|
স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্রীরা নেমেছে এ পেশায়
বরিশাল নগরীতে ফ্ল্যাট বাসায় চলছে নিষিদ্ধ বাণিজ্য
স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল নগরীতে ফ্ল্যাট বাসার অন্তরালে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ।বাহিরে থেকে ফ্যামিলি বাসা মনে হলেও ভেতরে যে এমন নিষিদ্ধ কাজের আহবান তা অনেকেই জানেন না।নগরীর অভিজাত এলাকাগুলোতে চিহ্নিত নারীর দালাল ও অন্ধকার জগতের বাসিন্দারা মিলে এসব অপকর্ম শুরু করলেও তারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোয়ার বাহিরে।বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের এক অভিযানে বেড়িয়ে এসেছে এমন অনৈতিক কর্মকান্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য।তবে যেকোন জনসমাগম অফিস/প্রতিষ্ঠানের ভবনই এসব অপরাধীদের মুল টার্গেট বলে জানা গেছে।সূত্রমতে,বরিশালের সৎ ন্যায় পরায়ন ও দক্ষ পুলিশ কমিশনার এস.এম রুহুল আমিনের নির্দেশে বরিশাল নগরীতে আবাসিক হোটেলের আড়ালে নিষিদ্ধ পতিতা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়।সেইসব নিষিদ্ধ পল্লী বন্ধ করে দেয়ার পর সেখানকার মেয়েরা মিশে গেছে নগরীর সাধারন মানুষের মাঝে।তাদের মধ্যে যারা দেখতে শুনতে স্মার্ট ও সুন্দরী তারা আস্তানা গেড়েছে নগরীর বিভিন্ন ফ্ল্যাট ও বাসা-বাড়িতে।যাদের প্রতি খদ্দেরদের আকর্ষণ বেশী তারা মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত এলাকার ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়েছে।আর সেই ফ্লাট বাসায় প্রথমে স্বাগত জানানো হচ্ছে পরিচিত খদ্দেরদের।মাঝে মাঝে বেরসিক পুলিশ হানাও দেয় তাদের নিষিদ্ধ আখড়ায়।যেমনটা ঘটেছে গতকাল সকালে।বরিশাল নগরীর জর্ডন রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩ ভিআইপি কলগার্ল ও ১ খদ্দেরকে আটক করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ।দুপুর ১টায় নগরীর অভিজাত এলাকা জর্ডনরোডের একটি ৫তলা ভবনের টপ ফ্লোরে নিষিদ্ধ যৌন কর্মের অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে তারা।পুলিশ সূত্র জানায়,নগরীর জর্ডন রোডস্থ উক্ত ফ্ল্যাট বাসায় কোতয়ালী মডেল থানার এসআই মোঃ হাসান,এসআই মোস্তাফিজ,এএসআই সুজন তাদের সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়।এসময় অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকাবস্থায় নলছিটির অনুরাগ গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ খানের মেয়ে ভিআইপি কলগার্ল কথিত চলচ্চিত্র খলনায়িকা মনি আক্তার ওরফে সুমি (২৪),চরমোনাইর খলিল ঘরামির মেয়ে রেকসোনা (২৫),নলছিটির বিন্নারআইন গ্রামের জাহাঙ্গীর গাজী ওরফে জাহাঙ্গীর মহুরীর স্ত্রী সুমি বেগম (৩০) ও খদ্দের চরবাড়িয়ার উত্তর লামছড়ি গ্রামের মৃত চেরাগ আলীর পুত্র নুর হোসেন নুরুকে আটক করা হয়।থানা সূত্র আরও জানায়,জর্ডনরোডস্থ মেরী স্টোপস ক্লিনিকের অপরাজিতা ভবনের ৫ম তলায় ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল কয়েক নারী ও পুরুষ।তাই গতকাল দুপুর ১টার দিয়ে হাতেনাতে ধরতে উক্ত বাসায় পুলিশ হানা দেয়।এসময় উক্ত বাসার কলিং বেলে চাপ দিলে বাসার ভিতর থেকে এক শিশু দরজা খুলে দেয়।এসময় পুলিশ শিশুটির কাছে বাসায় কেউ আছে কিনা জানতে চাইলে শিশুটি পুলিশকে জানায়,তার আম্মু দরজা আটকিয়ে রুমের মধ্যে এক চাচ্চুর সাথে কথা বলছে।এসময় পুলিশ শিশুটিকে দিয়ে তাদের বের্ডরুমের বন্ধ দরজা নক করলে ভিতর থেকে তারা দরজা খোলার পর ৩ ভিআইপি কলগার্ল ও ১ পুরুষকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়।