Current Bangladesh Time
শনিবার মে ১৭, ২০২৫ ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » মাদকের জগতে নতুন সংযোজন : ডান্ডি বা গ্লু স্নিফিং 
Monday January 8, 2018 , 1:58 pm
Print this E-mail this

ব্যবহারকারীরা সাধারণত: হায়পক্সিয়ায় (অক্সিজেনের অভাব) মারা যায়

মাদকের জগতে নতুন সংযোজন : ডান্ডি বা গ্লু স্নিফিং


একদিন সন্ধায় একটা ইলেক্ট্রোনিক্স এর দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। কিছুক্ষন বসে থাকার পর একটা জিনিস খেয়াল করলাম যে অল্প বয়স্ক কিছু ছেলে আসছে দোকানে আর ডেনড্রাইট অ্যাডহেসিভ নামক ভারতীয় সস্তা গাম কিনে নিয়ে চলে গেল। আমি এটা দেখে কৌতূহল বশত: দোকানদার ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম – ভাই মানুষের কি আজকাল সবকিছু কি একটু বেশী বেশী-ই ভাঙ্গে নাকি ? সে আমার প্রশ্নের জবাবে এমন একটা হাসি দিলো যা দেখে আমার পিলে চমকে গিয়েছিলো। পরে সে বলে “আরে দাদা আপনি দেখি কিছুই জানেন না। ধান গাছে তক্তা হয় কিনা মার্কা প্রশ্ন করলেন। আরে দাদা এইটা দিয়া তো পোলাপাইনেরা আজকাল নেশা করে।’’ আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম। তবে আজকাল অনেক দোকনদাররাই এসব বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন একেবারেই। শেষে আমি বেশ কিছুদিন এইটার উপর ছোটোখাটো একটা গবেষণা করার চেষ্টা করলাম। চিন্তা করলাম, এই বিষয়টা নিয়ে আমি যদি একটি আর্টিকেল বা ফিচার আমার পাঠকদের উপহার দিতে পারতাম!

ডান্ডি বা গ্লু স্নিফিং কি ?
মাদকের জগতের নতুন এক নাম ডান্ডি। স্থানীয় ভাষায় এটা ডান্ডি নামেই সুপরিচিত। ইংরেজিতে একে গ্লু স্নিফিং (Glue sniffing) বলে। নামটা শুনতে বেশ মজার আর কৌতুহলপূর্ণ হলেও এই জিনিসটা কিন্তু মোটেও মজার নয়। বরং খুবই মারাত্মক একটা নেশার দ্রব্য। গ্লু মানে হল গাম বা আঠা আর স্নিফিং মানে হল আঘ্রান বা জোরে জোরে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে টানা। তার মানে দাড়ায় যে জোরে জোরে নিঃশ্বাস এর মাধ্যমে আঠার যে ঘ্রান থাকে তা নাকের মধ্যে নেওয়ার নামই হল গ্লু স্নিফিং। তবে একে ডান্ডি বলা হয় কারণ, এই কাজে আমাদের দেশে সাধারণত: ডেনড্রাইট অ্যাডহেসিভ নামক ভারতীয় সস্তা গাম ব্যাবহার করা হয়। আর ডেনড্রাইটকে সংক্ষেপে ডান্ডি বলা হয়। ইংরেজীতে : ” Inhalants are a broad range of drugs whose volatile vapors are taken in via the nose and trachea.They are taken by volatilization, and do not include drugs that are sniffed after burning or heating “.

কিভাবে নেয় এই ডান্ডি?
পলিথিনের ব্যাগে ডেনড্রাইট ঢেলে তারপর সেটার মুখটা হাতের মুঠে আবদ্ধ করে একটা ছোটো ফাঁকা রেখে সেই ফাঁকা জায়গাটা নাকে লাগিয়ে তারপর সেটার ঘ্রান নেয়।

সেবনকারীদের ধরণ : সাধারণত: অল্পবয়স্ক টিনেজরাসহ রাস্তার টোকাইরা এই নেশায় জড়িয়ে পরে। দামে সস্তা এবং সহজলভ্য হওয়ায় এই নেশায় আসক্ত হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই টিনেজদের মধ্যে পথশিশুর সংখ্যাই বেশী। আর সেইসব বাচ্চারাও আছে যারা বাসায় একাকী থাকে বাবা-মা হীন অবস্থায়। এরা প্রথমে কৌতূহল বশত: এর ঘ্রান নিয়ে থাকে। আর প্রথমদিকে এটা একটু উটকো লাগলেও পরে বেশ ভালোই লাগে। আর এর থেকেই এরা এই সর্বনাশা মরণ বিষের প্রেমে পড়ে যায়।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ড্রাগ এবিউস এর মতে,”The most serious inhalant abuse occurs among children and teens who”…live on the streets completely without family ties.”

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : এর প্রতিক্রিয়া খুবই বিপদজনক। এর ব্যবহারকারীরা সাধারণত: হায়পক্সিয়া (অক্সিজেনের অভাব) মারা যায় কারণ, এটি অক্সিজেন বন্ধ করে মস্তিষ্ক এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে যেটি মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। নিউমোনিয়া, কার্ডিয়াক ফেইলরও হতে পারে। এছাড়া এর সেবনকারী অনির্দেশ্য আচরণ করতে পারে, ঝলসিত চেহারা মানে চেহারা বিকৃত হতে পারে, মাথা ঝিন ঝিন করতে পারে, মুখের চারপাশে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে, বমি বমি ভাবও হতে পারে।

আমাদের করণীয় : নেশা নির্মূল করা কোন কালেই সম্ভব হয়নি আর হয়ত হবেও না। তবে এই ডান্ডি নেশার গ্রহীতারা যেহেতু বেশীরভাগই টিনেজ তাই এই ব্যাপারটা খানিকটা আমাদের নাগালের মধ্যে। এই ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। বিক্রেতাদের একটু সৎ মনভাবাসম্পন্ন হতে হবে। আর কর্পোরেট বাবা-মা’দের তাদের সন্তানদের প্রতি একটু খেয়াল রাখতে হবে। এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো যারা এইসব নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছেন, তারা একটু নজর দিতে পারে এই দিকটাতে। তাহলেই অনেকাংশে এই মরনঘাতি নেশার হাত থেকে আমাদের শিশুদের আমরা বাঁচাতে পারবো বলে আমি মনে করি বা আমার বিশ্বাস।

সুব্রত বিশ্বাস




Archives
Image
সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে শাহবাগ থানা ঘেরাও
Image
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে যা বললেন মিশা সওদাগর
Image
বরিশালে পালিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঢাকায় গ্রেপ্তার!
Image
আমু-সাদিক-খোকনসহ ২৪৭ জনের নামে মামলা
Image
রাজধানীর ৯ স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ : ডিএমপি