|
গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড হওয়া সত্বেও তেমন কোনো উন্নয়ের ছোঁয়া লাগেনি, এমনটাই দাবি এখানকার ভোটারদের
বরিশাল নগরীর ৬ নং ওয়ার্ড-এর কাউন্সিলর টিপু!
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল নগরীর ৬নং ওয়ার্ডে রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ করেছেন এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ভাঙ্গাচোরা এই ওয়ার্ডের সড়কগুলোতে নিত্যভোগান্তিতে পড়ছে এই এলাকার নাগরিকরা। তবে কাউন্সিলরের দাবি যথেষ্ট কাজ করা হয়েছে এই ওয়ার্ডে। সরেজমিন ৬নং ওয়ার্ডের হাটখোলা, সোনালী আইসক্রিমের মোড়, পোর্ট রোডের একাংশ ঘুরে দেখা যায় সড়কের বেহাল অবস্থার হালচিত্র। প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে এসব এলাকায়। সূত্রমতে, বরিশাল নগরীর মধ্যে ৬নং ওয়ার্ডটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড। ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হাটখোলা এলাকা এই ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড হওয়া সত্বেও তেমন কোনো উন্নয়ের ছোঁয়া লাগেনি, এমনটাই দাবি এখানকার ভোটারদের। ওয়ার্ডের জনৈক এক ভোটার জানান, এই ওয়ার্ডের মূল কেন্দ্র হাটখোলা ও পোর্ট রোডটি। কিন্তু সারা বছরই এই এলাকাগুলোতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। হাটখোলার রাস্তা সব সময়ই কর্দমাক্ত থাকে। বলতে গেলে গরুও হাঁটতে চায় না এই সড়ক দিয়ে। ব্যবসায়িক এলাকা হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান কাউন্সিলরের তেমন কোনো কাজ করেননি। এসব এলাকায় যেসব কাজ হওয়ার কথা তা হয়নি। যে কারণে এই কাউন্সিলরের ওপর অনেকেই ক্ষুব্ধ এবং প্রকাশ্যে ভোট না দেয়ার কথাও জানিয়েছেন অনেক ভোটার। পোর্ট এলাকার এক বাসিন্দা জানান, কসাইখানার রাস্তার অবস্থা পুরোই নাজুক। বৃষ্টি এলেই সব ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়। এছাড়া পোর্ট রোড ব্রিজ থেকে সোনালী আইসক্রিম মোড় পর্যন্ত দুই পাশে রয়েছে অনেক ভাঙারি ব্যবসায়ীদের দোকান। এই দোকানগুলোর সামনে ট্রাক এসে প্রতিদিন মালামাল নেয়। এতে করে জনভোগান্তি বেড়েছে আরও কয়েকগুণ। এই বিষয়ে কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান টিপুকে একাধিকবার জানানো হলেও তিনি এ বিষয়ে কোনো খোঁজখবর তো দূরের কথা তেমন কোন কর্ণপাতই করেননি। কসাইখানা এলাকার এক স্থানীয় জানান, আমাদের এই এলাকায় সপ্তাহের মধ্যে একদিন পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দেখা পাওয়া যায়। ওই একদিন তারা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে এ এলাকায় আসেন। আর বাকি ছয়দিন এই দুর্গন্ধের মধ্যে থাকতে হয় আমাদের। আলমগীর মাঝি নামে এক ভোটার জানান, পলাশপুর ব্রিজ সংলগ্ন সড়কে সড়কের অবস্থা খুব একটা ভালো না। যে কারণে ভোগান্তির মাত্রা বেড়েছে কয়েকগুণ। ঘটছে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা। যে বিষয়টি খুব ভালো করেই জানেন বর্তমান কাউন্সিলর। হাটখোলা এলাকার এক বাসিন্দা জানান, সিলভার পট্টি, পিঁয়াজ পট্টি ও সার পট্টির রাস্তায় আরও দুর্ভোগ, যা খালি চোখে না দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই। এতটাই খারাপ অবস্থা যে ভ্যান রিকশাও ঢুকতে পারে না। তিনি আরও জানান, এই ওয়ার্ডের গগনগলি সড়কে ৫শ টাকা দিলেও কোনো রিকশা চালক তার রিকশা নিয়ে ঢুকতে চায় না। এতটাই দুর্বিষহ অবস্থা এখানে। তাছাড়া এ করিম আইডিয়াল কলেজ সংলগ্ন শেখ মোবারক হোসেন সড়কেও রয়েছে বিরাট এক গর্ত। যেখানে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব বিষয়ে ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান টিপু বলেন, পাঁচ বছরে আমার ওয়ার্ডে যে উন্নয়ন হয়েছে তা অন্য কোনো ওয়ার্ড কাউন্সিলর করে দেখাতে পারেননি। যে উন্নয়ন করেছি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হল-ওয়ার্ডের অধীন প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে কসাইখানা মার্কেট এবং প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে হাটখোলায় আরও একটি মার্কেট। এর বাইরে ৬নং ওয়ার্ডের সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার অন্যান্য ওয়ার্ডের তুলনায় অনেক ভালো। হাটখোলা প্রধান সড়ক, স্বরূপআলী সড়ক, হাটখোলা মসজিদ সড়ক, এনায়েতউল্লাহ সড়ক এবং ওয়াদুদিয়া মসজিদের সামনের রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছি, যা পুরোটাই আরসিসি রাস্তা। এর মধ্যে ওয়াদুদিয়া মসজিদ সংলগ্ন রাস্তাটির গত ৪০ বছরেও কোনো উন্নয়ন হয়নি। কিন্তু আমি করেছি। হাটখোলা মন্দির রোডের কাজ চলমান। গগনগলি সড়কের ড্রেনেজ উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। পীর সাহেব সড়ক, শুক্কুর গফুর পার্ক বর্ধিতকরণ, চার কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়ার্ডবাসীর জন্য নির্মাণ করা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টার, যা এই ওয়ার্ডে প্রথম। এর বাইরেও আরও বহু প্রকল্প রয়েছে যার টেন্ডার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এখন কাজ শুরুর অপেক্ষা মাত্র। চকেরপুল থেকে মহাবাজ পর্যন্ত সীমানার এই ওয়ার্ডটি পর্যায়ক্রমে উন্নয়নের রোল মডেল হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন হাবিবুর রহমান টিপু কিন্তু ওয়ার্ডবাসি কোন সুফল পায়নি।
Post Views:
১,৩৪৪
|
|