Current Bangladesh Time
বুধবার এপ্রিল ২৪, ২০২৪ ৩:৩৭ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » ফারদিন হত্যায় ‘রায়হান গ্যাং’-এর সংশ্লিষ্টতা, লাশ গুম করতে ফেলা হয় নদীতে 
Tuesday November 15, 2022 , 9:16 pm
Print this E-mail this

নিখোঁজের দুদিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ

ফারদিন হত্যায় ‘রায়হান গ্যাং’-এর সংশ্লিষ্টতা, লাশ গুম করতে ফেলা হয় নদীতে


ইনসেটে ফারদিন, গ্যাংস্টার রায়হান

মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশকে হত্যার নেপথ্যে উঠে এসেছে ‘রায়হান গ্যাং’-এর সংশ্লিষ্টতা। এই গ্যাংয়ের প্রধান রায়হান ওরফে হিরোন্সি রায়হান ওরফে হিরো রায়হান ওরফে গ্যাংস্টার রায়হান নামে পরিচিত। রায়হান থাকেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৪ নম্বর ব্লকের একটি বাসায়। ঘটনার দিন গত ৪ নভেম্বর রাতে ফারদিনকে হত্যা করতে সরাসরি অংশ নেয় রায়হান। রায়হানের নেতৃত্বে পরিচালিত এই দলটির সদস্য আট থেকে ১০ জন। তারা সবাই এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি। এছাড়া রায়হানের পরিবারের সবাই মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। মূলত সিটি শাহীনের ছত্রছায়ায় রায়হান মাদক কারবারিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যেতেন। চনপাড়ায় গত বৃহস্পতিবার র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত রাশেদুল ইসলামের ওরফে সিটি শাহীনের সঙ্গে রায়হানের ঘনিষ্ঠতা ছিল। সিটি শাহীন নিহতের পরে এলাকা ছাড়ে রায়হান গ্যাং। এদিকে স্থানীয়রা জানান, চনপাড়ার চিহ্নিত মাদক কারবারি ও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। বিশেষ করে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সিটি শাহীন নিহত হওয়ার পর কেউ কেউ পুরো পরিবার নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন। চনপাড়ার দেড় শতাধিক দোকানের বন্ধ রয়েছে অধিকাংশই। এরই মধ্যে রায়হানের গ্যাংস্টার গ্রুপের কয়েকজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোনো বিষয় নিয়ে ফারদিনকে ফাঁদে ফেলে ‘ফিটিং দিয়ে’ জিম্মি করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চনপাড়া বস্তিতে জোর করে নিয়ে গেছে হয়তো। এরপর তাঁকে হত্যার পর শীতলক্ষ্যা নদীতে মরদেহ ফেলে গুম করার চেষ্টা করা হয়। ফারদিন হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই ছায়াতদন্ত করছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, রায়হান গ্যাংয়ের সদস্য টাক রবিন, মিঠুন ওরফে মিঠু, পিচ্চি শাহ আলম, ডাকাত মোস্তফার ভাগিনা মোবারক, উজ্জ্বল ও মাল্টা রবিনসহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। রায়হানসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করা গেলে ফারদিন হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উন্মোচিত হবে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, চনপাড়াকেন্দ্রিক গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা নানা কৌশলে ফাঁদেও ফেলেন অনেককে। কেউ আবার তাদের তৈরি করা ফাঁদে পা দেন। ওই রাতে চনপাড়ায় কোনো ধরনের ফাঁদে ফারদিনকে ফেলা হয়েছিল কি না, তা আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এত রাতে চনপাড়া এলাকায় তাঁর উপস্থিতি বের করার চেষ্টা চলছে। চনপাড়া স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চনপাড়া বস্তিতে ‘রায়হানের সেল্টারদাতা’ হিসেবে কাজ করছে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষনের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মো. বজলুর রহমান ও মনু ওরফে খালা মনুসহ একাধিক মাদক সম্রাট। বজলুর রহমান ও মনুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল বন্দুকযুদ্ধে নিহত সিটি শাহীনের। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মিসিং ফারদিনকে প্রথমে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের পর র‍্যাব ঘটনার ছায়া তদন্ত চালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি, এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। ফারদিন হত্যাকাণ্ডের মোটিভের বিষয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ফারদিন হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন ফুটপ্রিন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চনপাড়ার আশেপাশে ফারদিনকে হত্যা করা হয়। রায়হানকে পরিকল্পিপতভাবে হত্যা করে রায়হান গ্যাং। রায়হান গ্যাংয়ের অপরাধের ধরণ ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ফারদিন কেন সেখানে গিয়েছিল জানতে চাইলে মঈন বলেন, ফারদিন একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কেন সেখানে গিয়েছিলেন এবং তাঁকে কেন হত্যা করা হলো সেই মোটিভ উন্মোচনে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা দলসহ র‍্যাবের একাধিক টিম কাজ করছে। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, চনপাড়া থেকে ফারদিনের গ্রামের বাসা খুব বেশি দূরে নয়। যাদেরকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারলে হত্যাকাণ্ডের কারণ ও মোটিভ জানা যাবে। কায়েতপাড়া ও চনপাড়া এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বজলুর বাবা এক সময় বস্তির গুদারাঘাট এলাকায় নৌকা চালাতেন। ১০ বছর আগেও একটি চালের দোকানের মালিক ছিলেন বজলু। এর আগে ছিঁচকে চোর থেকে বাসের হেলপারিও করেছেন। চনপাড়া বস্তির পুরো মাদকের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন বজলু। কয়েকশ মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তিনি প্রতি মাসে মাসোহারা পান কোটি টাকা। এছাড়া প্লট দখল, জিম্মি করে টাকা উদ্ধার, পানির ব্যবসা, ঠিকাদারি, চাঁদাবাজি, নৌকার ঘাট আর বাজার নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে সব কাজের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ তার হাতে। বজলুর বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে একাধিক। ভৌগলিক কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শত চেষ্টার পরেও চনপাড়ার কর্তৃত্ব নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। কারণ, চনপাড়া বস্তিতে প্রবেশের একটি মাত্র পথ থাকলেও এর তিন দিকে রয়েছে নদীপথ। ফলে সহজেই মাদক আনা নেওয়া এবং পুলিশের চোখ ফাঁকি দেওয়া সম্ভব। মূলত চনপাড়ায় মাদক বিক্রি হয় কয়েকটি স্তরে। প্রতিটি সিন্ডিকেটের একটি বা দুটি করে ওয়াচ পার্টি থাকে। এদের কাজ পোশাকে বা সাদা পোশাকের পুলিশ-র‌্যাব দেখলে সতর্ক করে দেওয়া। এক গ্রুপ শুধুমাত্র খুচরা বিক্রি করে, যারা এক স্থানে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। আর বড় পাইকারি চালান নিয়ন্ত্রণ করে খোদ সিন্ডিকেটের প্রধানরা। বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ গত ৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওই দিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের দুদিন পর গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।




Archives
Image
পিরোজপুরের কাউখালীতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: চান মিয়ার শেষ বিদায়
Image
বরিশালে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় কথিত যুবলীগ নেতা মাসুদ গ্রেফতার
Image
২৪ বছর পর কারামুক্ত ওলিউলকে বাঁচার স্বপ্ন দেখালেন বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
আবারও ক্যান্সারে মৃত্যু, বড়সড় জরিমানার মুখে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’
Image
অকালেই নিভে গেল শিশু সামিয়ার জীবন প্রদীপ