|
টেকনিশিয়ানদেরকে মালিক পক্ষের তদারকি করা উচিৎ, তারা দক্ষ না অদক্ষ
বরিশাল মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের পরীক্ষার রিপোর্ট ভুল
SONY DSC
কাওসার মাহমুদ মুন্না : অদক্ষ টেকনিশিয়ানের অভাবে ভুলে ভরা নগরীর মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট। জানা যায়, গত বুধবার (২১ নভেম্বর) স্বরস্বতি (৮০) নামের এক রোগী পেটে ব্যাথা নিয়ে নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোডস্থ প্যারারা রোডে অবস্থিত মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ এইচ এন সরকারের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। চিকিৎসক রোগ নির্নয় করার জন্য অনেক গুলো পরীক্ষা ধরিয়ে দেন। পরীক্ষায় ধরা পরে স্বরস্বতির রক্ত শুন্যতা। রোগীর শরীরে রক্ত পুশ করানোর জন্য চিকিৎসক রক্ত গ্রুপিং এন্ড ক্রোস মেচিং নামের একটি পরীক্ষা দেন। রক্তের গ্রুপ ঐ প্রতিষ্ঠানে করালে পরীক্ষায় রক্তের গ্রুপের ফলাফল ‘ও’ পজেটিভ আসে। কিন্তু রোগীর স্বজনরা রক্তের গ্রুপ নিয়ে সংকোচে পড়ে যান। তারা পূণরায় সেখানে রক্ত পরীক্ষা করালে রিপোর্টে রক্তের গ্রুপ ‘ও’ পজেটিভ আসে। স্বজনরা বিপাকে পড়ে যান। রোগীর শরীরে রক্ত দেয়ার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষাটি পূণরায় করালে রক্ত গ্রুপিং এন্ড ক্রস মেচিং করালে সেখানে স্বরস্বতির রক্ত গুপ ‘বি’ পজেটিভ আসে। এতে তারা আরো হতাশায় পরে যান। পরে ঐ রিপোর্ট নিয়ে মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গেলে সেখানে জহর লাল সরকার রোগীর স্বজনদের উল্টা পাল্টা বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেন। তারা ৪র্থ বার শেবাচিম হাসপাতালে রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে পূণরায় রক্তের ঐ পরীক্ষা করালে সেখানে রক্ত গ্রুপ ‘বি’ পজেটিভ-ই আসে। এর মানে হাসপাতালের পরীক্ষার রিপোর্ট সঠিক বলে তাদের মনে হয়। কিন্তু সেই মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের রিপোর্ট ভুল। এ রকম ভুল রিপোর্টের কারণে রোগীর জীবন বিপন্ন হয়ে যেতে পারতো। রোগীর রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকরা পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। আর পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে রোগীর চিকিৎসা দেন। সেখানে তো অবশ্যই চিকিৎসক ভুল রিপোর্ট দেখে ভুল চিকিৎসাই দিবেন। অনেক সময় এই ভুল রিপোর্টের কারণে রোগীরা হতাশায় মানসিক ভাবে ভেঙ্গেও পড়েন। আবার অনেক সময় তারা অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলেও পড়েন। এরকমই চিকিৎসক ভুল রিপোর্ট দেখে স্বরস্বতিকে ভুল চিকিৎসা দিতো। আর ভুল চিকিৎসার জন্য রোগীর অকালে মৃত্যু হতে পারতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী জানায়, ঐ ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে অতিরিক্ত পরীক্ষা দিয়ে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জহর লাল। অদক্ষ টেকনিশিয়ানের কারনে ঐ প্রতিষ্ঠানে অহরহ ভুল রিপোর্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঐ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহর লাল সরকার বলেন, ভুল হতেই পারে, ডাক্তাররাও তো মানুষ, তারাতো অমানুষ না। চিকিৎসকরা ও কম্পিউটার অপারেটর ভুল করছে আমার তো কোন ভুল হয়নি। ডাক্তাররা কি করে না করে সেটা দেখার দায়িত কি মালিকের? আর স¦রস্বতি আমার আতœীয় সেখানে ভুল হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু স্বরসতি পরিবার জানায়, জহর লাল আমাদের কোন আতœীয় নয়। কিন্তু ঐ প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারীর আতœীয় তিনি। পরিচালক জহর লাল সরকারের কথা শুনে মনে হলো সে যেমন অদক্ষ তেমনি তার অদক্ষ প্রতিষ্ঠানের টেকনিশিয়ানরাও অদক্ষ। সূত্র জানায়, মেট্রো ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ২৪০ জন পোষাকৃত দালাল রয়েছে। এরা শহরের বিভিন্ন স্থানে ওৎপেতে থেকে রোগীদের ফুসলিয়ে নিয়ে আসে ঐ প্রতিষ্ঠানে। বিনিময়ে তারা পেয়ে থাকে মোটা অংকের কমিশন। এ ব্যপারে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, অবশ্যই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, অবশ্যই ঐ সকল টেকনিশিয়ানদেরকে মালিক পক্ষের তদারকি করা উচিৎ, তারা দক্ষ না অদক্ষ। তবে কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেব।
সূত্র : বরিশাল ক্রাইম নিউজ
Post Views:
১,৫৯৬
|
|