|
নির্বাচন কমিশন এবার সব জটিলতা শেষ করেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে
বরিশালে সিটি নির্বাচন জুন মাসে
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালসহ দেশের পাঁচ সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন করতে দু-এক দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠানো শুরু করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তারা চায়, জুনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হোক। তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জুলাইয়ে এই নির্বাচন করতে ইচ্ছুক। স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন অনুযায়ী পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যেকোনো সময় ভোট গ্রহণ করতে হবে। সে অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক এই চিঠি দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে ৪ সেপ্টেম্বর, খুলনার ২৫ সেপ্টেম্বর, রাজশাহীর ৫ অক্টোবর, সিলেটের ৮ অক্টোবর ও বরিশালের ২৪ অক্টোবর। তবে ইসি বলছে, নির্বাচনের জন্য চিঠি পাঠানোর বাইরেও সীমানা নির্ধারণ-সংক্রান্ত বিষয়সহ নানা জটিলতা নিরসন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানাতে হবে। কমিশন এবার সব জটিলতা শেষ করেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি কর্পোরেশন শাখা জানায়, গাজীপুর নিয়ে এখনো সীমানা জটিলতা আছে। সেখানকার ছয়টি মৌজা ঢাকার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নভুক্ত। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম। হাইকোর্ট এটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিলেও এ বিষয়ে এখনো ফয়সালা হয়নি। তবে বাকি সিটিগুলোয় মামলাজনিত কোনো সমস্যা নেই। এর মধ্যে সীমানা জটিলতায় থমকে গেছে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। স্থানীয় সরকারসচিব আবদুল মালেক বলেন, ‘সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে পাঁচটি সিটি কর্পোরেশনের পাঁচ বছর পূর্তি হবে। সে অনুযায়ী আমরা দু-এক দিনে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে আমাদের দায়িত্ব শেষ করব। তবে আমি মনে করি, জুনের মধ্যে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শেষ করা উচিত। কেননা ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন রয়েছে। আর সংসদ নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ নানা কাজের ঝামেলা থাকে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশনই।’ নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজে লাগানো হবে। তাই অন্তত ছয় মাস আগে নির্বাচন সম্পন্ন করার চিন্তাভাবনা রয়েছে কমিশনের। সে অনুযায়ী আগামী জুন-জুলাইয়ের যেকোনো সময় এক দিনে সব সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এর আগেও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছয় মাস আগে ২০১৩ সালের জুন-জুলাইয়ে পাঁচ সিটিতে নির্বাচন হয়। পাঁচটিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিএনপির প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হন। নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের চিঠি পেলে কমিশন পাঁচজন কমিশনারকে নিয়ে বসে সবকিছু ঠিক করবে। একসঙ্গে পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠান করার বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করে দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। তবে কমিশনের পরিকল্পনা হচ্ছে জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করা। এদিকে ইসির আরেকটি সূত্র জানায়, এবার স্থানীয় সরকার বিভাগ নির্বাচন করার জন্য চিঠি দিলেই হবে না; তাদের স্পষ্ট জানাতে হবে, কোনো সিটি কর্পোরেশনের সীমানা বেড়েছে কি না, নতুন ওয়ার্ড হয়েছে কি না বা অন্য কোনো জটিলতা রয়েছে কি না। ঢাকার মতো এই পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় যাতে কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয়, তাই সবকিছু ঠিক করেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে স্থানীয় সরকার বিভাগেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। সব ধরনের জটিলতা এড়াতে আমরা এবার প্রস্তুতি নিয়েই তফসিল ঘোষণা করব, যাতে ঢাকা সিটি করপোরেশনের মতো কোনো জটিলতা না হয়। আমরা সাধারণত বৃষ্টি-বাদলের সময়, রমজানের সময় নির্বাচনের তারিখ দিতে চাই না। এ ছাড়া আমাদের কিছু পৌরসভা নির্বাচন, ইউনিয়ন নির্বাচন রয়েছে। সব মিলিয়ে কমিশন বসে আলোচনা করেই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করবে।’ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এরপর হয় কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন।
Post Views:
৭০
|
|