|
বর্তমান জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন,বিষয়টি আমি শুনেছি,আমি নতুন এসেছি,বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে
মুক্তিযোদ্ধাদের সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বরিশালের শহিদুল আলম !
সৈয়দ মেহেদী হাসান, অতিথি প্রতিবেদক : মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার হিসাব দিতে পারছে না বরিশালের জেলা প্রশাসন।এখানে নিয়মিত ভাতা পান ৬ হাজার ৪৫৬ জন মুক্তিযোদ্ধা।গত মার্চ মাসে তাদের কেউই ভাতা পাননি।অথচ তাদের ভাতা বাবদ সাড়ে তিন কোটি টাকা ছাড় করেছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকজন অভিযোগ করেন,২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বরিশাল জেলার মোট ভাতাভোগী ছিলেন ৬ হাজার ২৩২ জন।২০১৫ সালের এপ্রিলে আরও ২২৪ জন যুক্ত হয়ে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪৫৬ জন।ওই সময় মুক্তিযোদ্ধারা প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে ভাতা পেতেন।তখন জানুয়ারি থেকে মার্চের জন্য প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার নামে ব্যাংক হিসাবে ১৫ হাজার টাকা করে জমা হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু জমা হয় ১০ হাজার টাকা করে।আর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত জমা হয় ১৫ হাজার টাকা করে।তাহলে তাদের এক মাসের (মার্চ) ভাতা কোথায় গেল,সেই প্রশ্নের জবাব কারও কাছে নেই।মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেন,তারা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের কাছে গেলে তিনি মন্ত্রণালয়কে দায়ী করেছেন।এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন,মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত ভাতা না দেওয়া অপরাধ।মন্ত্রণালয় এ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পরও কেন মুক্তিযোদ্ধারা তা পেলেন না,তা অবশ্যই জেলা প্রশাসককে জবাবদিহি করতে হবে।যে জেলা প্রশাসক তখন দায়িত্বে ছিলেন,তার ওপরই সব দায় বর্তায়।তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেন,২০১৫ সালের নভেম্বর শেষ হওয়ার পরও ওই এক মাসের বকেয়া ভাতা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা না দেখে তারা বরিশাল মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার ও মহানগর কমান্ডারের কাছে বিষয়টি জানতে চান।তখন তারা বলেন,মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দে ভুল হওয়ায় টাকা পাওয়া যায়নি।পরে সব মুক্তিযোদ্ধার পক্ষ থেকে রফিকুল ইসলাম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেন।মন্ত্রণালয় তাকে কোনো সহযোগিতা না করায় রফিকুল ইসলাম তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন।মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়,তারা পুরো বরাদ্দ জেলায় দিয়েছে।তাই নতুন করে আর বরাদ্দ দেওয়া হবে না।তাহলে বরাদ্দ কোথায় গেল?-এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কোনো সমাধান দিতে পারেননি।এরই মধ্য তাকে বদলি করা হয়।স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম ও মুক্তিযোদ্ধা ধীরেন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,২০১৭ সালে এসেও ওই ঘটনার কোনো সমাধান হয়নি।তারা শুধু এখানে-ওখানে দৌঁড়াচ্ছেন।তাদের প্রশ্ন,মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দিয়ে থাকলে তারা সম্মানী ভাতা পেলেন না কেন?তারা বলেন,অসহায় ও গরিব মুক্তিযোদ্ধারা এ বিষয়ে বরিশাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমিটির কাছে জানতে চাইলে বলেন,ওই টাকা আর পাওয়া যাবে না।জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ কুতুবউদ্দিন এ বিষয়ে বলেন,‘এটা অনেক আগের বিষয়।বাদ দেন।’টাকাটা তাহলে কোথায় গেল জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘সেই সময়কার জেলা প্রশাসক জানেন।আমি জানি না।২০১৫ সালে জেলা প্রশাসক ছিলেন শহিদুল আলম।তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন।’জানতে চাইলে সাবেক জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।বর্তমান জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন,‘বিষয়টি আমি শুনেছি।আমি নতুন এসেছি।বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
Post Views:
৬৫
|
|