প্রচ্ছদ » স্লাইডার নিউজ » ভালোবেসে কলেজ ছাত্রীকে বিয়ে, দুই বছর পর গলা টিপে হত্যা, স্বামী আটক
Monday December 4, 2017 , 9:47 pm
তিন লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে পরিকল্পিতভাবে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে হত্যা
ভালোবেসে কলেজ ছাত্রীকে বিয়ে, দুই বছর পর গলা টিপে হত্যা, স্বামী আটক
ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন গর্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী মাইনুল ইসলাম আকন হিমুকে সোমবার (০৪-১২-১৭) বিকেলে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার (০৩-১২-১৭) বিকেলে শহরের কাঠপট্টি সড়কে একটি মুড়ির মিলের দোতলায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। মাইনুল ইসলাম আকন প্রথমে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে স্ত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে নাটক সাজানোর চেষ্টা করে এবং নিজেও বিষপানের অভিনয় করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসল ঘটনা প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় নিহত সুরাইয়ার বাবা আসলাম ফরাজী বাদী হয়ে সোমবার দুপুরে ঝালকাঠি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় স্বামী মাইনুল ইসলাম আকন হিমু (২৫), শ্বশুর মিল্টন আকন (৫০), শাশুড়ি আয়শা বেগম (৪২) ও মুড়ির মিলের ম্যানেজার মো. মাহফুজকে আসামি করা হয়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রেম করে দুই বছর আগে দুই পরিবারের সম্মতি ছাড়াই শহরের কাঠপট্টি সড়কের মিল্টন আকনের ছেলে মাইনুল ইসলাম আকন হিমু একই এলাকার আসলাম ফরাজীর মেয়ে সুরাইয়া ইয়াসমিনকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে ছেলের পরিবার এ সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। রোববার হিমু আকনের বাবা মিল্টন আকনের মুড়ির মিলের দোতলার একটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে ঝগড়া করেন ওই দম্পতি। একপর্যায়ে নিজ স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করেন। বিকেলে হিমু মোবাইল ফোনে সুরাইয়ার মামা তরিকুল ইসলাম রাজুকে জানায় সুরাইয়া বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যার ঘটনা প্রমাণ করার জন্য সুরাইয়ার মুখে বিষ দেয় এবং নিজেও বিষ মুখে নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে সুরাইয়ার মামা লোকজন নিয়ে সুরাইয়াকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরাইয়াকে মৃত ঘোষণা করে এবং স্বামী হিমুকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সোমবার সকালে হিমুকে বরিশাল শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় থেকে রিলিজ করা হলে ঝালকাঠি থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে গ্রেফতার করে। ঝালকাঠি থানা পুলিশের ওসি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে গ্রেফতার হিমু তার স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে কি কারণে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন তা এখনও প্রকাশ করেননি। সুরাইয়ার বাবা আসলাম ফরাজী থানায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করেন, তার মেয়েকে তিন লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে পরিকল্পিতভাবে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে হত্যা করেছে। সোমবার ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে সুরাইয়ার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে ঝালকাঠি থানা পুলিশ। বাদ আসর ঝালকাঠি পৌর মুসলিম কবরস্থানে সুরাইয়ার মরদেহ দাফন করা হয়।