিদ নিয়েও মাথাব্যথা দেখা যায়নি ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে। আর এ কারণে সিলিন্ডার কিনতে গিয়ে গড়ে অন্তত ৫০ টাকা করে ঠকছেন সাধারণ মানুষ। যদিও খুচরা বিক্রেতাদের দাবি সিলিন্ডার সরবরাহের সময় কোন ধরনের রশিদ দিচ্ছে না কোম্পানিগুলো। তাই বাড়তি দাম আদায়ে গ্রাহকদের সাথে অনাকাঙ্খিত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ বিষয়ে এলপি গ্যাসের যমুনা কোম্পানির পরিবেশক মো: শাহিন বলেন, এলপি গ্যাসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভর করে। তাই উচ্চাদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও সিলিন্ডারের গায়ে মূল্য তালিকা উল্লেখ করা সম্ভব হচ্ছে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিলিন্ডার সরবরাহের সময় রশিদ নিতে আগ্রহী নন খুচরা বিক্রেতারা। তাই তারাও রশিদ দেন না। নগরীর হাসপাতাল রোডের খুচরা-পাইকারি ব্যবসায়ী মো: তুহিন জানান, গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে সবধরনের গ্যাসের দাম ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে তিনি লাফস ৮২০ টাকা, বসুন্ধরা ৮৫০ টাকা, বেক্সিমকো ৯০০ এবং ওরিয়ন ৮২০ টাকায় বিক্রি করছেন। ঈদের পরপরই এই দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে এলপি গ্যাসের আকস্মিক মূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করেছেন ব্যবহারকারীরা। নগরীর ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোডের বাসিন্দা মো: মুনসুর আহমেদ জানান, করোনার প্রভাবে এমনিতেই অর্থসংকটে ভুগছেন। তার উপর গ্যাসের দাম বাড়ার বিষয়টি অমানবিক। এর ফলে সাংসারিক খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। একাধিক গ্রাহক তার সাথে একমত পোষণ করে এলপি গ্যাসের দাম সহনীয় পর্যায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। জানতে চাইলে বরিশাল জেলা মার্কেটিং অফিসার হাসান সরোয়ার বলেন, বরিশালে এলপি গ্যাসের ২২ থেকে ২৩ টি কোম্পানি রয়েছে। আর ডিলার রয়েছেন অন্তত ১৫ জন। এরাই মূলত বরিশালের গ্যাসের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে হঠাৎ করে কোন কারণ ছাড়াই গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি কাম্য নয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্যাস কোম্পানির খুচরা বিক্রেতা এবং ডিলার উভয়কেই রশিদ সংগ্রহ করতে হবে। এসব অনিয়মের বিষয়ে খতিয়ে দেখে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
সূত্র : আজকের বার্তা
Post Views:
১৯৪
|
|