|
সবাই শোকে বিহ্বল, আত্মীয়স্বজন-প্রতিবেশীদের চোখে ছিল শোকের কালো ছায়া
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনা : গেটম্যানকে আসামি করে মামলা
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের খৈয়াছড়া এলাকায় মাইক্রোবাস ও ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জনের নিহতের ঘটনায় রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলার বিষয়টি জানে না রেলওয়ে। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার সহকারী পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। চট্টগ্রাম রেলওয়ের পুলিশ সুপার হাসান চৌধুরী মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গেটম্যানের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে।’ এদিকে গেটম্যান সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি রেলওয়ে। বিভাগীয় রেলের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘তদন্তের পর দোষী সাব্যস্ত হলে তবেই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার করার বিষয়টি রেল পুলিশ আমাদের জানায়নি।’
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নিহতদের মধ্যে পাঁচ জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩০ জুলাই) সকাল সোয়া ১০টার দিকে হাটহাজারীর খন্দকিয়া ছমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একসঙ্গে তাঁদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় হাটহাজারীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষজন অংশ নেন।দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের মধ্যে আজ সকালে মোস্তফা নিরু, সামিরুল ইসলাম হাছান, রিদোয়ান ও সজীবের জানাজা একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় অংশ নিতে আসা সবাই ছিল শোকে বিহ্বল। আত্মীয়স্বজন-প্রতিবেশীদের চোখে নেমে এসেছে শোকের কালো ছায়া। বোয়ালখালী থেকে আত্মীয়ের জানাজায় অংশ নিতে এসেছেন জাহেদ। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় একই এলাকার ১১ জন মারা গেছে। আমরা সবাই শোকাহাত। আল্লাহ যেন তাঁদের জান্নাতবাসী করেন। খন্দকিয়া গ্রামের ৬০ বছরের বাসিন্দা আবুল হাসান বলেন, একসঙ্গে এতো মৃত্যু আমাদের এলাকায় আর কখনো হয়নি। একসঙ্গে পাঁচ জনের জানাজাও আমি কখনো পড়েনি। ছেলেগুলো খুব মেধাবী ছিল। জানাজায় অংশ নিতে আসা মোহাম্মদ ইমন বলেন, আমাদের জন্য দিনটি শোকের। দুর্ঘটনায় কারো অবহেলা ছিল কিনা, তা তদন্ত করে বের করা উচিত। আমরা দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ আবুল হাশেম বলেন, জীবনে প্রথমবারের মতো পাঁচ জনের জানাজা একসঙ্গে পড়লাম। মারা যাওয়া সবাই খুব মেধাবী ছিল। এলাকার মেধাবী সন্তানদের হারিয়ে আসলে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলছি। জানাজায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা অংশ নেন। এর আগে শুক্রবার রাতে দুই জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়ে। এছাড়া নিহতদের মধ্যে শান্ত শীল নামে একজনে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
Post Views:
১১৪
|
|