সিটি কর্পোরেশনের সম্মুখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা
বরিশাল যুবদল নেতা মোমেন শিকদারের ত্রাস !
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল যুবদল নেতা ঠিকাদার মোমেন শিকদার’র বিরুদ্ধে সিটি কর্পোরেশনের এক প্রকৌশলীকে শারীরিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ মিলেছে। এমনকি ওই প্রকৌশলীকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দিয়েছেন। সোমবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদে চরম উত্তাল হয়ে উঠেছে সিটি কর্পোরেশন। ঘটনার কয়েক ঘন্টার মাথায় সিটি কর্পোরেশনের সম্মুখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। সেখান থেকে দেওয়া হয়েছে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম। অর্থাৎ মেয়র আহসান হাবিব কামাল ঢাকায় রয়েছেন, তার আসার অপেক্ষায় এই আল্টিমেটাম দিয়েছে বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা। বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ঠিকাদার মোমেন শিকদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেবে কর্মচারীরা। তবে এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আইনগত ব্যবস্থার প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। যুবদল নেতা মোমেন শিকদার সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামালের আস্থাভাজন হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে- এই কারণেই বিরোধী দলের নেতা হয়েও তিনি আ’লীগ ক্ষমতার আমলে সিটি কর্পোরেশনের অধিকাংশ ঠিকাদারী কাজ বাগিয়েছেন। কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। কিন্তু এবারে প্রকৌশলীকে পিটিয়ে এই নেতা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে সরগরম করে তুলেছেন। বিসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিচুজ্জামান জানিয়েছেন, শহরের আমির কুটির ও কাউনিয়া জানুকিসিংহ রোডের হরিজন কলোনীতে পুকুরের ঘাটলা ও প্রাচীর নির্মাণ এবং সড়ক পাকাকরণ কাজ ২ কোটি ৬০ লাখ টাকার বরাদ্দে পান মিতুসী এন্টারপ্রাইজের মালিক মোমেন শিকদার। বছর খানেক ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার পর সাম্প্রতি তিনি শুরু করেন। সেই কাজের ২০ ভাগও সম্পন্ন হয়নি। অথচ তিনি সোমবার সকালে নগরভবনে এসে সহকারি প্রকৌশলী মামুনুর রশিদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। সেই গন্ডগোলের শব্দ শুনে নির্বাহী প্রকৌশলী আনিচুজ্জামানা ছুটে গেলে মোমেন শিকদার উত্তেজিত হয়ে তাকেও গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে তিনি নির্বাহী প্রকৌশলীকে মারধরও করেন। এমন পরিস্থিতিতে কর্পোরেশনের কর্মচারীরা ছুটে আসার আগেই মোমেন শিকদারকে তার ভাই যুবলীগ নেতা শাহিন শিকদার নিয়ে যান। এই ঘটনার পর থেকে বিসিসিতে সকল ধরণের সেবা বন্ধ করে দিয়ে কর্মচারীরা প্রতিবাদে একের পর এক সভা করে। সর্বশেষ বিকেলে কর্পোরেশনের পশ্চিম পাশের অর্থাৎ পুকুরে পাড়ে মানববন্ধন করে মোমেন শিকদারের সন্ত্রাসের প্রতিবাদ জানায়। বিসিসির সহকারি প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ বলেছেন, ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকার কাজটি ৩৩ ভাগ কম দরে অর্থাৎ ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায় নেন মোমেন শিকদার। তাদের অভিযোগ বরাদ্দ কমিয়ে কাজটি নেওয়ায় ঠিকাদারের লোকসান হবে এমন ভাবনায় অগ্রিম টাকা তুলতে চেয়েছিল। কারণ সম্প্রতি বিসিসিতে সোয়া ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছে এমন বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছেন। মূলত: সেই টাকা থেকে হরিজন কলোনীর কাজের বিপরীতে ১ কোটি টাকা তুলতে চেয়েছিলেন মোমেন শিকদার। বিসিসি মেয়র আহসান হাবিব কামাল জানিয়েছেন- অতিরিক্ত বিল চেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে খারপ আচরণ দুঃখজনক। এই ঘটনায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে ঘটনার পর থেকে মোমেন শিকদারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। তবে তার ভাই যুবলীগ নেতা শাহিন শিকদার জানিয়েছেন, বিসিসিতে মোমেন শিকদার কোন ধরণের খারাপ আচরণ করেননি। বরং প্রকৌশলী আনিচুজ্জামান নিজেই মোমেনকে মারধর করতে এগিয়ে এসেছিলেন। ওই সময় পরিস্থিতি খারাপ দেখে তিনি মোমেনকে নিয়ে বাইরে চলে আসেন।