এসময় তাদের ৪জনকে আটক করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।আজ তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানায় থানা সূত্র।আরও জানা গেছে,মাস দুয়েক পূর্বে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে উক্ত ফ্ল্যাট বাসাটি ভাড়া নেয় নলছিটির বিন্নারআইন গ্রামের মোসলেম ওরফে মোসলেম বাবুর্চির পুত্র জাহাঙ্গীর গাজী ওরফে জাহাঙ্গীর মহুরী।অভিযানের খবর পেয়ে সে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।অভিযানের সময় তার স্ত্রী সুমি বেগমের সাথে শিশু সন্তানদের থানা নিয়ে গেলে সেখান থেকে দাদু মোসলেম বাবুর্চির জিম্মায় শিশুদের ছেড়ে দেয়া হয়।জানা গেছে, বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে এ নিষিদ্ধ বাণিজ্য চালিয়ে আসছে কতিপয় চিহ্নিত দেহ ব্যবসায়ীরা।তারা নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড,করীম কুঠির,বৈদ্ধ্যপাড়া, কাউনিয়া,ভাটিখানা, রুপাতলী/রুপাতলী হাউজিং,বাংলাবাজার,মুন্সি গ্যারেজ,কাজিপাড়া,কলেজ এভেনিউ,মুনসুর কোয়ার্টারসহ বেশ কিছু এলাকায় বর্তমানে ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে প্রায় ২ শতাধিক ভিআইপি কলগার্ল দেহ ব্যবসা চালিয়ে আসছে।এসকল এলাকায় শুধু রাতের আধারেই নয় এ নিষিদ্ধ ব্যবসা চলছে দিনের আলোতেও।যদিও ভিআইপি এলাকায় যৌন ব্যবসা পরিচালিত হয় বিশেষ গোপনীয়তা বজায় রেখে ও ভিন্ন আঙ্গিকে!ভিআইপি এলাকাগুলোতে ফ্ল্যাট বাসায় যাতায়াত করে বিশেষ ধরনের খদ্দের।আর এ ব্যবসার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল ফোন এবং ভিজিটিং কার্ড!একাধিক সূত্রে জানায়,আবাসিক হোটেলে দেহ ব্যবসা বন্ধ হবার পর সেখানে আনাগোনাকারী বিশেষ খদ্দেরদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ রেখে পতিতারা তাদের ফ্ল্যাট বাসায় স্বাগত জানায়।অনেক ভিআইপি কলগার্ল আবার তাদের ফ্ল্যাট বাসা থেকে কার্ড বা কাগজ ছুড়ে দেয়।আর যার মধ্যে শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা বা সমাধানের জন্য তথাকথিত ডাক্তারের নম্বর দেয়া থাকে।কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ সব কার্ড বা কাগজের অন্তরালে থাকে যৌন ব্যবসার প্রচার।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রাউন্ড কম্পাউন্ডের বাসিন্দা মনু জানান,তার হাতে একটি কার্ড পড়েছিল।কল করলে একজন পুরুষ রিসিভ করে।সে বিনয়ের সঙ্গে জানায়,আপনার ফোনের অপেক্ষায় আছেন বরিশালের বিভিন্ন স্কুল,কলেজ,ইউনির্ভাসিটির ছাত্রী ও মধ্য বয়সের মহিলা যৌনকর্মী।বলুন কি সেবা করতে পারি স্যার?নগরীর কয়েকটি স্থান ছাড়া প্রায় সব এলাকাই এ ব্যবসা চলছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।সূত্রে আরও জানা গেছে,বিশেষ শ্রেণীর যৌনকর্মীরা নিজেরা ফ্ল্যাট বাসা-বাড়িতে খদ্দেরকে আপ্যায়নও করে থাকে।কেবল টাকার জন্য নয় অনেক তরুনী নিজেদের মনোরঞ্জনের জন্যও এ কাজে নেমেছে।তবে এর সংখ্যা খুবই কম।নগরীতে এমনও যৌনকর্মী আছে যাদের সন্তানরা নামিদামি স্কুল ও কলেজে পড়ালেখা করে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভিআইপি কলগার্ল জানায়,আজকাল ভদ্র ঘরের মেয়েরাও যৌন ব্যবসার প্রতি ঝুঁকে পড়েছে।স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্রীরা নেমেছে এ পেশায়।কারন অল্প সময়ে মোটা অংকের টাকা ইনকাম করা যায়।অপর একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে,এসব দেহ ব্যবসার পাশাপাশি রমরমা মাদকের বাণিজ্য চলছে।মরন নেশা ইয়াবা,হিরোইন থেকে শুরু করে সব ধরনের মাদক হাত বাড়ালেই পেয়ে যায় নিষিদ্ধ জগতে পা বাড়ানো তরুন-তরুনীরা।
Post Views:
৫,১৪৮
|
|