Current Bangladesh Time
শনিবার জুলাই ১২, ২০২৫ ১:০৬ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » ২৪০ টাকায় যমজ বোনের পুলিশে চাকরি! 
Saturday April 23, 2022 , 10:30 pm
Print this E-mail this

টাকা ছাড়াই চাকরি, বিশ্বাস করতে পারছে না এলাকাবাসীও

২৪০ টাকায় যমজ বোনের পুলিশে চাকরি!


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : যমজ বোন। তাদের খরচ ১২০ টাকা করে সর্বমোট ২৪০ টাকা। আর তাতেই মিলল সাফল্য। পুলিশে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তারা চাকরি পেয়েছেন। একই সঙ্গে খেলাধুলা, লেখাপড়া করে তারা বেড়ে ওঠেন। এখন একসঙ্গে ফারজানা জাহান ও ফারহানা জাহান পুলিশে চাকরি পাবেন, এটা স্বপ্নেও ভাবেননি। টাকা ছাড়াই চাকরি, এ কথা যেন বিশ্বাস করতে পারছে না এলাকাবাসীও।ফারজানা জাহান ও ফারহানা জাহান সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের ফকড়াবাদ গ্রামের আসাদুল ইসলামের মেয়ে। তাদের মা রেহেনা পারভীন গৃহিণী। সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান গত বৃহস্পতিবার ২০২২ সালের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষায় সাতক্ষীরার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন। এতে সাধারণ নারী কোটায় মেধাতালিকায় ফারজানা জাহান চতুর্থ এবং ফারহানা জাহান পঞ্চম হয়েছেন। যমজ বোনের চাকরি পাওয়ায় পরিবারটিতে বইছে আনন্দের বন্যা। তবে সন্তানদের বেড়ে ওঠার গল্প বলতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন মা রেহেনা পারভীন। তিনি বলেন, আমি দর্জির কাজ করি। ওই টাকায় চলে সংসার। মেয়েদের লেখাপড়াও শিখিয়েছি। আমার তিন মেয়ে। বড় মেয়ে আফসানা জাহান সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে গণিতে অনার্স পড়ছে। ছোট দুইটা যমজ। ২০২০ সালে গোয়ালডাঙ্গা ফকিরবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে তারা জিপিএ ৪.০৬ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। বর্তমানে তারা আশাশুনি মহিলা কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রেহেনা পারভীন জানান, তাদের পরিবারে আগে এত দুর্দিন ছিল না। তার স্বামী আসাদুল ইসলাম বড়দল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। দেশে তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ ছিল। ২০১৩ সালের নভেম্বরে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা তার স্বামীকে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেয়, মুখ থেঁতলে দেয়। এরপর মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। সেই থেকে আজও তার চিকিৎসা চলছে। এখন চলাফেরা করতে পারলেও কোনো কাজ করতে পারেন না। তিনি বলেন, দর্জির কাজ থেকে উপার্জিত অর্থ ও সরকারি বিভিন্ন সহায়তায় সংসার চলে। দুই মেয়ের পুলিশে চাকরি হওয়ায় আমরা খুব খুশি। সংসারে আর অভাব-অনটন থাকবে না। ফারজানা জাহান বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল পুলিশ হব। এখন পুলিশে চাকরি পেয়েছি। এবার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারব। ফারহানা জাহান বলেন, পুলিশে আবেদন করার পর অনেকেই বলেছিল, চাকরি পেতে টাকা লাগবে। কিন্তু আমাদের টাকা নেই। তবুও মাঠে গেলাম। পুলিশ সদস্য নিয়োগের পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হয়েছি। টাকা ছাড়াই আমরা পুলিশে চাকরি পেয়েছি। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। বাবা আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি এখন কোনো কাজকর্ম করতে পারি না, বাড়িতেই থাকি। গরিব পরিবারে সরকারি চাকরি খুব একটা হয় না। সেখানে দুই মেয়ে একসঙ্গেই পুলিশে চাকরি পেয়েছে, এর থেকে আনন্দের কিছু হতে পারে না। গ্রামের মানুষের ধারণা-ঘুষ ছাড়া পুলিশে চাকরি হয় না। কিন্তু এখন আমার পরিবারের সেই ধারণা পাল্টে গেছে। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পুলিশে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ২০২২ সালে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগে সাতক্ষীরায় ৫৫ জন নতুন পুলিশ সদস্য পদে নিয়োগ পাচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে সাধারণ নারী কোটায় আটজন ও পুরুষ ৪৭ জন। পুরুষদের মধ্যে সাধারণ কোটায় ২৯, পোষ্য কোটায় চার ও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন ১৪ জন। এছাড়া নারী-পুরুষ মিলে আটজনকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত ৫৫ জনের মধ্যে যদি কেউ পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মেডিকেল থেকে বাদ পড়েন, তবে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, ফারহানা জাহান ও ফারজানা জাহান সাধারণ নারী কোটায় পুলিশ সদস্য পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। যারাই প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন সবাই মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছেন।




Archives
Image
খুনের পর লাশের ওপর লাফায় ঘাতকরা
Image
খুলনায় বাসার সামনে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা
Image
বরিশাল ক্যাডেট কলেজের সব পরীক্ষার্থী পেল জিপিএ-৫
Image
নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বলার নির্দেশনা বাতিল
Image
বিএনপির জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে : মির্জা ফখরুল