|
মানুষের জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
‘‘অক্সিজেনের অভাবে মানুষ কেন মরবে?’’-স্লোগানে বরিশালে বাসদ’র অবস্থান ও বিক্ষোভ সমাবেশ
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ‘‘অক্সিজেনের অভাবে মানুষ কেন মরবে?’’-স্লোগানে বরিশালে বাসদ’র অবস্থান ও বিক্ষোভ সমাবেশ। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ইউনিটের সামনে করোনা ইউনিটে অক্সিজেন সংকট নিরসন ও নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (আগস্ট ৩) আগস্ট সকাল ১১টায় বরিশাল বাসদ বরিশাল জেলা কমিটির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, বাসদ বরিশাল জেলার আহবায়ক ইমরান হাবিব রুমন ও পরিচালনা করেন, বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য বিজন শিকদার। এসময় বক্তব্য রাখেন, বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক মানিক হাওলাদার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল জেলার দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বরিশাল জেলার সদস্য রিতা ব্যাপারি, ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন দেবাশীষ, কামাল হোসেন, আবু বক্কর প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অক্সিজেনের অভাবে রুগীদের হাহাকার চলছে। হাসপাতালের অক্সিজেন প্লান্ট চালু না হওয়ায় রিফিল করতে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছে, ১টি সিলিন্ডার পাওয়ার জন্য রুগীদের ৬-৭ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বরিশালে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার পেছনে অক্সিজেনের এই সংকট অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে বলে বক্তারা জানান। বক্তারা অবিলম্বে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে করোনা ইউনিটে ভর্তি সকল রোগীদের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান। মানুষের জীবন বাঁচাতে বরিশাল শেবাচিমে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত না করলে বক্তারা কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। এতে দেখা দিয়েছে শয্যা সঙ্কট। অবস্থা নিরসনে ২০ শয্যা বিশিষ্ট নগরীর ১৯নং ওয়ার্ডের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রকে করোনা ইউনিট করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি বরিশালের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১৮০ বেড করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এছাড়া নগরীর বেসরকারি একটি হাসপাতালকে করোনা ইউনিটে রূপান্তরের পরিকল্পনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (আগস্ট ৩) দুপুরের বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সভাপতিত্বে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা এবং বেসরকারি হাসপাতালের মালিক ও পরিচালকদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বরিশাল জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে আয়োজিত সভায় বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা: বাসুদেব কুমার দাস, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের বিভাগীয় পরিচালক মো: আবদুস সালাম, বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা: মনোয়ার হোসেন, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা: মো: মনিরুজ্জামান, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: এইচ এম সাইফুল ইসলাম, উপ-পরিচালক ডা: জসিম উদ্দিন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপপরিচালক পরিবার পরিকল্পনা বরিশাল ডা: মো: তৈয়বুর রহমান, নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল সাউথ এপোলো মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা: মো: জহিরুল হক, আরিফ মেমরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক ডা: মো: নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরিশাল গৌতম বাড়ৈ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রবিউল ইসলাম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা: বাসুদেব কুমার দাস জাগো নিউজকে জানান, বরিশালে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম চিকিৎসা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ছে। রোগীর বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তিনি বলেন, সভায় বরিশাল জেলা ও বিভাগের করোনার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় উপস্থিত সবার পরামর্শে ২০ শয্যা বিশিষ্ট নগরীর ১৯নং ওয়ার্ডের কালীবাড়ি রোডের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রকে করোনা ইউনিট হিসেবে চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি বরিশালের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০টি করে ১৮০ বেড করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া নগরীর বেসরকারি একটি হাসপাতালকে করোনা ইউনিটে রূপান্তরের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ডা: বাসুদেব কুমার দাস বলেন, কালীবাড়ি রোডের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র করোনা ইউনিটে শুধুমাত্র নারী করোনা পজিটিভ রোগীদের ভর্তি করা হবে। ২০ শয্যার মধ্যে দুই বেড কোভিড আক্রান্ত প্রসূতিদের জন্য আলাদা রাখা হচ্ছে। বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় মতবিনিময় সভা থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সব কিছুই করা হচ্ছে করনোর দুর্ভোগ কমাতে ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে।
Post Views:
১৩৪
|
|