|
লঞ্চটি চরমোনাই নদীর তীরে নোঙর করে পালিয়ে যায় স্টাফরা
বরিশাল থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে দূর্ঘটনার কবলে তাসরিফ ৩ লঞ্চ
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েই দূর্ঘটনার কবলে পড়ে তাসরিফ ৩ লঞ্চ।বরিশাল লঞ্চঘাট ত্যাগ করার সময় সুরভী ৭ লঞ্চের সাথে ধাক্কা লেগে তাসরিফ ৩ লঞ্চের তলা ফেটে যায়।তলা ফাটা অবস্থায় তসরিফ ৩ লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়া হলে যাত্রীরা ছুটাছুটি শুরু করে।পরে লঞ্চটি চরমোনাই নদীর তীরে নোঙর করে পালিয়ে যায় স্টাফরা।শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বরিশাল লঞ্চঘাট ত্যাগ করেই দূর্ঘটনার কবলে পরে লঞ্চটি।লঞ্চের যাত্রী লাহারহাট ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ জানান, বরিশাল লঞ্চঘাট থেকে তাসরিফ ৩ ত্যাগ করার সময় অপর একটি লঞ্চের সাথে ধাক্কা লাগে।পরে লঞ্চে থাকা যাত্রীরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা।তখন লঞ্চ কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের জানায় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।চরবাড়িয়ার মোর ঘোরার সময় কয়েকজন যাত্রি দেখতে পায় লঞ্চের তলা ফেটে গিয়ে লঞ্চে পানি প্রবেশ করছে।পরে তারা লঞ্চের স্টাফদের জানালে তারা বলে কোন সমস্যা নেই ঢাকা যাওয়া যাবে। লঞ্চ স্টাফদের কথায় নিশ্চিত হতে না পেরে লঞ্চের যাত্রীরা লঞ্চটি ঘুরিয়ে বরিশাল লঞ্চঘাটে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়ার কথা বলে।কিন্তু লঞ্চ স্টাফরা তাতে রাজি না হলে যাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে লঞ্চটি চরমোনাই মাদ্রাসা সংলগ্ন স্থানে থামিয়ে স্টাফরা পালিয়ে যায়।লঞ্চটিতে ২ হাজারেরও বেশি যাত্রী রয়েছে বলেও জানান তিনি।ওই লঞ্চের যাত্রী ঢাকা ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, রওনা হয়ে লঞ্চটি ওই স্থানে যাওয়ার পরে হঠাৎ তলা ফেটে পানি উঠতে দেখা যায়।এ সময় যাত্রীরা এদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করলে লঞ্চ দ্রুত চরে উঠিয়ে দেওয়া হয়।ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, লঞ্চটিতে ঢাকায় যেতে ঝুঁকি থাকলে দ্রুত মেরামত করে ছাড়তে চাইছে কর্তৃপক্ষ।ফলে যাত্রীরা ঊৎকণ্ঠায় রয়েছেন।এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল অফিস কর্মকর্তা (বন্দর) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে নৌ পুলিশ ও তাদের কর্মকর্তারা ছুটে গেছেন।বিস্তারিত জেনে বলতে পারবেন লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশে যাওয়ার অনুমতি পাবে কী না।তাসরিফ ৩ লঞ্চের ঘাট সুপারভাইজার মামুন জানান, লঞ্চটি ঘাট ত্যাগ করার সময় সুরভী ৭ লঞ্চের সাথে ধাক্কা লেগে সামান্ন ক্ষতি হয়।তাতে লঞ্চটি ঢাকা যেতে কোন সমস্যা হতো না।কিন্তু যাত্রীরা ছুটাছুটি শুরু করলে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ চরমোনাইতে ভিড়িয়ে রাখে এবং সংস্কারের কাজ চলছে।কাজ শেষ হলে লঞ্চটি যথারীতি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।মেরামত শেষে ৩ ঘন্টা বিলম্বে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে তাসরিফ ৩ নামের যাত্রীবাহি লঞ্চ।শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টায় লঞ্চটি বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চরমোনাই লঞ্চঘাট এলাকা থেকে ত্যাগ করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।এর আগে লঞ্চের তলার অংশে (ফ্যান্টার) ফাটল দেখা দিলে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে চরমোনাই লঞ্চঘাট সলগ্ন নদী তীরে ২ হাজার যাত্রী নিয়ে নোঙ্গর করে তাসরিফ-৩।যাত্রীদের চাপের মুখে তৎক্ষনাত ফাটল ধরা অংশে মেরামত শুরু করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।এদিকে ঘটনার পরপরই বিআইডব্লিউটিএ, জেলা প্রশাসন ও নৌ-পুলিশের কর্মকর্তাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়।তারা মেরামত কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করে যাত্রীবোঝাই লঞ্চটি পুনরায় পরীক্ষামুলক চালনা করে।এতে নতুন কোন সমস্যা দেখা না দেয়ায় লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয় বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা সরকার মিঠু।তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকৌশলী, বরিশাল নদী বন্দর, নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগ এবং নৌ পুলিশের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মেরামতের পর লঞ্চটি চালনা করে দেখা হয়।পরে সম্মিলিত সিদ্ধান্তে যাত্রী নিয়ে লঞ্চটিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করার জন্য বলা হয়।রাজধানী ঢাকার উদেশ্যে পন্টুন ছেড়ে যাবার পরপরই কীর্তনখোলা নদীতে ৫টি লঞ্চ ও একটি স্টিমারের মধ্যে ঘটেছে পৃর্থক তিনটি দূর্ঘটনা।এরআগে রাত পৌঁনে ৮ টার দিকে বরিশাল নদী বন্দরের ঘাট ত্যাগ করার সময় এমভি তাসরিফ-৩ লঞ্চের ক্ষতিগ্রস্থ সাথে এমভি সুন্দরবন-৮ লঞ্চের ধাক্কা লাগে।এতে তাসরিফ লঞ্চের ডান পাশের মাঝ বরাবর অংশে (ফ্যান্টার) ফাটল দেখা দেয়।কিছুদুর যাওয়ার পরে যাত্রীদের মাঝে বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিলে লঞ্চটিকে নদীতীরে নোঙ্গর করার সিদ্ধান্ত দেয়া হয় বলে জানান বরিশাল নৌ থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার এসআই শফিকুল ইসলাম।
Post Views:
০
|
|