|
ঈদের আনন্দ নেই বরিশাল আগৈলঝাড়ার ৬ শ’ শিক্ষক পরিবারে
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বরিশালের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মৌলিক সাক্ষরতা (বিএলপি) প্রকল্পের অধীনে থাকা বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার শিক্ষা কেন্দ্রের ৬ শ’ শিক্ষক ও ১৫ জন সুপারভাইজার বেতনভাতা পাননি। তাই এবারের ঈদে এসব পরিবারে আনন্দ নেই। তাদের অভিযোগ, সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্ধ দেয়া সত্ত্বেও এক কর্মকর্তার খামখেয়ালি ও গাফিলতির কারণে ঈদের আগে তাদের বেতন হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর বিএলপি প্রকল্পের আওতায় ৬৪ জেলার ২৫০টি উপজেলার ৩ শ’ কেন্দ্র স্থাপন করে দিনরাতে দু’টি সেশনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হয়। ওই প্রকল্পের অধীনে বরিশালের পাঁচটি উপজেলায় এক কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০১৬ সালে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ৩ শ’ কেন্দ্রে ৬ শ’ শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে দিনে মহিলা ও রাতে পুরুষ বয়স্ক মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, জ্ঞান অর্জন, সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চলছে। প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলায় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট থ্রু ভলানটারি এন্টারপ্রাইজকে (ব্রেভ) নির্বাচিত করা হয়। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম এম আনোয়ার উল্লাহ জানান, আগৈলঝাড়ায় তারা ৩ শ’টি কেন্দ্র স্থাপন করেন। দিনে মহিলা ও রাতে পুরুষদের সাক্ষর জ্ঞান পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনায় আগৈলঝাড়ার পাঁচটি ইউনিয়নে ৩ শ’ মহিলা ও ৩ শ’ পুরুষ শিক্ষক ও ১৫ জন সুপারভাইজার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা বয়স্ক শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার ঘোষ স্বাক্ষরিত এক পত্রে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাসকে আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের বেতনভাতা প্রদানে করতে বলা হয়। এ জন্য সমুদয় অর্থ ছয় লাখ ৬৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাবের অনুকূলে ২০ দিন আগে পাঠানো হয়েছে। উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ ওয়ার্ডের সুপারভাইজার আব্দুল হালিম বেপারী জানান, কাজ করে বেতন পাচ্ছি না। এবারের ঈদের আনন্দ-উৎসব আমাদের জন্য নয়। সরকার বরাদ্ধ দেয়া সত্ত্বে¡ও পরিবারপরিজন নিয়ে আনন্দ করতে পারলাম না। একই অভিযোগ করেন সুপারভাইজার মো: হানিফ মৃধা, মিজানুর রহমান, মো: সোহেল রানাসহ অনেকেই। শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের বেতন না পাওয়া প্রসঙ্গে ব্রেভের নির্বাহী পরিচালক এম এম আনোয়ার উল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে; কিন্তু বেতনভাতা পরিশোধ করার দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক ঈদের আগে বেতনভাতা পরিশোধের নির্দেশনা দিয়ে টাকা ইউএনওর ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়েছে। কেন তা দেয়া হচ্ছে না তা আমার বোধগম্য নয়। এ প্রসঙ্গে আগৈলঝাড়া নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, প্রকল্পের নীতিমালা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। আমি কার্যক্রমে সন্তুষ্ট নই। তবু শুধু ঈদের কারণে গত ২৮ মে বেতনভাতা দেয়া হয়েছে। ইউএনওর এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, সুপারভাইজার ও এনজিও কর্মকর্তারা বলেন, গত সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম বেতন পাবো; কিন্তু না। এ প্রসঙ্গে জানতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প (বিএলপি) প্রকল্পের সহকারী পরিচালক জানে আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
Post Views: ০
|
|