পয়সারহাটের খরস্রোতা সন্ধ্যা নদীতে এখন চর জেগে বিলিন
বিলীন হবার পথে বরিশালের সন্ধ্যা নদী
শামীম আহমেদ : বরিশালের আগৈলঝাড়ার পয়সারহাটের খরস্রোতা সন্ধ্যা নদীতে এখন চর জেগে বিলিন হওয়ার উপক্রম। সরকারী পর্যায়ে ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে না আনলে এক সময় এ নদী কালের স্বাক্ষী হয়ে ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে থাকবে। এ নদীটি পদ্মা থেকে মাদারীপুর মস্তফাপুর দিয়ে আগৈলঝাড়ার পয়সারহাট হয়ে সাতলা বিষারকান্দি দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গবসাগরে গিয়ে মিশেছে। এই খরস্রোতা সন্ধ্যা নদী এখন মরতে বসেছে। আর এ কারণে হারাতে বসেছে এর অতিতের ইতিহাস আর ঐতিহ্য। এক সময় এই নদীতে ঝাকে ঝাকে রূপালী ইলিশ ধরা পরত জেলেদের জালে। এ নদীতে মৎস্য শিকার করে হাজারও পরিবারের জীবন জীবিকা এই নদীর উপর নির্ভর করত। সুন্দরবন থেকে গোলপাতা, সুন্দরী, গজারীসহ বিভিন্ন পন্যবাহি ট্রলার-নৌকা রাজধানীসহ উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নৌ-যান গুলো চলাচল করত। ১৯৭১ সালে দেশ বিভক্তির সময় ভারত সরকার ফারাক্কার বাঁধ নির্মানের ফলে নদীর স্রোতোধারা কমে গিয়ে পলি জমে বিভিন্ন স্থানে এখন চর জেগে উঠেছে। ইতোমধ্যে কয়েক স্থানে চর জেগে উঠার কারণে নৌযান চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আগে ঢাকা-পয়সারহাট রুটে লঞ্চ চলাচল করলেও বর্তমানে নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ার কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ার কারনে ব্যবসা বাণিজ্যের উপর প্রভাব পড়েছে চরম ভাবে। রাজধানী ঢাকা, শিল্প নগরী নারায়ণগঞ্জ, বাণিজ্য নগরী চট্টগাম ও মংলারপোর্ট থেকে নৌ-রুটে কম খরচে, আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট বন্দর ঘাগর বন্দরসহ বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়িরা পণ্য সামগ্রী আনা-নেয়া করত। সিলেট থেকে ইমারত নির্মান সামগ্রী কর্গো বোঝাই করে নৌ পথে অল্প খরচে ব্যবসায়িক মালামাল আনা-নেয়া করা যেত। এখন সড়ক পথে আনা নেওয়ার ফলে ব্যবসায়িদের পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের উপর এর প্রভাব পড়ছে। পয়সারহাট বন্দর সংলগ্ন নদীর উপর গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ মহাসড়কে সেতু সংলগ্ন বিশাল এলাকা জুড়ে চর জেগে উঠেছে। যেখানে জেলেদের জালে ধরা পরত ইলিশ দেখা যেত শুশক এখন সেই নদীগর্ভে জেগে উঠেছে চরে। সরকারী পর্যায়ে ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে না আনলে এক সময় এ নদীর ইতিহাস ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাবে।