Current Bangladesh Time
শুক্রবার অক্টোবর ১৭, ২০২৫ ৩:৪৮ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশাল-মাওয়া রুট : টাকায় ম্যানেজ সবাই 
Sunday January 31, 2021 , 2:35 pm
Print this E-mail this

মাইক্রোবাস সার্ভিসের নামে চাঁদাবাজি

বরিশাল-মাওয়া রুট : টাকায় ম্যানেজ সবাই


আকতার ফারুক শাহিন, অতিথি প্রতিবেদক : প্রথমে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। এরপর গৌরনদী হাইওয়ে থানাসহ আরও অন্তত আটটি থানা এলাকা পার হয়ে পৌঁছতে হয় পদ্মা পারের বাংলাবাজার ফেরি পয়েন্টে। ১২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কপথের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ৮-১০টি চেকপোস্ট। এসব কিছুই নির্বিঘ্নে পার হয়ে বরিশাল থেকে সেখানে পৌঁছে যায় যাত্রীবাহী অবৈধ মাইক্রোবাস। কম সময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় যেতে এই সার্ভিসের ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার মানুষ। এসব মাইক্রোবাসের বৈধ কাগজপত্র নেই। ১১ জনের আসনে ১৮ জন পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে পুলিশের চোখের সামনে দিয়েই এগুলো চলাচল করছে। কিন্তু কী করে মাইক্রোগুলো বছরের পর বছর চলাচল করছে সেটাই এক বড় প্রশ্ন।পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এই রুটের একাধিক ড্রাইভার বলেন, ‘ঘাটে ঘাটে নগদ টাকা দিয়ে মাইক্রোবাসগুলো যাত্রী আনা-নেওয়া করে। তবে এ অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ। বরিশালের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জাকির হোসেন মজুমদারের দাবি, অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে।’ জানা যায়, মাইক্রোবাসের মতো ছোট পরিবহনে যাত্রী আনা-নেওয়া বা ভাড়ায় ব্যবহার প্রশ্নে বিআরটিএ আলাদাভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। আইন অনুযায়ী ভাড়ায় পরিচালিত মাইক্রোবাসের রং হবে কালো। ছাদে থাকতে হবে হলুদ রং। এ ধরনের গাড়ির নম্বর সিরিয়াল শুরু হয় ১১ দিয়ে এবং পরিচিতি সংকেত ‘ছ’। সূত্র জানায়, বরিশালের ১৮-২০ এবং বাংলাবাজার প্রান্তের মালিকদের যে ৪০-৪৫টি মাইক্রোবাস চলে তার প্রায় কোনোটিরই রেজিস্ট্রেশন নেই। শ্রমিকরা জানান, একটি মাইক্রোতে ১৬-১৮ যাত্রী পরিবহণ করা হয়। মাইক্রোবাসের এক যাত্রী বলেন, ‘অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করায় মাইক্রোবাসে চাপাচাপি করে বসতে হয়। পা ঠিক করে রাখা কিংবা নড়াচড়া করার অবস্থাও থাকে না।’ রেজিস্ট্রেশনবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা এসব গাড়িতে কেন যাচ্ছেন জানতে চাইলে বয়োবৃদ্ধ এক যাত্রী বলেন, ‘বাসে বরিশাল থেকে মাওয়া (বাংলাবাজার) যেতে ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগে। আর মাইক্রোতে দুই-আড়াই ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছানো যায়। মাইক্রোবাসের শ্রমিক ও যাত্রীদের সঙ্গে আলাপের সময় বিআরটিসি কাউন্টার থেকে মাইকিংয়ের শব্দ আসে। যাত্রী ডাকছে তারা। মাইকিংরত এক তরুণ জানায়, ‘আগে বাস টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে ছিল মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড। এখন নিয়ে আসা হয়েছে বিআরটিসি ডিপোর কাছে। ফলে যাত্রী পেতে সমস্যায় পড়েছে বিআরটিসির বাস। বাস টার্মিনাল এলাকায় কী করে এই স্ট্যান্ডটি টিকে আছে সেটাই প্রশ্ন। বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক কিশোর কুমার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রত। মাইক্রোবাস দিয়ে শত শত মাইল যাত্রী পরিবহণের ইতিহাস বোধকরি কেবল বরিশালেই আছে। এখানে বাস টার্মিনালে ট্রাফিকের সার্জেন্ট থেকে শুরু করে নিয়মিত পুলিশ টহল থাকে। তাদের চোখের সামনে দিয়ে এগুলো চলার পরও কেন তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় না সেটা তারাই বলতে পারবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বহুবার অভিযোগ দিয়েছি। কোনো ফল হয়নি।’ পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মাইক্রোবাসের একাধিক চালক বলেন, ‘প্রতি ট্রিপে ১৮ জন হলে মাথাপিছু ৩০০ টাকা হিসাবে টিকিট বাবদ আয় হয় পাঁচ হাজার ৪০০ টাকা। এর মধ্যে মালিক পায় সর্বোচ্চ তিন হাজার। বাকি দুই হাজার ৪০০ টাকা যায় চাঁদা খাতে। প্রতিদিন যদি ৩০টি ট্রিপ হয় তাহলে মাসে চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২২ লাখ টাকা। এরপর রয়েছে ভিআইপি গাড়ির চাঁদা। রোস্টার অনুযায়ী সব গাড়ি প্রতিদিন ট্রিপ পায় না। সে ক্ষেত্রে স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণকারীদের মাসে ৫০ হাজার টাকা দিলেই মেলে দৈনিক ট্রিপ। দৈনিক ট্রিপ পাওয়া গাড়িকেই বলা হয় ভিআইপি গাড়ি। এভাবেও আয় হয় আরও অন্তত আট থেকে ১০ লাখ টাকা। এই টাকার ভাগ পায় এখানকার প্রভাবশালীদের প্রায় সবাই। সেই সঙ্গে এই টাকার ভাগ যায় মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এবং হাইওয়ে পুলিশ থেকে শুরু করে পদ্মা পর্যন্ত পথের সব থানা আর চেকপোস্টে। ফলে বৈধ কাগজপত্র থাকুক বা না থাকুক চলাচলে কোনো বেগ পেতে হয় না মাইক্রোবাসগুলোর।’ এভাবে চাঁদাবাজি এবং ভাগ-বাটোয়ারা বিষয়ে জানতে চাইলে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের পরিচালক হিসাবে পরিচিত কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন ওরফে মামুন মেম্বার বলেন, ‘মাইক্রোবাস পরিচালনা প্রশ্নে টিকিট কাউন্টারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেশ কিছু লোক কাজ করে। তাদের বেতন ও স্ট্যান্ড পরিচালনার খরচ বাবদ কিছু টাকা নেওয়া হয়।’ পুলিশসহ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের বিভিন্ন স্তরে টাকা দেওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা।’

সূত্র : যুগান্তর




Archives
Image
চট্টগ্রাম ইপিজেডে কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
Image
সাত কলেজ নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপ গুজব ছড়াচ্ছে : শিক্ষা উপদেষ্টা
Image
বর্ণাঢ্য আয়োজনে বরিশালে কালবেলা’র তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন
Image
বরগুনার তালতলীতে জলবায়ু ঋণ বাতিলের দাবিতে পদযাত্রা
Image
বরিশাল বোর্ডে এইচএসসিতে পাসের হার ৬২.৫৭ শতাংশ