|
সম্পূর্ণ ফি মুক্ত ১৫ বছরের এ ভিসা দেওয়া হয়েছে তাকে
বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাচ্ছেন লুসি হল্ট
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশকে ভালোবেসে দীর্ঘ ৫৭ বছর কাজ করা ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টকে বাংলাদেশ নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে খুব দ্রুতই বাংলাদেশের নাগরিকত্বের কাগজপত্র হাতে পেতে যাচ্ছেন তিনি। এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ১৫ বছরের জন্য লুসি হল্টকে ফি মুক্ত ভিসা দেওয়া হয়। তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়। ডিসি হাবিবুর রহমান জানান, সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের চারদিনের মাথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় লুসি হল্টকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৫৭ বছর আগে অক্সফোর্ড মিশনের একজন কর্মী হিসেবে ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট বাংলাদেশে এসেছিলেন। সেবার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন মানুষের প্রতি। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাহতদের সেবা করেছেন জীবনের মায়া ত্যাগ করে। দেশ স্বাধীনের পরও বাংলাদেশ ছেড়ে যাননি তিনি। ভালোবেসেছেন এখানকার মানুষকে। তাই মৃত্যুর পরও প্রিয় বরিশালের মাটিতেই সমাহিত হতে চান তিনি। প্রতিবছর ফি দিয়ে ভিসা নবায়নের সমস্যা হওয়ার ফলে ভিসা ফি মওকুফসহ বাংলাদেশি নাগরিকত্বের জন্য দাবি জানিয়েছিলেন এই মহীয়সী নারী। ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসন থেকে লুসির এ আবেদন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তবে এটা তাদের আওতাভুক্ত না হওয়ায় কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। বর্তমান জেলা প্রশাসক আসার পরপরই নতুন করে আবেদন তৈরি করেন এবং তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান।এর কয়েক সপ্তাহ পর লুসি হল্টের ভিসা ফি মওকুফ করে ১৫ বছরের অগ্রিম ভিসা দেওয়া হয়। ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্ম নেওয়া লুসির বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। ১৯৪৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা লুসির বড়বোন রুট অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন ছেলে নিয়ে ব্রিটেনেই বসবাস করেন। লুসি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন এবং যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। কর্মজীবন থেকে ২০০৪ সালে অবসরে যাওয়া লুসি এখনও দুস্থ শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি শিশুদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করছেন। ৫৭ বছর ধরে এদেশে থেকে বরিশাল ছাড়াও যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে কাজ করেছেন তিনি। জীবনের দীর্ঘ সময় এখানে কাটিয়েছেন, চিরনিদ্রায় শায়িতও হতে চান এই বাংলার মাটিতেই। এদিকে বাংলাদেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার খবরটি ‘স্বপ্নের মতো’ মনে হচ্ছে অর্ধ শতকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে বসবাস করা ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টের কাছে। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টের কাছে গিয়ে এ খবর নিয়ে গেলে বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমানের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে দুপুরে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় লুসি হল্টকে নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খবরটি লুসি হল্টের কাছে গিয়ে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ও মিষ্টি মুখ করান জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এতে বেশ উচ্ছ্বসিত লুসিও। আবেগে উচ্ছ্বসিত লুসি হল্ট বলেন,‘আমি আর কী বলবো বুঝতে পারছি না। এটা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। অন্তর দিয়ে সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সবারর প্রতি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানসহ তার সব সহযোগীদের ধন্যবাদ জানাই। আমি এ ঘটনায় বেশ আনন্দিত এবং কৃতজ্ঞ।’‘আমার শেষ ইচ্ছা এদেশের মাটিতেই যেন মৃত্যু হয় এবং এখানেই যেন সমাহিত হই। জন্ম-মৃত্যুর বিষয়ে কিছুই আমরা বলতে পারি না। কখন হবে তাও জানি না। তবে যতদিন রয়েছি গরিব মানুষদের পাশে আরও বেশি থাকতে চাই,’বলেন তিনি। ডিসি হাবিবুর রহমান জানান, নাগরিকত্বের কাগজপত্র শিগগির লুসি হল্টের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ১৫ বছরের ভিসা গ্রহণ করেন লুসি হল্ট। সম্পূর্ণ ফি মুক্ত ১৫ বছরের এ ভিসা দেওয়া হয়েছে তাকে। তখনই তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়। সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওইদিনের আশ্বাসের চারদিনের মাথায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় লুসি হল্টকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
বাংলাদেশকে ভালোবেসে দীর্ঘ ৫৭ বছর কাজ করা ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয়ে পাশ হওয়ায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার তাকে বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে গিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান দৈনিক আমাদের বরিশাল পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক বিশিষ্ট সাংবাদিক এস.এম রফিকুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সহ-নির্বাহী সম্পাদক শাহীন রাজা, চীফ রিপোর্টার মোঃ আরিফ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার সুব্রত বিশ্বাস, আহমেদ বায়েজিদ, সহযোগী একটি দৈনিকের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক এ.আর মন্টু।
Post Views:
১৩০
|
|