|
নিরিক্ষা দল হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের আয়-ব্যয় নিয়ে আপত্তি দিয়েছে
বরিশালে শেবাচিমে ১৩ লাখ টাকার দুর্নীতি ফাঁস !
স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে করা রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরিক্ষার (ইউজার) ফি’র টাকা অবৈধভাবে লেনদেন করায় অফিস সহকারীকে কারন দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার ওই নোটিশ দেন হাসপাতালের পরিচালক। নোটিশে অফিস সহকারীকে বদলিসহ আইনগত ব্যবস্থা কেন নেয়া হবে না জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শোকজ নোটিশ প্রাপ্ত অফিস সহকারী হলো, মো. মিজানুর রহমান। ঢাকা থেকে আসা নিরিক্ষা (অডিট) দলের নিরিক্ষনে রোগীদের কাছ থেকে প্যাথলজি পরীক্ষার ফি হিসেবে আদায় করা ১৩ লাখ টাকা অফিস সহকারীর অবৈধভাবে লেনদেন এবং দুর্নীতি করার বিষয়টি ধরা পড়ে। তাই নিরিক্ষা দলের আপত্তির প্রেক্ষিতে অফিস সহকারী মিজানুর রহমানকে ওই শোকজ করা হয়। এর সত্যতাও স্বীকার করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তবে নিরিক্ষা দলের আপত্তির বিষয়টি সত্যি নয় বলে দাবি করেছেন অফিস সহকারী মিজানুর রহমান। কিন্তু শোকজ নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। হাসপাতাল সুত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতি বেসামরিক নিরিক্ষা (সিভিল অডিট) অধিদপ্তরের একটি দল হাসাপাতালের ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিরিক্ষনে এসেছিল। নিরিক্ষা দলের কর্মকর্তারা প্যাথলজি পরীক্ষার ফি হিসেবে আদায় করা ১৩ লাখ টাকার হিসেবে গড়মিল পেয়েছেন। তাই ওই বিষয়টিতে আপত্তি দিয়েছেন নিরিক্ষন কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্যাথলজি বিভাগের ১৩ লাখ টাকা লেন দেন নিয়ে একটু ঝামেলা আছে। নিরিক্ষনে বিষয়টি ধরা পড়েছে। তাই নিরিক্ষা কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আপত্তি দিয়েছেন। ওই সময়ে (২০১৬-১৭ অর্থ বছর) অফিস সহকারী মিজানুর রহমান প্যাথালজী বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। এ কারনেই মিজানুর রহমানকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের যথাযথ উত্তর না মিললেও তার বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গহন করা হবে। হাসপাতালের নির্ভযোগ্য সুত্র জানিয়েছে, ওই সময়ে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ও অফিস সহকারী মিজানুর রহমান দায়িত্ব পেয়ে প্যাথলজি বিভাগে সিন্ডিকেট তৈরি করে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সিন্ডিকেট ভুয়া রশিদের মাধ্যমে ফি আদায় করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছে। এছাড়াও আদায় করা ফি’ জমা না দিয়ে সুদ’র বানিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে। তৎকালীন সময়ে হাসপাতালের (বর্তমানে অব.) পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম কাছে বিষয়টি ধরাও পড়ে। অনিয়ম এবং দুর্নীতির দায়ে তখন মিজানুর রহমানকে শেবাচিম হাসপাতাল থেকে মডেল ফ্যামিলিং কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে বদলি করা হয়। তবে সেখানে বেশি দিন থাকতে হয়নি তাকে। সাবেক ওই পরিচালকের সহযোগিতায় পুনরায় শেবাচিম হাসপাতালের প্রশাসনিক শাখায় অফিস সহকারী হিসেবে যোগদান করেন মিজানুর রহমান। এদিকে পরিচালক ডা. এসএম সিরাজুল ইসলাম অবসর গ্রহনের পরে অফিস সহকারি মিজানুর রহমান আবারো প্যাথলজি বিভাগের কোষাধাক্ষ (ক্যাশিয়ার) হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি ওই বিভাগেই দায়িত্ব পালন করছেন। অবশ্য মিজানুর রহমান’র দাবী, যে তিনি নিজে আসেননি। তার ইচ্ছা না থাকার পরেও প্যাথলজি বিভাগের জেষ্ঠ্য ক্লিনিক্যাল প্যাথালজিষ্ট আশীষ কুমার সোমসহ অন্যান্যরা তদবির করে তাকে ফিরিয়ে এনেছেন। তিনি আরো দাবি করেন, নিরিক্ষা দল হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের আয়-ব্যয় নিয়ে আপত্তি দিয়েছে। শুধু প্যাথলজি বিভাগে আপত্তি দিতে পারেনি নিরিক্ষা কর্মকর্তারা। তার পরেও আমাকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি সরকারের কোন টাকা আত্মসাত কিংবা নিজের কাজে ব্যবহার করিনি। বরং টাকা জমা দিতে দু’একদিন হেরফের হয়েছে। আর এটাই আমার অপরাধ। আমি সেভাবেই শোকজের জবাব দেব বলে জানিয়েছেন মিজানুর রহমান।
Post Views:
৪৫২
|
|