|
গ্রেফতারদের মধ্যে চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের জেলা প্রতিনিধি সুমন সিকদার ও বাংলা নিউজের জেলা প্রতিনিধি জামাল মীর রয়েছেন
বরগুনায় ‘মা-মেয়ের দেহব্যবসা’ শিরোনামের ভিডিও ভাইরাল করেছে একটি চক্র, গ্রেফতার ৪!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরগুনায় রাতে সাংবাদিক পরিচয়ে ঘরে ঢুকে আপন ভাইবোন ও মায়ের ছবি তুলে দেহ ব্যবসায়ী শিরোনামে ইউটিউব ও ফেসবুকে ভাইরাল করেছে একটি চক্র। এতে সমাজ থেকেও বিতাড়িত হতে হয়েছে ওই নারী ও তার পরিবারকে। বেঁচে থাকার ইচ্ছা যখন ক্ষীণ হয়ে আসে পরিবারটির পাশে দাঁড়ায় সাংবাদিক সংগঠন ও পুলিশ। গ্রেফতার হয় ওই চক্রের কয়েকজনকে। মিথ্যা শিরোনামে অপবাদ দিয়ে ভিডিও ভাইরালের পর স্বাভাবিক জীবন, সংসার ও সমাজ থেকে অনেকটা বঞ্চিত হওয়া এ পরিবারের সদস্যরা তুলে ধরেন তাদের করুণ অবস্হার কথা। ভুক্তভোগী মেয়েটি বলেন, গ্রামের মানুষ আমার বাবাকে ঘৃণা করছেন, আগে আমাদের যে চোখে দেখতে এখন তারা অন্য চোখে দেখছে। ঘটনার শুরু পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ থেকে। লাইব্রেরির পেছনে মায়ের বাসায় এসে কুনজরে পড়েন জামাল ও সুমনের। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল সাংবাদিক পরিচয়ে ঘরে ঢোকে ১৪ থেকে ১৫ জনের একটি দল। মারধর, অকথ্য ভাষায় গালাগালির পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করা হয় তাদের। তারপরও তাদের প্রস্তাবে ওই নারী রাজি না হওয়ায় গত ২৪ এপ্রিল জামাল মির তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে সেই ভিডিও। এছাড়া মা-মেয়ের দেহব্যবসা শিরোনামে তার নিজস্ব নিউজ পোর্টাল ও একাধিক ফেসবুক পেইজে ভাইরাল করে আপন ভাইয়ের সাথে থাকা ভিডিওটি। মেয়েটির মা বলেন, আমার সন্তানদের নিয়ে তারা এমন একটা ছবি ভাইরালে করেছে যা পৃথিবীতে আমাদের আর মুখ দেখানোর জায়গা নেই। মেয়েটির ভাই বলেন, প্রথমে আমার কাছে জানতে চায় এ মেয়েটি কে, আমার বোন বলে জানাই। তারপর আমার মাকে মারধর শুরু করে, আর বলে এখানে কি ব্যবসা শুরু করেছেন। তাদের প্রকাশিত ভিডিও দেখে ও মেয়েটির অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমাজ এগিয়ে আসে। বরগুনা প্রেসক্লাবের সুপারিশে বরগুনা থানায় মামলা নেয়া হয় ওই সাংবাদিক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে। বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জিব দাস বলেন, আমি বলেছি আপনারা এসপির কাছে যান, আর কোনো ধরনের সহযোগিতা লাগলে আমরা করব। বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস খান ইমন বলেন, আমরা যারা মফস্বল সাংবাদিকতা করি, আমি মনে করি, এ বিষয়ে সর্বপ্রথম প্রশিক্ষণ থাকা উচিত। আমরা কোথায় যেতে পারব, কী ধরনের প্রশ্ন করব সেগুলো জানা প্রয়োজন। শুধু অপসাংবাদিকতা নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ গুজব বা মিথ্যাচার করে কারো ক্ষতির চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শাহজাহান। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারটি আবেদন করেছে, আর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়ছে। আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা তদন্তধীন রয়েছে। গত ৬ মে ৭ জনের নাম উল্লেখ ও ৫-৭ জনকে অজ্ঞাত রেখে মামলা করা হলে ওইদিন রাতেই ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারদের মধ্যে চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের জেলা প্রতিনিধি সুমন সিকদার ও বাংলা নিউজের জেলা প্রতিনিধি জামাল মীর রয়েছেন।
Post Views:
১৮৩
|
|