|
চাঁদর নিতে হলে আয়াদের ৫০ টাকা সিট পেতে হলে ১শ টাকা করে দিতে হয়
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে রোগীদের সাথে একি হচ্ছে…
আহমেদ বায়জিদ : বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের সাজার্রী ও অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে রোগীদের সাথে একি হচ্ছে। এমন প্রশ্ন জেগেছে উঠেছে রোগীদের মধ্যে। অন্যদিকে কর্মরত স্টাফ নার্সদের অভিযোগ বেড না থাকায় রোগীদের হাতে হামলার শিকার হতে হয়। আনেক সময় নার্স ও চিকিতসকের রুম ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। শত অভিযোগ থাকলেও তোয়াক্কা করছেনা চিকিতসকরা। যা কারনে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে দূরদুরান্ত থেকে চিকিতসা নিতে আসা রোগীও স্বজনরা। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের একমাত্র নির্ভর যোগ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল। কিন্তু এখানে চিকিতসকদের রোগীর প্রতি নজর নেই বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে। এখানে সব সময়ই চিকিতসক থাকার নিয়ম হলেও এখানে আসলে তার উল্টো চিত্র দেখা যায়। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন ওয়ার্ডটিতে চিকিতসা নিতে আসা প্রায় ৩০/৪০ জন রোগী সঠিক চিকিতসা থেকে বঞ্চিত হয় বলে স্বজনদের অভিযোগ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে নাম কর্তন পর্যন্ত এ দুর্ভোগ চিত্র তাদের দেখতে হয়। ভর্তিরত রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোগীদের বিভিন্ন প্রয়োজনে নার্সদের সাহায্য কামনা করলে তারা তাতে সাড়া দিয়ে থাকে না। এতে প্রতিবাদ করলে নার্সরা রোগীর স্বজনরে সাথে খারাপ আচারন করে চিকিতসকও নার্সরা। এছাড়া ডাক্তারা ভর্তি রোগীদের একবারের বেশি দেখতে আসেন না বলে ও রোগীগের অভিযোগ। তাদের ডাকতে গেলে ইন্টার্নী চিকিতসক ছাড়া কাউকে পাওয়া যায় না বলে জানায় একাদিক সূত্রে জানা গেছে। ভর্তিরত রোগীরা জানায়, সরকারী হাসপাতালে যে সেবা পাওয়ার কথা তা এখানে পাচ্ছি না। ভর্তির কয়েক ঘন্টা পাড় হয়ে গেলে ডেকে আনতে হয় চিকিতসকদের। এব্যাপারে এক চিকিতসকরা জানায়, ওয়ার্ডের জায়গা চেয়ে রোগীর চাপ বেশি তাই পুরুষ ও মহিলা অর্থোপেডিক, মহিলা সাজার্রী,গাইনী ওয়ার্ডটির জন্য অলাদা আরো ইউনিট করা একান্ত প্রয়োজন। এব্যাপারে আগের পরিচালকনা একাদিক বার জানানো হয়েছে। এমনকি বর্তমান পরিচালকেও জানানো হয়েছে। আমতলী থেকে চিকিতসা নিতে আসা খাদিজার বাবা ওয়ার্ডের আয়া ফিরোজার কাছে চাদর চাইলে বলে ৫০ টাকা দিলে চাদর খুঁজে এনে দিবো। পরে নার্সকে জানালে সে বলে আমাদের কাছে চাদর থাকেনা আয়াদের কাছ থেকে নিতে হবে। রোগীরা আরো জানান, চিকিতসক থাকেনা যা ও দেখা যায় তা সহকারী রেজিস্টার ও ইর্ন্টানী চিকিতসক।ভর্তি রোগীদের সরকারী ভাবে হাসপাতাল থেকে বিনামুলে ওষুধ পাবার কথা কিন্তু তা আমরা এখানে ভর্তির পরে কিছুই দিচ্ছে না দায়তরত নার্স ও চিকিতসকরা, চড়া দামে সবই কিনতে হচ্ছে বাইরের দোকান থেকে।অন্য বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলো হাসপাতালে থাকলেও বাহিরের ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পাঠানো হয় এবং ভাল চিকিতসার জন্য তাদের ক্লিনিকে যেতে বলে চিকিতসকরা। গোপন সূত্রে জানা গেছে, রোগীদের বিনামূলের ওষুধ তাদের না দিয়ে নার্স ও ইনচার্য বাহিরের দোকানে বিক্রি করে থাকে। চাঁদর নিতে হলে আয়াদের ৫০ টাকা দিতে হয়। সিট পেতে হলে ১শ টাকা করে দিতে হয়। ট্রলিতে করে কোন পরিক্ষা-নিরীক্ষা করাতে নিলে ঘন্টায় তাদের ১শ থেকে দেড়শ টাকা দাবি করে। ওয়ার্ডের দায়িত্বরত ইর্ন্টানী চিকিতসকরা ও স্টাফ নার্সরা রোগীদের খবর না নিয়ে তারা ফোনে কথা বলাও ফেইসবুক ও ল্যাপটপ চালানো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেতে দেখা যায়। রাতে রোগী হঠাত করে রোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে কোন চিকিতসক ডাকলেও তারা আসে। গতকাল চিকিতসকের অবহেলায় দিন খেটে খাওয়া এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের বাবার দাবি চিকিতসকের অবহেলায় তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। রাত সাড়ে ১২ হলেই নার্সরা রুমের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে থাকে। এব্যাপারে বিভিন্ন বার সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে হাসপাতাল পরিচালক এখন পযন্ত কোন তদন্ত কমিটি করেনি। ওয়ার্ডে জায়গা না পাওয়ায় অবস্থান করেছে ওয়ার্ডের সামনে বারান্দার পার্শে¦ রোগীদের বালিশ না দিয়ে রাখা হচ্ছে স্টোর রুমে। অন্য দিকে ভর্তি গরীব চুষে খাচ্ছে আয়া ভুয়ারা। মহিলা সাজার্রী ও আর্থোপেডিক, গাইনী ওয়ার্ডটিতে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছে প্রায় ৬ শ জন রোগী, বেড রয়েছে প্রায় ২ শ। তারা গাদাগাদি করে একের বেডের আর একটি বেড দিয়ে পার্শে¦ থেকে চিকিসা নিচ্ছে। ওয়ার্ডে অতিরিক্ত অক্সিজেন থাকার কথা হলেও তা এখানে ঠিক মত নেই। তাই অনেক সময় অক্সিজেনের কারনে রোগীর মৃত্যু ঘটনা ঘটে। ডাক্তারদের রুমে রোগী দেখার সময় হাসপাতালের ডাক্তারদের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ওষুধ প্রতিনিধিরা বিভিন্ন প্রলোভন দেখানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। বিভিন্ন কোম্পানীর ওষুধ প্রতিনিধিরা তাদের ওষধ লেখার করনে ইন্টার্নী চিকিতসকদের সকালে নাস্তা দেয়। তাই কর্তৃপক্ষ দেখেও কিছু বলে না। রোগীদের জন্য যে পরিমানের বেড দরকার তা এখানে না থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। রোগীদের ছাড়পত্র নিতে হলে প্রতিটি ওয়ার্ডে আয়াদের ১শ টাকা করে দিতে হয়। ওই ওয়ার্ডের কর্মরত এক স্টাফ নার্স জানান, নার্স ও চিকিতসকের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি তাই অতিরিক্ত ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিদের হাসপাতালে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তারা না মেনে প্রতিদিনই ওয়ার্ডের সামনে, ডাক্তারে রুমের দরজায় ভিড় করে থাকে। রোগীদের প্রতি ডাক্তার-নার্সদের অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতা এবং ভর্তি রোগীদের খাবার বিতরণে অনিয়ম ছাড়াও হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশসহ আরও একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে হাসপাতালের সবচেয়ে বড় অসুবিধাই হচ্ছে নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। ফ্যানেও জমে আছে ধুলা-মায়লা। বেশিভাই রোগীর নেই কোন বেডের ফোম চাদর। যাও আছে সেটা ছেঁড়া ও জরাজীর্ন। কয়েকটি বেড ভাঙ্গা। ময়লার দাগ, নোংরা গন্ধে বরে রয়েছে টয়লেটে। অন্য দিকে রোগীদের খাবার টাকায় বিক্রি হচ্ছে হাসপাতালের বাহিরে এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নেই কোন নজরদারী। কিছু দিন আগে রোগীর স্বজনরা ও সংবাদ কর্মীরা হাসপাতালের তৃতীয় তলার মেডিসিন ওয়ার্ডের সামনে বসে রোগীদের খাবার বিক্রির সময় হাতে নাতে ধরে পরিচালকে জানিয়েছে তাকে কী এখনও কি সরকারী খাবার বাহিরে বিক্রি হয়েই যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানায়, হাসপাতালে যে পরিচালকই প্রথম ক্ষমতায় আসে তখন সে বলে আমি হাসপাতালের অনেক উন্নয়ন করবো। কিন্তু দিনের পর দিন গেলেও তার কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না সূত্রে আরো জানা গেছে, দূরদূরান্ত থেকে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিতসা নিতে আসে কিন্তু এখানে প্রায় সময়ই বিদ্যু না থাকার কারনে লিফটে করে রোগী নিচ থেকে উপরে যেতে পারে না। ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকার পরে হঠাত করে গুরুতর আহত রোগীদের মৃত্যু হাসপাতালের নিচেই তলাই হয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না শর্তে হাসপাতালের এক কর্মচারী জানায় কোটি টাকা ব্যায় করে হাসপাতালে রোগীদের জন্য সরকার জেনারেটল দিলেও সেটি এখন বিকল হয়ে পরে আছে হাসপাতালে। এ বিষয় হাসপাতালের পরিচালক ডা.সিরাজুল ইসলাম জানায় হাসপাতালের বিভিন্ন সম্যসার কথা আমি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
Post Views:
১১২
|
|