|
নগর ভবনের কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে নিধন কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না – মো. ওয়াহিদুজ্জামান
মশায় অতিষ্ঠ বরিশাল মহানগরবাসী, নিধন বন্ধ
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ‘উহ! মশার জ্বালায় আর দাঁড়ানো গেল না, এবার যেতে হবে। মশা তো দেখি রক্ত খেয়ে শেষ করে ফেলল!’ বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র বিবির পুকুর পারে দাঁড়িয়ে এভাবেই মশার প্রতি ক্ষোভ ঝাড়ছিলেন সাইফুল ইসলাম। আজ সোমবার (০৫ মার্চ) বিকেলে স্বজন নিয়ে চিকিৎসকের চেম্বারে এসেছিলেন। বিভিন্ন পরীক্ষ নিরিক্ষার ঝক্কি-ঝামেলার পর সন্ধ্যায় বিবির পুকুর পারে কিছু সময়ের জন্য দাঁড়াতেই এভাবে একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, শহরে মশার উপদ্রব খুব বেড়েছে। মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দিন দিন তা আরও বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে মানুষ ম্যালেরিয়াসহ নানা কঠিন রোগে পড়বে। তিনি বলেন, মশার উপদ্রব এতটাই বেড়েছে যে বাসায়ও কয়েল ছাড়া থাকা যায় না। প্রায় সময়ই কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। শুধু তিনি নন, বরিশাল মহানগরীর প্রতিটি মানুষ এখন অতিষ্ঠ। শিশুদের মশা থেকে রক্ষা করতে কেউ কেউ দিনের বেলায়ও মশারি টানিয়ে রাখছেন। নগরবাসীর অভিযোগ, শীত শেষে এমনিতে মশার উৎপাত বেড়ে যায়। তার ওপর নালাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নাজমুল ইসলাম মিজান নামের এক যুবক ফেসবুক পেইজে লিখেন, ‘মুই/মোরা সবার পক্ষ থেকে কইতাছি মশা নিধন করুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। ওষুধ কি নাই! মশার যন্ত্রণা আর কিন্তু সহ্য করতে পারছে না বরিশাল শহরাঞ্চলে মানুষেরা। তাড়াতাড়ি কার্যকারি পদ্ধতি গ্রহণ করুন। অনুরোধ করছি বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনে জানাতে।’ নগরীর কাউনিয়ার বাসিন্দা ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, মশার যন্ত্রণায় নগরবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তিনি একাধিকবার বিসিসিতে যোগাযোগ করেও কোনো কাজে আসেনি। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন মশকনিধন কর্মী থাকলেও কাউন্সিলররা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এ অবস্থায় রোগ ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিসিসি’র মশক নিধন শাখার সেনিটারি ইন্সপেক্টর মো. রাসেল শিকদার বলেন, মশার ওষুধ নেই ৭-৮ মাস ধরে। তারা ২ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেন। লার্ভি ডিসাইড যা মশা ধ্বংস করে আর অ্যাডাল্ট ডিসাইট যা মশার ডিম নষ্ট করে। এ দুই ওষুধের কোনোটাই মজুদ নেই। তিনি বলেন, দৈনিক একটি ওয়ার্ডে ৫ লিটার মশার ওষুধ ব্যবহার করা দরকার। সে অনুযায়ী নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে দৈনিক ১৫০ লিটার মশার ওষুধ ছিটানোর প্রয়োজন। কিন্তু এখন এক লিটার ওষুধও ছিটানো হচ্ছে না। বিসিসি’র মশক নিধন শাখার পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মশার ওষুধ কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বানও করা হয়নি। কারণ এর আগে টেন্ডার দিলেও কোনো ঠিকাদার তাতে অংশ নেয়নি। এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মশার ওষুধ কিছু আছে। তবে আরও কিছু প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া নগর ভবনের কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে নিধন কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না। আশা করছি দ্রুত মশা নিধন কার্যক্রম শুরু হবে।
Post Views:
১০২
|
|