Current Bangladesh Time
মঙ্গলবার জুলাই ৮, ২০২৫ ৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » সন্ধ্যা বাতি ’হারিকেন’ এখন শুধুই অতীত স্মৃতি! 
Sunday July 8, 2018 , 5:26 pm
Print this E-mail this

কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার সে-ই ঐতিহ্যবাহী ‘হারিকেন’

সন্ধ্যা বাতি ’হারিকেন’ এখন শুধুই অতীত স্মৃতি!


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার সে-ই ঐতিহ্য ‘হারিকেন’। সন্ধ্যা বাতি ’হারিকেন’ এখন অতীত স্মৃতি। গ্রামীণ সমাজের প্রতিটি ঘরে ঘরে এক সময় আলোর অন্যতম বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হতো হারিকেন। আবার অনেক সময় সবার ঘরে হারিকেন পাওয়া যেত না। কারণ সাধ আছে সাধ্য নেই। এমন পরিস্থিতিও ছিল এ সমাজের মানুষের ঘরে ঘরে। কিন্তু বর্তমানে এর চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। সামাজিক পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রতিটি ঘরের চিত্রটাই তেমনি পাল্টে গেছে। গ্রামীণ সমাজের সন্ধ্যা বাতি হারিকেন এখন অতীত স্মৃতিতে পরিনত হয়ে গেছে। এখন আর কোনো ঘরে কিংবা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হাজার বছরের ঐতিহ্যের বাহন সে-ই হারিকেন এখন আর চোখে পড়ে না। অথচ এখন থেকে দুই দশক আগেও যেখানে বেশিরভাগ ঘরেই ব্যবহার হতো হারিকেন আর দুই দশক পরে এসে সেইরূপ এখন পুরোটাই পরিবর্তিত হয়েছে। দুই দশক আগেও চিত্রটি ছিল এমন যে, সারাদিনের কর্মব্যস্ততা সেরে সাঁঝের বেলায় নারীরা ব্যস্ত হয়ে পড়তেন সন্ধ্যায় ঘরের আলো জ্বালানো নিয়ে। প্রতি সন্ধ্যায় হারিকেনের চিমনি খুলে, ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে ছিপি খুলে কেরোসিন তেল ঢেলে আবার ছিপি লাগিয়ে রেশার মধ্যে দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে তা নির্দিষ্ট সীমারেখায় রেখে ঘরের মেঝে জ্বালিয়ে রাখা হতো। ৫-৬ ইঞ্চি লম্বা ও কিছুটা ছড়াকারের মত এক ধরনের কাপড় রেশা হিসেবে ব্যবহার করা হতো এতে। এটার আলো কমানো ও বাড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট একটি গিয়ার ছিল। হাতের সাহায্যে তা ঘুরিয়ে আলোর গতিবেগ কমানো ও বাড়ানো যেতো। রাতে ঘুমানোর সময় আলো কমিয়ে সারারাত হারিকেন জ্বালিয়ে রাখা হতো। এছাড়াও কুপি ছিল কয়েক প্রকার। এক নলা, দুই নলা, এক তাক, দুই তাকের, পিতল কিংবা সিলভারের। তবে সিলভার, টিন এবং মাটির তৈরি বাতির ব্যবহার ছিল সবচেয়ে বেশি। বাতির নলে আগুন জ্বালানোর জন্য রেশা হিসেবে ব্যবহার করা হতো ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো কিংবা পাটের সুতলি। চিকন আর লম্বা করে ৫-৬ ইঞ্চির দৈর্ঘ্যরে ওই রেশা বাতির নল দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দিতো। প্রতিদিন এর কিছু অংশ জ্বলে পুড়ে যেত। ফের পরের দিন আবার একটু উপরের দিকে তুলে দিতো। এক পর্যায়ে তা পুড়ে গেলে আবার নতুন করে লাগানো হতো। বাজার থেকে ২-৫ টাকায় ওই বাতিগুলো কিনতে পাওয়া যেত। কিছুদিন পর নিচ দিয়ে ফুটো হয়ে তেল পড়ে যেত। ফের নতুন একটি বাতি বাজার থেকে কিনতে হতো। এটা ছিল নারীদের সন্ধ্যাবেলার দৈনন্দিন কাজের বিশেষ একটি অংশ। এই বাতি দিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করতো। এছাড়াও রাতের সকল কাজ, যেমন রান্না-বাড়া, কুটির শিল্প, হস্তশিল্প, ধান মাড়ানোসহ সকল চাহিদা মেটানো হতো এই আলো দিয়ে। আসবাবপত্রের চাইতে এই দুটো জিনিস ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, এগুলো ছিল পরিবারের এক একটি সদস্যের মত। সারাদিন এগুলোর প্রয়োজন না হলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে এগুলোর কদর ছিল খুব বেশি। কারো পরিবারে যদি তেলের একটু ঘাটতি থাকতো ওই পরিবারের রাতের সকল কাজ বন্ধ হয়ে যেতো। সন্ধ্যা ফুরালেই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ত। এই হারিকেন-কুপি ছিল আমাদের সভ্যতার বাহন। রাতের বেলায় এর যথেষ্ট ব্যবহার হতো, সন্ধ্যাবেলায় এটার আলোয় পড়াশুনা করতো অনেকেই। তাছাড় কুপি দিয়ে পড়ার সময় খুব একটা ব্যবহার করা যেত না ধোঁয়া ও কালির জন্য। হারিকেনের চিমটি পরিষ্কারের জন্য পালা করে একক দিনে একেকজনের উপর দায়িত্ব পড়তো। আর এখন এই আধুনিকতার যুগে এগুলো এখন ক্রমশ:ই মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার সে-ই ঐতিহ্যবাহী ‘হারিকেন’।




Archives
Image
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সহ ১৯ কর্মকর্তাকে দুদকের তলব
Image
প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না এনসিপি : নাহিদ
Image
বরিশালে পুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শনে আইজিপি
Image
সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো সাগরের পাশে বরিশাল জেলা প্রশাসক
Image
মূলধারার গণমাধ্যমও ভুয়া তথ্যের ‍উৎস : প্রধান উপদেষ্টা