|
চরম ভোগান্তিতে রোগীরা
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চার ঘন্টা পর কর্মে ফিরলেন চিকিৎসকরা
স্টাফ রিপোর্টার : চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে ৪ ঘন্টা রুদ্ধশ্বাস বৈঠক শেষে কর্মে ফিরলেন বরিশাল শের-ই বাংল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহিঃবিভাগের চিকিৎসরা।বৈঠকে হামলাকারী নার্স’র বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আশ্বাসে তার কর্মে ফিরেন।এদিকে এতে করে চেম্বারগুলোর সামনে অপেক্ষমান রোগীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসলেও চরম ভোগান্তিতে পরেছেন গ্রাম থেকে আসা ও তার স্বজনরা।অনেকেই চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে গেছেন।সূত্র মতে, গত বৃহস্পতিবার শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু বহিঃবিভাগের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফাইজুল হক পনিরের উপর নার্স এলিজা বেগম ও তার স্বামী শাহ আলমের হামলা করে।এর প্রতিবাদে গতকাল শনিবার রোগী সেবা বন্ধ রেখে সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত পরিচালকের কাযালয়ে রুদ্ধশ্বাস বৈঠক করে চিকিৎসকরা।বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড.তালুকদার মোহাম্মাদ ইউনুস ও পরিচালক ডাঃ এসএম সিরাজুল ইসলামের উপস্থিতিতে ৪ঘন্টা ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।বৈঠক শেষে মেডিকেল অফিসার ও বিএমএ’র কেন্দ্রিয় সিসি সদস্য ডাঃ শিরিন সাবিহা তন্নি বলেন, বৈঠকে চিকিৎসকদের দাবীর প্রেক্ষিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বামী শাহ আলম ভূঁইয়ার পর এবারে অভিযুক্ত নার্স এলিজা’র বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করবে।পরিচালক ও সংসদ সদস্যের এমন আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরা আমাদের কর্মে ফিরে যাচ্ছি।নার্সদের পক্ষ থেকে সিনিয়র স্টাফ নার্স সেলিনা বেগম জানান, আমাদের দাবী ছিলো নার্স নয়, তার স্বামী শাহ আলমের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হউক।কেননা নার্স এলিজার একটি অসুস্থ শিশু সন্তান রয়েছে।শিশুটির জন্য হলেও এলিজাকে প্রয়োজন।কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের এই দাবী মেনে নেন নি।তবে এর প্রেক্ষিতে আমারা ফের কোন আন্দোলনে যাব কিনা তা তৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ এসএম সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রথমে চিকিৎসক পরে নার্সদের নিয়ে পৃথক বৈঠক করে সমস্যা সমাধান করা হয়েছে।চিকিৎসকদের দাবী অনুযায়ী পূর্বের দায়ের করা এজাহারের কপিটি একটু সংশোধন করা হয়েছে।বৈঠক চলাকালীণ সময় বহিঃবিভাগের রোগীদের অসুবিধা হওয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।এদিকে শুক্রবার বন্ধের পর আজ শনিবার বরাবরের মতো হাসপাতালের বহিঃবিভাগের দুর-দরান্ত থেকে হাজারো রোগীর সমাগম হয়।সকালে তার দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করে চিকিৎসদের চেম্বার গুলোর সামনে বসে ছিলেন তারা।এর ব্যপারে ৫০ বছর বয়সী রোগী আব্দুল ফারুক হাওলাদার বলেন, বাকেরগঞ্জের রনশ্রি গ্রাম থেকে তিনি মাথায় ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন।টিকেটও কিনেছেন।কিন্তু সাড়ে ৮ টা পার হয়ে ১১টা বেজে গেলেও চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছি না।কিন্তু মাথা ব্যাথাতো বেড়েই চলছে।চেম্বারে চিকিৎসক না থাকায় দূর্ভোগের কথা বলেন রোগী আছিয়া বেগম।তিনি বলেন, আমার বাড়ী বরগুনার পাথরঘাটায়।আমি ও আমার বৃদ্ধ স্বামী আব্দুল রহমান অসুস্থ।খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে হাসপাতালে আসছি।কিন্তু এখনো ডাক্তার দেখাতে পারি নাই।আমাদের কাছে টাকা-পয়সাও তেমন নাই।প্রাইভেট চেম্বারেও দেখাতে পারবো না।নিয়োম অনুযায়ী ৫ ঘন্টার মধ্যে ৪ ঘন্টাই হাসপাতালের বহিঃবিভাগের চিকিৎসক না থাকায় রোগী ফারুক, আছিয়া আর আব্দুল রহমানসহ হাজারো রোগী চরম দূর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে।অনেক রোগীকে আগেই চিকিৎসা সেবা না নিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে।উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বহিঃবিভাগের আবাসিক মেডিকেল আফিসার ডাঃ মো. ফাইজুল হক পনির সিরিয়াল বঙ্গ করে নার্স এলিজার অসুস্থ শিশু সন্তানকে দেখবেন না বলে জানালে এলাজিার স্বামী মো. শাহ আলম ভূঁইয়া ওই চিকিৎসকের উপর হামলা চালায়।এঘটনায় চিকিৎসকদের বিক্ষোভের মুখে নার্স এলিজা ও তার স্বামীকে আটক করে পুলিশ।কিন্তু রাতে নার্সরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করলে হামলাকারী নার্স এলিজাকে ছেড়ে দেয়া হয়।এরই প্রেক্ষিতে চিকিৎসকরা পরিচালক ডাঃ এসএম সিরাজুল ইসলামকে ৪৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দেয়।তাই তারা কাজে যোগদান না করে পরিচালকের কার্যালয়ে ৪ ঘন্টা বৈঠক করেন।

Post Views:
৯৫
|
|