|
সরকারি পাঁচ ব্যাংকে সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ
প্রশ্নপত্র ফাঁস : বুয়েটের সেই অধ্যাপককে অব্যাহতি, তদন্ত কমিটি গঠন
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : পাঁচটি সরকারি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সরকারি পাঁচ ব্যাংকে সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. নিখিল রঞ্জন ধরকে বিভাগীয় প্রধান থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেন। অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, সরকারি পাঁচ ব্যাংকে সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধরকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীন পাঁচটি সরকারি ব্যাংকের ১ হাজার ৫১১টি অফিসার ক্যাশ পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন বিকেলে এক ঘণ্টার পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর একাধিক প্রার্থী অভিযোগ করেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০০টি প্রশ্নের প্রিন্ট করা উত্তরপত্র ফেসবুকে পাওয়া গেছে। ওই পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বে ছিল আহছানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর পরীক্ষাটি বাতিল করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার সিলেকশন কমিটি। এ ঘটনায় আহছানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারীসহ ডজনখানেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে বুয়েটের অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধরের নাম এসেছে। গত ৬ নভেম্বর থকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে চাকরির প্রশ্নফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনাল টিম। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মোক্তারুজ্জামান রয়েল, শামসুল হক শ্যামল, জানে আলম মিলন, মোস্তাফিজুর রহামান মিলন ও রাইসুল ইসলাম স্বপন। পরের দিন গ্রেফতার করা হয়—সোহেল রানা, এমদাদুল হক খোকন ও এবিএম জাহিদ নামে আরও তিন জনকে। গ্রেফতারকৃতদের পাঁচ জনই বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা। সর্বশেষ ১৭ নভেম্বর রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এই চক্রের অন্যতম হোতা দেলোয়ার, পারভেজ ও রবিউল নামে তিন জনকে। তারা তিন জনই আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। গ্রেফতারের পরদিন তিন জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তারের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে দেলোয়ার বলেছেন, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপা হওয়ার পর প্রতিবারই বুয়েটের অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধর দুই সেট করে প্রশ্ন ব্যাগে ঢুকিয়ে বাসায় নিয়ে যেতেন। দেলোয়ার নিজেও একাধিকবার তার ব্যাগে প্রশ্ন ঢুকিয়ে দিয়েছেন বলে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দাবি করেছেন। চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে বুয়েটের শিক্ষকের সম্পৃক্ততা নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বুয়েট কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিলো। তবে নিখিল রঞ্জন ধর অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করে জানান, তিনি প্রশ্ন অ্যাপ্রুভ হওয়ার পর ছাপা হওয়া প্রথম কপি নিজের ব্যাগে রাখতেন। তবে তা আবার ফেলে দিতেন। তিনি ছাপাখানা থেকে প্রশ্নপত্র বাসায় নিয়ে আসেননি। বুয়েটের এই শিক্ষক জানান, তিনি আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মৌখিক ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও পরীক্ষা নেওয়ার কাজে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতেন। এজন্যই তিনি প্রশ্নপত্র ছাপা হওয়ার সময় আশুলিয়ার আহছানিয়ার প্রেসে যেতেন। তবে তার বক্তব্যে নানারকম অসংলগ্নতা পাওয়া যায়।
Post Views:
১৭১
|
|