|
মাসোয়ারা নিচ্ছে বিসিসি, ট্রাফিক পুলিশ, স্থানীয় কিছু নেতা
বরিশালে রাস্তা দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠছে দোকানপাট,আটোরিক্সা স্টান্ড,মাহেন্দ্রা স্টান্ড ও কাঁচা বাজার
মো: আরিফ হোসেন, অতিথি প্রতিবেদক : বরিশাল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক গুলোর রাস্তা দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠছে আটোরিক্সা স্টান্ড মাহেন্দ্রা স্টান্ড,বাস টার্মিনাল,অবৈধ হাটবাজার ও দোকানপাটসহ একের পর এক স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে।বিসিসি কতৃপক্ষের নেই কোন ভূমিকা।ফলে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।যানজটের কারণে পথচারীরা হচ্ছে ভোগান্তির শিকার।রাস্তা পাড়ি দিতে লাগছে লম্বা সময়। আর এই সড়ক গুলো থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মূল প্রতিবন্ধকতা হলো স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতারা।পথচারীরা বলেন,সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া না হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্ন্য়ন করা কিছুতেই সম্ভব হবে না।পাশপাশি যাত্রীসহ পরিবহন সংশ্লিষ্টদের দুর্ভোগের সমাধানও কখনো মিলবে না এই বরিশাল সিটিতে।তাই যে কোন মূল্যে মহাসড়কের পার্শে¦ এবং নগরীর প্রধান রাস্তার দু’পাশে অবৈধ স্থাপন উচ্ছেদের পরামর্শ তাদের।সেই সঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে ফিরিয়ে আনতে হবে বিসিসি কতৃপক্ষের।অন্য দিকে দেখা গেছে, নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না গাড়ীর মালিক-শ্রমিকরা।প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় শহরের বিভিন্ন সড়কে যত্রতত্র স্থানে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে তুলছে অটোরিক্সা,মটরসাইকেল,আলফা অবৈধ স্ট্যান্ড।দেখে মনে হয় না যেন এটা বরিশাল একটি সিটি।অথচ সম্প্রতি অনুষ্টিত সিটি নির্বাচনে বর্তমান মেয়র আহসান হাবিব কামাল নগরবাসিদের নানা রঙ্গিন স্বপ্ন দেখিয়ে আর উন্নয়নের ফুলঝুড়ি ঢেলে বলে তিনি গিয়েছে।কিন্তু ক্ষমতায় অসার পরে সে বরিশাল নগরীতে উন্নয়নের কি কাজ করেছে সেটা জনগনের মুখে মুখে শোনা যায় প্রতিদিন।এক স্কুল শিক্ষক মো:জাকির হোসেন জানায়, রাস্তায় অবৈধ দোকানপাট আর যানজট তো বরিশাল নগরীর নিত্য নৈমিত্তিক চিত্র।নগরীর সি এন্ডবি রোড এলাকায় বিভিন্ন কোম্পানীর বড় বড় ট্রাক রাস্তার উপর দাড় করিয়ে লোড, আনলোড করে যাচ্ছে নেই কারো কোন নজর।এতে সেখানে জমছে যানজট, এতেই বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি।জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এটি নিরসনের দায়িত্ব কার..? বিসিসি কতৃপক্ষ নিরব কেন?এ সব যেন বিসিসি কতৃপক্ষের নজরে আসছে না।বিসিসি কর্তৃপক্ষের রহস্য জনক নিরব ভূমিকা নিয়েও সচেতন মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।গেল সিটি নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচিত বর্তমান মেয়র যানজট নিরসনসহ বিভিন্ন নাগরিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু সেটা কোথায়!তীব্র যানজটে অতিষ্ট নগরবাসী।স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা, চাকুরীজীবি, কর্মজীবি ও পেশাজীবিসহ নাগরিকদের চরম ভোগান্তি ও সৃষ্টি হচ্ছে এই যানজটের কারনে।