|
আগামী দুই মাসের মধ্যে কার্ডের এ ঝামেলা আর থাকবে না – বরিশাল সিভিল সার্জন
বরিশালে সাদা কাগজে হাতে লিখে দেয়া হচ্ছে ইপিআই টিকাদানের সেশন প্লান
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : টিকাদান কার্ডের অভাবে বরিশালে মাসের পর মাস ধরে ব্যহত হচ্ছে শিশুদের স্বাভাবিক ইপিআই টিকাদান কর্মসূচী।হলুদ রংয়ের ওই কার্ডের অভাবে মাঠ পর্যায়ের ইপিআই কেন্দ্রগুলোতে এখন সাদা কাগজে হাতে লিখে দেয়া হচ্ছে শিশুর টিকার সেশন প্লান।অনেক জায়গায় আবার সাদা কাগজে কার্ডের ফটোকপি দিয়েও কোনভাবে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে,ইপিআই টিকাদান কার্ড (শিশু) মূলত যক্ষা,পোলিও, ডিপথেরিয়া,কাশি,ধনুস্টংকার,হেপাটাইটিস-বি,হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ,হাম,নিউমোনিয়া ও রুবেলা রোগের টিকা প্রদানের সেশন প্লানের কাজে ব্যবহৃত হয়।যা টিকার ক্যালেন্ডারও বলা হয়।৪২ দিন পূর্ণ হওয়া শিশুকে প্রথম টিকা প্রদানের দিন থেকে এ কার্ডটি নবজাতক শিশুর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।পাশাপাশি কার্ডটি শিশুকে স্কুলে ভর্তি করানোর সময়,বিদেশ গমনের সময়,টিডি টিকা দেয়ার সময় আর বর্তমান সময়ে জন্মনিবন্ধনের সময়ও জরুরি প্রয়োজন হয়ে থাকে।যা কার্ডের গায়েও ছাপার অক্ষরে লিপিবদ্ধ রয়েছে।কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে বরিশালে এ কার্ড নেই বললেই চলে।তাই সংকট আর নানান ঝক্কি-ঝামেলার মধ্যদিয়েই বছর শেষ করে দিচ্ছে মাঠকর্মীরা।জেলা ইপিআই সুপারেন্টেন্ডেন্ট বজলুর রহমান জানান,জেলার ১০ উপজেলার জন্য বছরে ৯০ হাজার কার্ডের চাহিদাপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।কিন্তু তার অনুকূলে ১২ হাজার কার্ড তারা পেয়েছেন।২/৩ মাস পূর্বে একবার কিছু কার্ড এসেছিলো তা দিয়ে উপজেলাগুলোতে সামান্য কিছু কার্ড পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে।বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের ইপিআই কেন্দ্রের সেবিকা নাছিমা বেগম জানান,শুধু তাদের কেন্দ্রেই মাসে ১৬০ থেকে ১৭০ টি নতুন টিকাদান কার্ডের প্রয়োজন হয়।গত তিন মাস ধরে কার্ডের সংকট ব্যাপক আকার ধারন করেছে।পরবর্তীতে কার্ডের ফটোকপি দিয়ে টিকাদান কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়া হলেও বর্তমানে তাও না থাকায় এখন সাদা কাগজে লিখে দেয়া হচ্ছে।যা নিয়ে প্রায়ই বিড়াম্বনায় পরতে হয়।সাদা কাগজে লিখে দেয়া বা ফটোকপিতে লিখে দেয়ার বিষয়টি কিছু অভিভাবক কোনভাবেই মানতে পারেন না।তারা বিবাদে জড়িয়ে যান।বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ইপিআই সুপারেন্টেন্ডেন্ট কবির হোসেন বলেন,প্রায় তিন মাস ধরে কোন ইপিআই টিকাদান কার্ড (শিশু) আমাদের কাছে নেই।আমরা চাহিদাপত্র সিভিল সার্জন অফিসকে প্রতিমাসেই দিয়ে আসছি কিন্তু কোন কাজে আসছেনা।তাদের কাছেও নাকি এ কার্ড নেই।গত বছর কার্ড সংকট থাকায় প্রায় ৭ হাজার কার্ড কর্পোরেশনের নিজ তহবিল থেকে ছাপিয়ে নেয়া হয়েছিলো।কিন্তু এবার তাও সম্ভব হয়নি।কার্ড না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা অভিভাবক সুমাইয়া আক্তার জানান,শেবাচিম হাসপাতালে সন্তানকে টিকা দিতে নিয়ে গিয়ে দেখা গেছে সাদা কাগজে পরবর্তী তারিখের কথা লিখে দেয়া হচ্ছে।কিন্তু দায়িত্বরতদের কাছে হলুদ কার্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে সরবরাহ নেই বলে জানান।অথচ এই কার্ড ছাড়া বাচ্চার জন্মনিবন্ধনই করা যাবে না।বরিশালের সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন বলেন,এখন ফটোকপি বা সাদা কাগজে টিকাদান কার্ডের কাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।পরবর্তীতে কার্ড আসলে সেগুলো ঠিক করে দেয়া হবে।তিনি আরও বলেন,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে তারা কার্ড ছাঁপতে দিয়েছেন আগামী দুই মাসের মধ্যে কার্ডের এ ঝামেলা আর থাকবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
Post Views:
৭৩৭
|
|