Current Bangladesh Time
রবিবার মে ৫, ২০২৪ ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » ফের আলোচনায় কালাম মোল্লার চাঁদাবাজি, এবার রুখে দিল পুলিশ, হতে পারে মামলা! 
Tuesday May 5, 2020 , 12:02 am
Print this E-mail this

গড়িয়ারপাড়ে সরকারি জমিতে প্লানবিহীন ভবন নির্মাণ করলে তা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা ভেঙে দেন

ফের আলোচনায় কালাম মোল্লার চাঁদাবাজি, এবার রুখে দিল পুলিশ, হতে পারে মামলা!


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট :  আবারও ফের আলোচনায় বরিশাল নগরীর উত্তর-পশ্চিম জনপদের কাছে এক আতংকের নাম, আওয়ামী লীগ নেতা কালাম মোল্লা। নগরীতে নয়, এবার সু-দূর সদর উপজেলার লাহারহাট ফেরিঘাটে যানবাহনে নতুন করে শুরু করেছেন চাঁদাবাজি। রোববার সকাল থেকে বরিশাল জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে ট্রাকপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন শুরু করে। স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান সুজন গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে এই স্পটটিতে চাঁদা উত্তোলন রুখে দিলে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে কালাম মোল্লা নিয়ন্ত্রণ ওই সংগঠনের শাখা অফিসের সভাপতি পরিচয় দিয়ে স্থানীয় মহসিন, দিনার, শুক্কুর, আকাশসহ অন্তত ১০ জন এই চাঁদাবাজি শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আ’লীগ নেতা কালাম মোল্লা রোবববার সকালে নিজে সেখানে গিয়ে তাদের কথিত শ্রমিক সংগঠনটির তালা খুলে দেন এবং দাঁড়িয়ে থেকে সহযোগীদের যানবাহন থেকে নির্ধারিত হারে টাকা উত্তোলনের নির্দেশ দেন। এনিয়ে ট্রাকসহ যানবাহন মালিক-চালকদের মাঝে অসন্তোস দেখা দিলেও কালাম মোল্লা চাঁদা উত্তোলনের বিষয়টি চাঁদাবাজি মনে করছেন না। বিপরিতে বরিশাল নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কালাম মোল্লার ভয়ে আতংকিত, মালিক-শ্রমিকেরাও মুখ খুলছেন না। স্থানীয় সূত্র জানায়, কালাম মোল্লা নিজেকে জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পরিচয় দিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে ট্রাকসহ যানবাহনে বছরের পর বছর চাঁদাবাজি করে আসছেন। পর্যায়ক্রমে লাহারহাট ফেরিঘাটে এই সংগঠনের একটি শাখা অফিস খুলে চলে চাঁদা উত্তোলন। টাকা দিতে নারাজ মালিক-শ্রমিকদের সাথে এনিয়ে একাধিকবার শাখা অফিসের সভাপতি মহসিনসহ তাদের লোকজনদের বাক-বিতন্ডা থেকে হাতাহাতি-মারামারির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে। গত বছরের পহেলা জুন মাসে এমন একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংক্ষুব্ধ জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান সুজনের নেতৃত্বে সেই চাঁদাবাজি রুখে দেয় এবং ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে চাঁদাবাজিতে জড়িত কালাম মোল্লার দুই অনুসারী দিনার ও আকাশকে একচোট দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করে। সেই ঘটনায় ভুক্তোভুগী এক ট্রাকচালক বাদী হয়ে সভাপতি মহসিনসহ কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এরপর প্রায় এক বছর সেখানে চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও রোববার (৩ মে) সকাল থেকে ফের শুরু হয়। সূত্রমতে, সম্প্রতি সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নে কথিত হামলার ঘটনায় মামলা ও সংগঠন থেকে বহিস্কার সুপারিশে ছাত্রলীগ নেতা সুজন রাজনীতির মাঠে কোনঠাসা হয়ে পড়েন এবং অন্তরালে চলে যান। সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ফেরিঘাটটিতে চাঁদাবাজি শুরু করতে স্বরুপে মাঠে নামেন কালাম মোল্লা। রোববার সকালে তিনি নিজে প্রাইভেটকারযোগে অবস্থান নেন এবং সেই সাথে স্থানীয় শাখা সভাপতি মহসিনসহ অন্তত আরও ১০ হাজির হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গাড়ি থেকে নেমে উপস্থিত সকলের মাঝে কালাম মোল্লা সুজনকে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ‘খিস্তিখেউর’ করেন। পরে তিনি অনুসারীদের নিয়ে কার্যালয়ের তালা খুলে উদ্বোধন ঘোষণা দিয়ে ট্রাক থেকে চাঁদা উত্তোলনে নির্দেশ দিয়ে দেন। কিন্তু কালাম মোল্লা মিনিট ত্রিশ পরে ত্যাগ করলে এই চাঁদা উত্তোলনকে কেন্দ্র ভোলা থেকে বরিশালগামী এক ট্রাক চালকের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সূত্রগুলো জানায়, এনিয়ে অপরাপর ট্রাকসহ যানবাহন মালিক-শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোস বিরাজ করলেও কেউ কালাম মোল্লার ভয়ে মুখ খুলছেন। কারণ এর আগে একাধিক চালক-ড্রাইভার প্রতিবাদ করতে গিয়ে কালাম মোল্লার হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। মূলত এই কারণে এখন আর কেউ বিরুদ্ধে বলা তো দূরের কথা, নাম শুনলেই শুরু হয় থরকম্পন। তবে ছাত্রলীগ নেতা সুজন এলাকায় না থাকলেও কালাম মোল্লার চাঁদাবাজির এই ঘটনা কীর্তনখোলার পূর্ব জনপদ সাহেবেরহাটসহ আশাপাশের বাসিন্দাদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। ইতিমধ্যে লাহারহাট ফেরিঘাটের চাঁদাবাজি বন্ধে বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র হস্তক্ষেপ কামনাসহ সুজনকে রাজনীতির মাঠে ফিরে পাওয়ার দাবি রেখেছে। তবে ফেরিঘাটে এবারের চাঁদাবাজিতে শাখা সভাপতি মহশিন জড়িত নন বলে এ প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেছন। তার ভাষ্য, রোববার সকালে কালাম মোল্লা তাকে গাড়িযোগে লাহারহাট নিয়ে যান এবং তিনিসহ বেশ কয়েকজনের উপস্থিতিতে কার্যালয়টি উদ্বোধন করেন। অথচ নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ট্রাক চালাক জানান, কালাম মোল্লা চলে যাওয়ার পরপরই মহসিনের নির্দেশে চলে চাঁদাবাজি। তিনি কার্যালয়ের অভ্যন্তরে চেয়ারে বসে ছিলেন, বাইরে অন্তত দিনার, শুক্কুর, আকাশসহ ৫-৬ জন শ্রমিকদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা হারে টাকা তোলে। এমন বক্তব্যের বরাত দিয়ে জানতে চাইলে মহসিন তালগোল পাকিয়ে ফেলেন এবং বিষয়টি নিয়ে নেতা কালাম মোল্লার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। কালাম মোল্লা ট্রাক থেকে নির্ধারিত হাতে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কিন্তু তার দাবি- ইউনিয়নের সকল নিয়ম মেনে শ্রমিকদের কল্যাণ তহবিলের জন্য টাকা সংগ্রহ করছেন। যদিও এ প্রতিবেদকের নানামুখী প্রশ্নে কালাম মোল্লা মোবাইল সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করার আগে আপোষ করার প্রস্তাব দিয়ে বিষয়টি চেপে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এই বিষয়ে জানতে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করা হয়ে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে মোটেও অবগত নন বলে দাবি করেন। তবে শিগগিরই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান। অঘটন পটিয়াসী কালাম মোল্লা একের পর বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিয়ে সর্বদাই আলোচনার কেন্দ্রুবিন্দুতে থাকেন। সাম্প্রতিকালে নিজ এলাকায় গড়িয়ারপাড়ে সরকারি জমিতে প্লানবিহীন ভবন নির্মাণ করলে তা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা ভেঙে দিলে তিনি তাদের ওপর হামলা করেন। সেই ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হলেও পুলিশের নিলুপ্তার কারণে তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের কালাম মোল্লা লাহারহাট ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে আলোচনায় আসলেন।

সূত্র : বরিশাল ক্রাইম নিউজ




Archives
Image
শ্রমিকের ওপর হামলায় সড়ক অবরোধ, উত্তপ্ত বরিশাল নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল
Image
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে দলগত ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
Image
সর্বনিম্ন রিচার্জের মেয়াদ বাড়াল গ্রামীণফোন
Image
বড় ভাইকে পিটিয়ে হত্যা, ছোট ভাই গ্রেফতার
Image
পদত্যাগ করে দুধ দিয়ে গোসল বিএনপি নেতার