|
প্রতারক দম্পতি সীমা ও শাহিন দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকান্ডে লিপ্ত
বাবুগঞ্জের এক দম্পতি প্রতারণা, হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : পদ্মা সেতুতে চাকরি দেয়ার নামে দীর্ঘ দিন ধরে প্রতারণা করে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের পাংশা গ্রাম থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক দম্পতি।তারা ইতিমধ্যে ওই ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের প্রতারণার জাল বিস্তার করেছে।বিভিন্ন পদে চাকরি দেয়ার নাম করে চক্রটি শিক্ষিত বেকারদের কাছ থেকে এক থেকে দেড় লাখ পর্যন্ত টাকা নেয়।তাদের নিকট থেকে জীবন বৃত্তান্তসহ বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে কয়েকদিনের মধ্যে এলাকা থেকে সটকে পড়ে ওই প্রতারক দম্পতি।তাদের বিরুদ্ধে ৮ থেকে ১০ জনের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে দু’জন সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে চাকরি দেয়ার নামে ২০১৪ সালে বাবুগঞ্জ উপজেলার বিমানবন্দর থানার পাংশা গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ খাঁনের পুত্র মো: আইয়ুব আলী ও মো: নুরুল ইসলামের পুত্র মো: আনোয়ার হোসেনের নিকট থেকে একই এলাকার প্রতারক দম্পতি সীমা আক্তার (২৬) ও তার স্বামী শাহিন খাঁন (৩০) এক লক্ষ দশ হাজার টাকা নেয়।কিন্তু টাকা নেয়ার পর থেকে অদ্যবদি তাদের কোন চাকরি দেয়নি এবং টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ সেপ্টেম্বর ঈদুল আযহার দিন প্রতারক শাহিনের কাছে টাকা ফেরত চাওয়ায় শাহিন তাদের মারধর করে আহত করেছেন।এ ঘটনায় ওই দিন সন্ধ্যায়ই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: জয়নাল আবেদীন হাওলাদার এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ দুই পক্ষকে নিয়ে শালিশ বৈঠক করে।এতে ওই প্রতারক দম্পতি সীমা আক্তার ও তার স্বামী শাহিনের টাকা নেয়ার বিষয়টি প্রমানিত হয় এবং তাদের টাকা ফেরত দিতে বলা হলে তারা শালিশ অমান্য করে টাকা দিতে অপরাগতা জানিয়ে চলে যায়।সেই থেকে তারা পলাতক থাকায় প্রতারনার শিকার ওই দুই ব্যক্তি বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিমানবন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো: আ: সালাম হাওলাদার জানিয়েছেন, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে এলাকাবাসীর মাধ্যমে টাকা লেনদেনের সত্যতা পাওয়া গেছে কিন্তু টাকার পরিমান পাওয়া যায়নি।তবে অভিযুক্ত সীমা ও শাহিন পলাতক রয়েছেন।ওই এলাকার বাসিন্দা শাজাহান শিকদার জানিয়েছেন, ওই প্রতারক দম্পতি দীর্ঘ তিন থেকে চার বছর যাবত এ ধরনের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়।আরেক বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানায়, তারা পাংশা গ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জনের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ ধরনের প্রতারণা করে মাত্র দুই থেকে তিন বছরের ব্যবধানে তাদের আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।এলাকার একটি সূত্র জানায়, প্রতারক দম্পতি সীমা ও শাহিন দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কর্মকান্ডে লিপ্ত এবং তাদের একটি সক্রিয় চক্র রয়েছে।বছরের ব্যবধানে এলাকায় বিশালকার অট্টালিকা সকলের কাছেই এখন রহস্যময়।তবে দুই থেকে তিন বছর যাবত এলাকায় ওই দম্পতির হঠাৎ হঠাৎ আবির্ভাব আর নিরুদ্দেশ হওয়ার গতিবিধিকে গ্রামবাসী সন্দেহজনক মনে করছেন।কেউ কেউ ধারনা করছেন তাদের সাথে নিষিদ্ধ কোন জঙ্গিগোষ্ঠির সাথে গভীর যোগাযোগ রয়েছে।ভুক্তভোগী আইয়ুব আলী জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুতে ভালো পদে চাকরি দেয়ার নাম করে জামানত হিসেবে তার কাছ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা নেয় প্রতারক সীমা ও তার স্বামী শাহিন।দীর্ঘ তিন বছর ধরে তাকে চাকরি ও টাকা কিছুই দিচ্ছে না।টাকা চাইতে গিয়ে উল্টো প্রতারক শাহিনের মারধরে আহত হয়েছেন।ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন জানান, পদ্মা সেতুতে চাকরি দেয়ার নাম করে তার কাছ থেকে আশি হাজার টাকা নিয়েছে ওই প্রতারক দম্পতি।কিন্তু তাকেও তারা চাকরি দেয়নি।টাকা চাইতে গিয়ে সেও লাঞ্চিত হয়েছেন।এ ব্যাপারে মাধবপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জয়নাল আবেদীন হাওলাদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, ওই প্রতারক দম্পতি এলাকার আরও একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে চাকরি দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে পেরে তারা এলাকা থেকে পালিয়েছে।
Post Views: ০
|
|