প্রচ্ছদ » স্লাইডার নিউজ » বরিশাল শেবাচিমে আয়াদের গাফিলতিতে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ!
Friday August 23, 2019 , 11:33 am
বরিশাল শেবাচিমে আয়াদের গাফিলতিতে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে আয়াদের টাকা না দেয়ায় অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নিতে বিলম্ব হওয়ায় এক প্রসূতি মায়ের গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিকিৎসকের নির্দেশ থাকা সত্যেও টাকা না পেয়ে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে পৌঁছে দেয়নি কর্মরত আয়ারা। দেড় ঘন্টা বিলম্বে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে সিজারিয়ান করে মৃত সন্তান বের করে আনেন চিকিৎসকরা। বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে রোগীর স্বজন এবং ওয়ার্ডে কর্মরত আয়া ও নার্সদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে রোগীর স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে হালিমা বেগম নামে এক আয়াকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। তবে হালিমাকে আটকের পর অন্য আয়ারা পালিয়ে যান। আটক হালিমা বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বরাকোটা গ্রামের সুলতান হাওলাদারের স্ত্রী। তিনি বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে অবৈধভাবে আয়া হিসেবে কর্মরত ছিল বলেও জানাগেছে। এদিকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আয়া পরিচয়ধারী আটক হালিমা হাসপাতালের বৈধ স্টাফ নন। মৃত নবজাতকের বাবা ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মধ্য কান্দেপপুর এলাকার বাসিন্দা সোহেল হাওলাদার জানান, তার স্ত্রী বিউটি বেগমের (২৫) প্রসব বেদনা শুরু হলে সকালে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে তাকে ভর্তি করান। পরে হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে সিজার করানোর প্রস্তুতি নেন তিনি। হাসপাতালে বিউটির সঙ্গে থাকা স্বজনরা জানান, বেলা সোয়া ১১টার দিকে চিকিৎসক সিজারের প্রস্তুতি নিয়ে বিউটিকে পঞ্চম তলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যেতে বলেন। এ সময় হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডের আয়া হালিমা ও পপি আক্তারকে অনুরোধ করি ট্রলিতে করে বিউটিকে পঞ্চম তলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা রাজি হননি। পরে বিউটিকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার জন্য আয়া হালিমা ও পপি টাকা দাবি করেন। এ সময় রওশন আরা ও শারমিন তাদের জানান, তাদের সঙ্গে টাকা নাই। তবে পরবর্তীতে টাকা দেয়ার আশ্বাস দিলেও আয়ারা বিউটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাননি। তারা আরও জানান, এ বিষয়ে হাসপাতালের নার্সদের সহায়তা চাওয়া হলে তারাও অসদাচরণ করেন। পরে চিকিৎসকদের হস্তক্ষেপে সন্ধ্যা রানী নামে এক আয়া দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিউটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। সিজার শেষে বিউটি সুস্থ থাকলেও নবজাতকটি মৃত অবস্থায় আমাদের দেয়া হয়। বিউটির স্বজনরা অভিযোগ করেন, আয়া হালিমা ও পপিকে টাকা না দেয়ায় বিউটিকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অপারেশন থিয়েটারে না নিয়ে যাওয়ায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা। এদিকে অস্ত্রোপচার শেষে বিউটিকে হাসপাতালের অবজারভেশন কক্ষে রাখা হয়েছে। এদিকে মৃত সন্তান প্রসবের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিউটির স্বজনদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা হাসপাতালের নার্স ও আয়াদের ওপর চড়াও হন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আয়া হালিমাকে আটক করে। প্রসূতি বিভাগের আয়ারা কেউই সরকারি আয়া নন বলে জানিয়েছেন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রাশেদুল ইসলাম। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আসাদুজ্জামান বলেন, মৃত নবজাতকের স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে আয়া হালিমাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা মামলা করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওসি।