|
সেই নারকীয় হামলার ঘটনাটি আমার হৃদয়ে দাগ কেটে যায় – লিমন তালুকদার
শেখ হাসিনার মিটিংয়ে ওরা সেইদিন যেতে দেয়নি, এবার যামু…….
শতাধিক নৌকা নিয়ে সেইদিন মোরা শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে যাইতেছিলাম। পথিমধ্যে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে মোগো মারধর করে সব নৌকাগুলো ভেঙ্গে পাশের খালের পানিতে ফেলে দিয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর নৌকা নিয়ে আর শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে পারিনি। ব্যথিত মনে ফিরে এসেছি। ভগবানের কাছে একটাই চাওয়া ছিলো মৃত্যুর আগে যেন স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর মেয়েকে স্বাগত জানাতে পারি। দীর্ঘদিন পরে হলেও সেই আশা এবার পূর্ণ হইবে। এইবার মুই মইরাও শান্তি পামু। আবেগভরা কন্ঠে কথাগুলো বলেছেন, বরিশালের হিন্দু অধ্যুর্ষিত আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের পশ্চিম সুজনকাঠী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরেন সরকার (৬৮)। গৈলা মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোয়েব ইমতিয়াজ লিমন জানান, ৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর তনয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে যখন বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে রাজনৈতিক হাল ধরেছেন সেইসময় তিনি (শেখ হাসিনা) বরিশালের সরকারী গৌরনদী কলেজ মাঠে জনসভা করেছিলেন। এটাই ছিলো তার গৌরনদীতে প্রথম জনসভা। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার ওই জনসভায় যোগদান করতে বর্তমান আগৈলঝাড়া (তৎকালীন গৌরনদী) উপজেলা থেকে শতাধিক কাঠের নৌকা নিয়ে নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে গৌরনদীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে গয়নাঘাটা নামকস্থানে বসে বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর করে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে নেয়া নৌকাগুলো ভেঙ্গে পাশ্ববর্তী খালের পানিতে ফেলে দেয়। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চেয়ারম্যান লিমন তালুকদার আরও জানান, সেইদিন বয়সে আমি ছোট হলেও সেই নারকীয় হামলার ঘটনাটি আমার হৃদয়ে দাগ কেটে যায়। দীর্ঘদিন পরে হলেও সেইদিন বিএনপি ও জামায়াত সন্ত্রাসীদের হামলার স্বীকার যেসব নেতাকর্মীরা বেঁচে আছেন তাদের জীবনের শেষ ইচ্ছা পূরণ করার জন্য দলীয় প্রতীক নৌকা বানানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আগৈলঝাড়া থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা নৌকাগুলো নিয়ে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারী বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানের জনসভায় আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাবেন। সূত্রমতে, আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দলীয় প্রতীক দিয়ে স্বাগত জানাতে পাঁচ শতাধিক কাঠের নৌকা নির্মান করা হয়েছে গৈলা মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোয়েব ইমতিয়াজ লিমনের ব্যক্তিগত অর্থায়নে। পাঁচ ফুট লম্বা প্রতিটি নৌকা নিয়ে জনসভাস্থলে উপস্থিত থাকবেন দলীয় নেতাকর্মীরা। নৌকা তৈরির কারিগর পরিতোষ বাড়ৈ জানান, গত একমাস থেকে তারা ৩০জন শ্রমিক দিনরাত কাজ করে নৌকাগুলো তৈরি করেছেন। এখন চলছে শেষ সময়ে সাজ সজ্জার কাজ। প্রতিটি নৌকা তৈরিতে সবমিলিয়ে দুই হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চেয়ারম্যান সোয়েব ইমতিয়াজ লিমনের এ ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ সর্বত্র ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অপরদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি’র দিক নির্দেশনায় বর্তমান সরকারের উন্নয়নের নানা চিত্রসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ছবি ও ফেস্টুন দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানকে আলোকিত করার জন্য মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ৮ই ফেব্রয়ারী যত ঘনিয়ে আসছে ততই জোড়ে নগরী জুড়ি চলছে বড় বড় তোড়ন নির্মানের কাজ পাশাপাশি সড়ক পথে বিভিন্ন পতাকা দিয়ে সাজসজ্জায় সজ্জিত করা হচ্ছে। মাঠে চলছে মঞ্চ নির্মান সহ মাঠকে নববধু রুপে সজ্জিত করার জন্য দলীয় প্রতিক নৌকা, পদ্মাসেতুর স্পান ডিসপ্লে নির্মানের কাজ করে যাচ্ছে দিন-রাত। মাঠের কাজ ও সাজসজ্জা দেখার জন্য ঘুড়ে ঘুড়ে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা মাঠ পরিদর্শন করছেন। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী এস. এস. এফ এর পাশাপাশি র্যাব, মেট্রোপলিটন পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তা দায়ীত্ব পালন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ইতিমধ্যে নগরীতে চলছে প্রচার-প্রচারনা ও মাইকিং সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বেড় করা হচ্ছে শুভেচ্ছা মিছিল। অন্যদিকে গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়েরুল ইসলাম সান্টু ভূঁইয়া, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমীন হাওলাদার, সরকারী গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি সুমন মাহামুদসহ একাধিক ছাত্রনেতারা বিভিন্ন সাজ সজ্জায় সজ্জিত হয়ে বরিশালের জনসভায় আশার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
শামীম আহমেদ, অতিথি প্রতিবেদক
Post Views:
৩৫৩
|
|