|
ক্ষমা চেয়েছেন সৌম্য
শেষ বলে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের !
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : দুই বল বাকি থাকতেও পড়লো ভারতের উইকেট। কিন্তু পরের বলে দিনেশ কার্তিকের আরেকটা ছয়। আরও একবার শিরোপার খুব কাছে গিয়ে ফিরে আসা বাংলাদেশের। ১৭ ওভার পরে সমীকরণ অনেকটাই সহজ হয়ে এসেছিলো বাংলঅদেশের জন্য। কারণ ১৬ তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমান মনিশ পান্ডেয়ার উইকেট সহ দিয়েছেন চারটি ডট বল! কিন্তু পরের ওভারেই রুবেল হোসেনকে তুলোধুনো করে দিনেশ কার্তিক তুলে নিলেন ২২ রান। সেখানেই আসলে হেরে গিয়েছিলো টাইগাররা। বহুক্ষণ ধরে ভালো কোনো ওইকেডের অভাবে নাগিন নাচটা ঠিকমতো দিতে পারছিলো না টাইগাররা। সেই সুযোগটা এনে দিলেন নাগিন নাচের প্রবর্তক নাজমুল ইসলাম। এই তরুণ তুলে নিলেন সবচেয়ে মূল্রভান উইকেটটি। ৪২ বলে ৫৬ করে ফেলা রোহিত শর্মাকে ফেরালেন তিনিই। দীর্ঘসময় ভারতীয় ব্যটসম্যানদের রান উৎসব বসে বসে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না প্রেমাদার বাংলাদেশী দর্শকদের। নবম ওভারে তাদের উদযাপনের মুহূর্তে এনে দিলেন রুবেল হোসেন। তুলে নিলেন নিজের দ্বিতীয় উইকেট। কে এল রাহুল প্যাভেলিয়নে ফিরলেন ২৪ রান নিয়ে। একের পর এক চার-ছক্কার বৃষ্টিতে রোহিত শর্মা আর শিখর ধাওয়ান আড়াই ওভার যেতে না যেতেই করে ফেলেছিলেন ৩২ রান। সেই রানের রথে রাশ টানেন সাকিব আল হাসান। ফেরালেন শিখর ধাওয়ানকে। এক রান যোগ হতে না হতেই রুবেল হোসেনের শিকার সুরেশ রায়নাও। এর আগে সাব্বির রহমানের ব্যাটে ভর করে টাইগাররা স্কোরকার্ডে জমিয়েছে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান। এই রানকে ‘লড়াই করার মতো সংগ্রহ’ কেউ কেউ বললেও, ভারতের শক্তিধর ব্যাটিং লাইন-আপের সামনে বেশ নড়বড়েই ঠেকছে তা। সাব্বির রহমানের ফিফটিতে ভারতকে ১৬৭ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে কলম্বোর প্রেমাদাস স্টেডিয়ামে শুরু বেশ সাবধানে করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। দারুণ কিছুর আভাস দিচ্ছেন তারা। কিন্তু, হঠাৎ-ই ধস নামে টাইগারদের ব্যাটিং অর্ডারে। দলীয় ৩৩ রানে হারাতে হয় তামিম, লিটন ও সৌম্যর উইকেট। আসরে সবচেয়ে ধারাবাহিক মুশফিকও টেকেননি বেশিক্ষণ। মুশফিক ফেরেন ৯ রান করে। দলীয় ৬৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর, সাব্বির ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মিলে হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু, আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২১ রানে আউট হন। এরপর, দলের স্কোর সমৃদ্ধ করতে থাকেন সাব্বির রহমান। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি। উইকেটে জমতে পারেননি অধিনায়ক সাকিক আল হাসান। রান আউট হয়ে তিনি ফেরেন ৭ রান করে। সাকিবের আউটের পর সাব্বিরও ফিরে যাবেন। যাওয়ার আগে ৭ চার ও চার ৬-এ ৭৭ রান করেন। আর শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজের জড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ লড়াকু স্কোর পান। মনে রাখবার মত ওভারে সৌম্যই ছিলেন বোলার। খেলা শেষে বলটি যখন সব খেলোয়ার দের মাথার উপর দিয়ে বিনা বাধায় বিনা দ্বিধায় বাউন্ডারি পার করলো, তখনই সবটা বুঝে মেনে নিয়েই সৌম্য মাঠে বসে পড়লেন, মাথা নুইয়ে গেল তার, কপাল ঠেকল পিচের খরখরে বাস্তবতায়। সৌম্যই যেন ট্র্যাজিডির নায়ক হয়ে হতবাক হয়ে রইলেন আর তার দুঃখ নিমিষে মর্মবেদনায় রূপান্তরিত হলো কোটি মানুষের। এর আগে রকিবুলের ওভারে ভারতীয় তাণ্ডব দেখে অনেকেই আশা হারিয়েছিলেন, ভেবেছিলেন এবার আর রক্ষা নেই। তখনই সৌম্য আসলেন, শেষ বলে সবকিছু নিথর হয়ে যাবার আগের বলটিতেও তুলে নিলেন মূল্যবান একটি উইকেট। সবার মনে আশা তীব্র হলো- সৌম্য আড়ম্বরের আয়েসে এক তিতকুটে বিয়োগান্তক মঞ্চ তৈরী করলেন, যেন কোটি ভক্তের চোখের জমে থাকা অশ্রুকে পতনমুখী হবার তীব্রতা দেয়াটা বাকি ছিল। এমনতর ঘটনার পর সৌম্য তার ভক্তদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করলেন ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে। তিনি লিখেন-সবার কাছেই আমি দুঃখিত, ধন্যবাদ আমাদের পাশে থাকার জন্য। আশা করি আমরা আরো শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবো।
সূত্র : সময়ের কণ্ঠস্বর
Post Views:
১,৭০৬
|
|