অন্য দিকে বিশাল যানযটের চিত্র নগরীর চৌমাথা সড়কের ও জেলখানার মোরের ফুটপাতে।এই ফুটপাত গুলোর ওপর চলছে ভাসমান বাজার।মাছ থেকে মুরগি,শাকসবজি থেকে ফল।কি নেই সেখানে?কেউ ভ্যানে, কেউবা ঝুড়ি করে বিক্রি করে যাচ্ছে এখানে।সেই বাজার ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তার অর্ধেকটা জুড়ে।জমে উঠেছে বেঁচাকেনা।ফুটপাত ও রাস্তা নিয়েছে বাজারের রূপ।প্রথম দেখায় বুঝতে পারবেন না এ কি ফুটপাত,না কোনো একটি কাঁচাবাজার?বাজার বসানোর ফলে ফুটপাত দিয়ে হাঁটার জোর নেই,তাই অগত্যা পথচারীরা বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে হাঁটছেন রাস্তার ওপর দিয়েই।এ দৃশ প্রতিদিনের।শুধু চৌমাথাই নয় সদর রোড জেলখানার মোড়,নতুন বাজার,রুপাতলী,আমতলার মোড়,বাংলাবাজার,শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,সাগরদী,লঞ্চঘাট,রুপাতলী বাস স্টান্ডসহ প্রতিটি রাস্তার একই অবস্থা।শুধু ভাসমান দোকানই নয় স্থানীয় প্রভাবশালীরা ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে ফুটপাথ ও রাস্তা দখল করে স্থায়ী দোকান নির্মান করে ভাড়া দিচ্ছেন তারা।প্রভাবশালী হওয়ার কারনে প্রশাসন বা সিটি কর্পোরেশনও তাদের এড়িয়ে চলে।ফুটপাত দখল করে বাজার বসানোর এ অবৈধ কারবার চলে প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ।এই সময়টাতে ফুটপাত দখলে থাকে বাজারের হাতে।বাজার বসার ফলে প্রতিদিনই এই সময়টাতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে পথচারীদের।এমনকি দূর্ঘটনার শিকার হয় পথচারীরা।স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকদিন ধরে ফুটপাত দখল করে এই এলাকাগুলোতে বাজার বসছে।কিস্তু দেখার যেন কেউ নেই।থাকবেই বা কেনো, বিসিসি ও পুলিশ থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সবাই যে এতে লাভবান হচ্ছে।লঞ্চঘাট এলাকায় ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে বসেছে ফল ব্যবসায়ী।তাদের সঙ্গে কথা হয় সাংবাদিকের।তার প্রশ্ন কতদিন ধরে এখানে ফল বিক্রি করছেন এমন প্রশ্ন তিনি বলেন,প্রায় ৬/৭ বছর ধরে আমি এখানে ফল বিক্রি করে আসছি।ফুটপাতে ব্যবসা করার ফলে খরচপাতি কেমন দিতে হয় জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন,বেশি না।সিটি কর্পোরেশন ও আড়াইদের প্রতিমাসে কিছু দিতে হয়।চৌমাথা এলাকায় ভ্যানে করে কাঁচামাল বিক্রি করছিলেন এক বিক্রেতা।তিনি বলেন,পুলিশ ও বিসিসির কিছু বড় ভাইদের দিনে ৩০-৫০টাকা করে দিলেই হয়।খোঁজা মাত্র এই টাকা দিয়ে দিলে তারা ঝামেলা করে না।আর না দিলে তার উচ্ছেদ অভিযান চালায় পরে আবার তাদের সাথে কথা বললেই ঠিক হয়ে যায়।অপরদিকে বিসিসির স্থায়ী বাজারের সামনে এ ধরনের ভাসমান বাজারের কারনে ব্যবসায়িকভাবে চরম লোকসান হচ্ছে বলে বাজারের ব্যাবসায়ীদের নানা অভিযোগ।যে কারনে বিসিসি’র তৈরী বরিশালের কয়েকটি বাজারে স্থায়ী বাজারগুলোর একাধিক স্টল খালি পরে আছে।যার ফলে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন।সরজমিনে ঘুরে আরো দেখা গেছে,রাতের বেলায় নগরীর অলি গলির সামনে চটপটি দোকানদের হাট।এব্যাপারে বিসিসি’র নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ইমতিয়াজ মাহামুদ জুয়েল জানায়,উচ্ছেদ অভিযান মাঝে মাঝে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে চালানো হয় এবং কিছু দিনের মধ্যেই নিয়মিত ভাবে অভিযান চলানো হবে।
Post Views:
৮৬
|
|