ডায়াবেটিক রোগীদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে যত ভ্রান্ত ধারণা
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের খাদ্যব্যবস্থা নিয়ে আমাদের অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। তাদের জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাসে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাবার নিয়ে অনেকের মনেই নানা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। কোন ধরনের খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী, এ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে অনেক গবেষণা করা হয়েছে। খাবার নিয়ে ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝে যেসব ভ্রান্ত ধারণা বিরাজ করে, সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
ধারণা-১: অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবারে ডায়াবেটিস হয়
একজন ব্যক্তি কীভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, তার কারণসমূহ কম-বেশি সকলেরই জানা। তারপরও অনেকেই ভেবে থাকেন, চিনি খেলে ডায়াবেটিস হয়। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। চিনি খেলেই ডায়াবেটিস হয় না। বরং ডায়াবেটিস হলে চিনি খাওয়া কমিয়ে এনে প্রয়োজনবোধে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হয়। আমরা যখন কোনো খাবার খাই, তা গ্লুকোজে পরিণত হয়, যা কি না কোষে গিয়ে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। অগ্ন্যাশয়ে এক বিশেষ ধরনের হরমোন ইনসুলিন উৎপন্ন করে। এই ইনসুলিন শরীরের গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি যে খাবার গ্রহণ করে, তা শক্তিতে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ইনসুলিন শরীরে উৎপন্ন হয় না।
ধারণা-২: শ্বেতসার জাতীয় খাবার ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক
এর উত্তর হচ্ছে-না, মোটেই ক্ষতিকারক নয়, বরং শ্বেতসার জাতীয় খাবার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য খুবই স্বাস্থ্যসম্মত। রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে শ্বেতসারের ভূমিকা অনেক বেশি। শ্বেতসার জাতীয় খাদ্যে শরীরের প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি, ভিটামিন, খনিজ ও আঁশ জাতীয় উপাদান রয়েছে, যা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর জন্য অত্যন্ত জরুরি। বেশি আঁশযুক্ত ফল ও শাকসবজি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উত্তম। তবে প্রতিদিন কী পরিমাণ শ্বেতসার জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত, তা একজন পুষ্টিবিদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে নেয়া উচিত।
ধারণা-৩: ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আমিষ শ্বেতসারের চাইতে উত্তম
অনেকে মনে করে থাকেন, শ্বেতসার জাতীয় খাবার রক্তের শর্করা বাড়িয়ে দেয়। তাই শ্বেতসারের পরিবর্তে আমিষ জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে তা সত্যি নয়। অতিরিক্ত আমিষ শরীরের জন্য হানিকারক হতে পারে। বেশি বা উচ্চ আমিষ জাতীয় খাবার, বিশেষ করে প্রাণিজ আমিষ, যেমন চর্বিযুক্ত মাংস ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর। আর এ জাতীয় খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং প্রতিদিনের খাবারে মোট ক্যালরির ১৫%-২০% এর বেশি আমিষ জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত নয়।