ধারণা মিলছে বরিশাল আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আরো অনেক নাটক দেখা যাবে
বরিশালে মেয়র সাদিকের অভিষেক, শুরুতেই ষড়যন্ত্র
শাকিব বিপ্লব : অবশেষে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নো পূরন হলো।গত মঙ্গলবার বরিশাল সিটি মেয়রের চেয়ারে বসলেন, আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নিলেন। তার শপথ অনুষ্ঠানের পুর্ব-পর এবং সোমবার শপথ নিয়ে বরিশাল ফিরে যে অভ্যর্থনা পেলেন তা হাজারো মানুষের ভালবাসার প্রতিদান বললে অতুক্ত হবে না। দায়িত্ব নেয়ার এই শুভক্ষনে তাকে নিয়ে ভক্ত অনুসারীদের গত তিনদিনে যে উম্মাদনা দেখা গেছে তা বরিশালের রাজনীতি বা কোন জনপ্রতিনিধির ক্ষেত্রে বড়ই বিরল। কিন্তুু আমার মনে শংকা জেগেছে তরুন এই রাজনীতিবিদ মেয়র হিসাবে আগামী দিনগুলোতে তার চলার পথ কতোখানি মসৃন হবে।কারন বেশ কিছুদিন যাবত কানে আসছে তার নিজ ঘরেই শুরু হয়েছে নয়া ষড়যন্ত্র। এই ঘরোয়া কুপরিকল্পনার সাথে দলীয় প্রতিপক্ষ একটি গুরুপ বাতাস দিয়ে খেলা দেখতে চাইছে । একটি অংশের উদ্যেশ্য সাদিক আবদুল্লাহকে অস্থিরতার মাঝে রেখে তাদের কিছু স্বার্থ উদ্ধার করতে কাছাকাছি থেকে পরামর্শ দিতে পারে। অপর গ্রুপের বাসনা তাকে বিতর্কের মাঝে রেখে ইমেজ শংকটে ফেলা। আমার সেই আশংকা এবং প্রাপ্ত খবর অবশেষে সত্যিই হলো। রাত যখন এগারোটা তখন ঘরে ফিরে সবেমাত্র ল্যাবটপটি নিয়ে বসেছিলাম নয়া মেয়রের দায়িত্ব গ্রহনের অনুষ্ঠানমালা নিয়ে কিছু একটা লিখবো। কিন্তুু বিধিবাম। অপ্রত্যাশিতভাবে হঠাৎ একটি ফোন আসলো। ফোনকল রিসিভ করে আলাপ চারিতায় তথ্যদাতা জানালো মেয়রের অভিষেকের আনন্দ শেষেই বরিশালে সন্ত্রাস শুরু হয়ে গেছে। তথ্যদাতার ভাষ্য অনুযায়ী বুধবার উন্নয়ন মেলা বিষয়ক স্থানীয় বেলস পার্ক মাঠে অনুষ্ঠিতব্য কনসার্টের প্রস্তুতি দেখতে গিয়েছিলেন নয়া মেয়র। রাত তখন সাড়ে দশটা। খবর পেয়ে মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি জসিম সেখানে গিয়েছিলেন সময় দিতে।এই ছাত্রলীগ নেতার দাবী এসময় বেশ কয়েকজন যুবক তার উপর হামলা চালায়, এবং ব্যাজ্জিত করে। এরা নাকি তার প্রতিপক্ষ অপর ছাত্রলীগ নেতা মান্না ও রাজীবের অনুসারী। মেয়র সাদিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেও তিনি কোন প্রতিবাদ করেননি অথবা না দেখার ভংগিমায় স্থান ত্যাগ করেন। জসিমের দাবী তবুও সে ঘটনাটি অবহিত করতে নেতা সাদিক আবদুল্লাহকে ফোন দিয়েছিলেন। কিন্তুু তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি। ঘটনা কতটুকু সত্য তা পরখ করতে বিভিন্ন মহলে ফোন দিয়ে যা পেলাম তাহা একেবারে অসত্যও নয়। তবে মান্না ও রাজীব এই দুজনের কেহই সেখানে ছিলেন না। মান্নার সাথে যোগাযোগ করে এ প্রসংগে জানতে চাইলে তিনি আরো অবাক হন। উল্টো প্রশ্ন রাখলেন ভাই কখন ঘটলো এ ঘটনা ? যদ্দুর নিশ্চিত হয়েছি এ হামলার সাথে কেডিসি এলাকার কিছু যুবক জড়িত। তারা তো ছাত্রলীগের রাজনিতীর সাথে জড়িত। এরা চায় না মেয়র সাদিকের সুদিনে জসিম কাছে আসুক। কারণ দীর্ঘদীন ধরে এই মহানগর ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এখানে প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক যে এ ঘটানায় মান্নাকে সংশ্লিষ্ট করার উদ্যেশ্য কি? ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে যারা জড়িত তাদের কয়েকজন জানালো এ প্রশ্নের উত্তর তো অতি সহজ। মান্না নেতা সাদিক আবদুল্লাহর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহচর হিসাবে পরিচিত। সুতরাং মান্নাকে এ ঘটনার সাথে যদি জড়িত করা যায় তাহলে সহজতর হবে সাদিক আবদুল্লাহকে বিতর্কের মাঝে ফেলা। আরেকটি উদ্যেশ্য হচ্ছে সাদিক আবদুল্লাহ যেদিন দায়িত্ব নিলেন সেদিনই ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলা। এতে প্রতিপক্ষদের প্রচার করতে সহায়ক হবে যে বরিশালে সন্ত্রাস শুরু হয়ে গেছে। নচেৎ বিভিন্ন মিডিয়া কর্মীদের কাছে গভির রাত অবধি ফোন করে এ খবর পৌঁছে দেয়ার হেতু কি ? পাশাপাশি প্রমাণ করতে চাইছে আওয়ামীলীগ এর ঘরোয়া বিরোধ এখনো চলমান। কিন্তুু লক্ষনীয় বিষয় হলো প্রয়াত নেতা শওকত হোসেন হিরন অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা জসিম দীর্ঘদীন ধরে সাদিকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার পর এবার সিটি নির্বাচন কালীন সময় সবাইকে এক কাতারে দেখা গেছে। নেতা সাদিক আবদুল্লাহর সাথে এ ছাত্রলীগ নেতার বিরোধের অবসান ঘটেছে বলে যেমন প্রচার পেয়েছিল তদ্রুপ সোস্যাল মিডিয়ায় তাদের দুজনার হাস্যজ্জল চিত্রও দেখা গেছে। তাহলে হঠাৎ করে কেন এ নাটক? অনেকের বুঝতে বাকি নেই মান্না নয় মেয়র সাদিককে বিতর্কিত করার মিশন শুরু হয়ে গেছে। তবে মান্নাকে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরানোর একটি পরিকল্পনাও এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা নিরব হোসেন টুটুল ও ছাত্রলীগ নেতা মান্নাকে নিয়ে এ রকম একটি ষড়যন্ত্রের খবর বেশকিছু দিন যাবৎ শুনছিলাম। ধারণা সেই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে প্রথমেই ফেলা হলো মান্নাকে। এই ষড়যন্ত্র সাদিক আবদুল্লাহ জানে না শিরোনামে আগামীকাল লিখবো অনুসন্ধান মূলক একটি প্রতিবেদন। চমকে দেয়ার মতো। ধারণা মিলছে বরিশাল আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে আরো অনেক নাটক দেখা যাবে।