এক কেজি মাংস ৮শত টাকা হলে সর্বনিম্ন ২ মনের চালান থেকেও প্রায় ২৪ হাজার টাকা ব্যবসা
স্বরূপকাঠীতে ৮০০ টাকা কেজি হরিনের মাংস !
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : স্বরূপকাঠীতে কেজি প্রতি আটশত টাকা দরে হরিনের মাংস বিক্রি হয়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ স্থানেই প্রশাসনের নাকের ডগায় হরিনের মাংস পাওয়া এখন ওপেন সিক্রেট বলে জানান একাধিক ভোক্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোহাগদল গ্রামের এক ভোক্তা বলেন ৩০ ডিসেম্বর আমি ৫ কেজি হরিনের মাংস ৪ হাজার টাকা দিয়ে কিনি। এই রাজনৈতিক নেতা বলেন টেরা সেলিম একজন লোক দিয়ে আমাকে ওই মাংস দিয়ে যায়। আমি ওখান থেকে কয়েক প্যাকেট মাংস আওয়ামীলীগের কিছু নেতার বাসায় অল্প অল্প করে পাঠিয়ে দেই। একাধিক ভোক্তা জানান স্বরুপকাঠীতে বিশেষ করে মিয়ারহাট, ইন্দুরহাট ও জগৎপট্টি বন্দরে বিগত ১ বছর পূর্বে হরীনের মাংস পাওয়া যেতো অবাধে। কিন্ত হার্ডওয়ারী দোকান মালিক উজ্জল শিকদার র্যাবের হাতে হরিনের চামড়া সহ আটক হন। এসময় কাপড় ব্যবসার আড়ালে হরিনের মাংস ও চামড়া চোরাই চক্রের সদস্য মিয়ারহাট ও ইন্দুরহাট বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী গা ঢাকা দেয়। এর পর মাংস আসা বন্ধ থাকলেও বিগত ২ মাস থেকে পুরাতন ব্যবসায়ীদের ছত্র ছায়ায় নতুন করে কয়েকটি গ্রুপ এখন এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছে। কৌড়িখারা গ্রামের কাজি নামের মাংস বিক্রয়ের এক সহযোগী জানান মাংস ট্রলার, বাস বা হোন্ডায় করে নিয়ে নিয়ে আসে চরদোয়ানিয়ার শাহিন, মালেক গোমস্থা ও পাথরঘাটার খোকন ও মন্নান। স্বরুপকাঠিতে এ মাংস আসার পর সন্ধা নদীর পশ্চিম পাড়ে টেরা সেলিম এবং পূর্ব পাড়ে উপজেলা যুবলীগের কিছু বিপদগামী সদস্যের ছত্রছায়ায় এসকল মাংস চলে যায় প্রভাবশালীদের রন্ধনশালায়। ওই ব্যক্তি দাবী করেন এখনো অনেক আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামায়াত নেতার ফ্রীজে হরিনের মাংস পাওয়া যাবে। টেরা সেলিমের একাধিক সহযোগি জানান প্রতি কেজি মাংস ৫শত থেকে ৫৫০ টাকা চুক্তিতে নদীর পূর্ব পাড়ে সমুদয়কাঠি চৌরাস্থা এবং পশ্চিম পাড়ে জলাবাড়ি কলেজ রোড পর্যন্ত মালেক গোমস্থা, শাহিন, খোকন ও মন্নানের লোকজন দিয়ে যায়। প্রতিবার চালানে হোন্ডা বা গাড়িতে করে ২ থেকে তিন মন মাংস এরা নিয়ে আসে। এছাড়া পাথরগাটা থেকে ট্রলারে মাংস আসলে তা ৮ থেকে ৯ মনের কম হয়না বলে তিনি দাবী করেন। “এ” আদ্যাক্ষরের এক ভোক্তা বলেন গত দুই মাস আগে বরিশালে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ২ মন হরীনের মাংস মিয়ারহাট থেকে সরবারহ করা হয় দক্ষিন কৌরিখাড়া গ্রামের এক আওয়ামীলীগ নেতার মাধ্যমে। তিনি বলেন স্বরুপকাঠি সাবরেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন বুড়াল বাড়িতে পাথরঘাটার হরিন চোরাই চক্রের সদস্য মালেক গোমস্তা আত্মিয় করার সুবাধে পূর্ব পাড়ের যুবলীগের কিছু ব্যক্তি প্রশাসনের নাকের ডগায় এই চোরাই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। ওই ব্যক্তি বলেন স্বরুপকাঠীর সুন্দরী কাঠ চোরাই চক্রের সাবেক সদস্যরাই এই ব্যবসার মদদ দাতা হিসেবে কাজ করছে। মুলত: সুন্দরী কাঠ চুরি করে স্বরুপকাঠীতে আনার পরও ঝুকি থেকে যায় কিন্তু মাংস কোনভাবে ভোক্তার হাতে দিতে পারলেই আর ঝুকি থাকেনা। তুলনা মুলক কাঠের চেয়ে এ ব্যবসায় এখন লাভও বেশি। তাই চোরচক্র ঝুকিহীন এই পথ বেশি লাভের আশায় বেছে নিয়েছেন। তিনি বলেন এক কেজি মাংস ৮শত টাকা হলে সর্বনিম্ন ২ মনের চালান থেকেও প্রায় ২৪ হাজার টাকা ব্যবসা করে স্বরুপকাঠিতে মাংস বিক্রয় চক্র মাত্র কয়েক ঘন্টায়। আর চাহিদা বেশি থাকায় সরবারহকারীরাও মালের যোগান দিচ্ছেন সঠিকভাবে।