Current Bangladesh Time
মঙ্গলবার মার্চ ২৫, ২০২৫ ৭:১২ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশালে বিএনপি প্রার্থী সান্টু’র ফোনালাপ ফাঁস! 
Wednesday December 26, 2018 , 6:55 pm
Print this E-mail this

কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এখনও অভিযান চলছে

বরিশালে বিএনপি প্রার্থী সান্টু’র ফোনালাপ ফাঁস!


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালের বানারীপাড়া পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর গুলি করার কথা স্বীকার করেছেন বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের বিএনপির প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। তিনি বলেন,‘আমার ওপর হামলা হয়েছে। প্রাণ বাঁচানোর জন্য আমি ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছি। না হলে আমি আসতে পারতাম না।’ মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মোবাইলফোনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রসঙ্গত, সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল চারটার দিকে বরিশালের বানারীপাড়া পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিএনপির প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টুর সমর্থক ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহে আলমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হন। গুলির ঘটনাও ঘটে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়ে, বিএনপি’র নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সান্টু নিজেও ৮/১০ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেন। এদিকে, বানারীপাড়ায় যাওয়ার আগে নিজের একজন কর্মীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সান্টু। ওই ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যায়। ফোনালাপে তিনি কর্মীকে বলেন,‘আজ কেউ সামনে পড়লে তিনি প্রতিহত করবেন, গুলি করবেন।’ ফোনালাপের পরই তিনি বানারীপাড়া যান। ওই সময় সেখানে সংঘর্ষ হয়। ঘটনার সময় তিনি গুলি ছোড়েন। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহ আলম বলেন,‘আমি ঘটনার সময় উজিরপুরের একটি ইউনিয়নে প্রচারণায় ছিলাম। সেখানে বসে আমি শুনতে পাই, সান্টু তার নেতাকর্মীদের নিয়ে আমাদের কর্মী-সমর্থক ও পথচারীদের উপর অর্তকিত হামলা চালিয়েছেন। লাঠিসোঁটা নিয়ে তারা অতর্কিতভাবে হামলা চালান। সান্টু নিজেই গুলি করেন। এতে পথচারীসহ ১৫/১৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। দুলাল নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালেও পাঠানো হয়েছে।’ শাহ আলম বলেন,‘আমরা এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবেই প্রচারণা চালাচ্ছি। কিন্তু বিএনপি অরাজকতা সৃষ্টি করছে। আমরা এই ঘটনায় থানায় মামলা করেছি।’ তিনি বলেন,‘আমরা খবর পেয়েছি, সান্টুর একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। তিনি গুলি করার কথা বলেই বাসা থেকে বের হয়েছেন। ফোনালাপ থেকে আমরা এই বিষয়টিও জানতে পেরেছি।’ ফাঁস হওয়া ফোনালাপ থেকে জানা গেছে, সান্টু তার এক কর্মীকে বলেন,‘‘আমি বানারীপাড়া আজকে একটু আসবো। আমার খুশি আমি আমু (আসব)। দেহি কেডা আজকে সামনে পরে। হেরা (তারা) করতে পারবে, ঘুইরা বেড়াইবে আর আমরা ঘরে উইঠা বইয়া থাকুমনি? আর্মি আইছে আমি বাইরামু। এখন মুখামুখি হইলে আমি মারমু, সোজা কথা। আমি ওসিকে বলতেছি,‘আমি বানারীপাড়া আসবো। রাস্তা ক্লিয়ার করেন। আমি প্রতিহত করবো।’ আমার সামনে যারা পড়বে আমি গুলি করে দিবো। আমাদের লোকজন তলেতলে হেগো লগে মিটিং করে। আমার কানে সব খবরই আয় (আসে)। তাদের আসতে বলো।’’ এই ফোনালাপের বিষয়ে সান্টু বলেন,‘হ্যাঁ, ওই ফোনালাপ আমার। আমি ও আমার নেতাকর্মীরা ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘরে বসা। আমরা বের হতে পারিনি। তাই আমার নেতাকর্মীরা আমাকে আসতে বলেছিলেন। আমি এরপর রওনা দেই। তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাতুড়ি নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমি প্রাণ বাঁচানোর জন্য ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছি। তাতে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কেউ যদি বলতে পারে, প্রমাণ দিতে পারে, তাহলে আমার জেল-ফাঁসি যা হয়, মেনে নেবো। আমি যদি ফাঁকা গুলি না করতাম, তাহলে ওখান থেকে আর ফিরতে পারতাম না। আমার লাশ আসতো।’ সান্টু আরও বলেন,‘ঘটনার পর আমি জেলা প্রশাসক ও থানা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। থানায় মামলা করার জন্য গেলেও থানা পুলিশ আমাদের মামলা নেয়নি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে চার-পাঁচটি মামলা করেছে। আমরা সবাই পলাতক। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। আহতরা চিকিৎসা নিতে পারছেন না। আমার নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’ এদিকে, বিএনপির এই প্রার্থীর ফোনালাপের দুই ঘণ্টা পর বরিশালের বানারীড়ায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সান্টুর সমর্থকরা ওই সময়ে এলাকায় আওয়ামী লীগ অফিসে ভাঙচুর চালানোসহ বিভিন্ন দোকানপাটও ভাঙচুর করেছে বলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন। ঘটনার পর পৌর শহরে বিজিবি ও পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর বিএনপি প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমদ সান্টুসহ হামলাকারীদের শাস্তির দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পৌর শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বানারীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মৃধা অভিযোগ করেন,‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে সান্টু তিনটি গাড়ি ও ৫/৭টি মোটরসাইকেল নিয়ে বানারীপাড়ায় আসেন। বাসস্ট্যান্ড এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের হাতুড়ি বাহিনী হাতুড়ি নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় সান্টু গাড়ি থেকে বের হলে তাকে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে পেটানো শুরু করলে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাকে বাঁচাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। হামলাকারীরা সান্টুর গাড়িসহ ৩টি গাড়ি ভাঙচুর চালায়। এরপর সান্টু নেতাকর্মীদের নিয়ে উজিরপুরের গুঠিয়া তার বাড়িতে ফিরে যান। হামলায় আমাদের ৫ থেকে ৭ নেতাকর্মী আহত হন।’ বানারীপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সুব্রত কুন্ডু বলেন,‘বিএনপি প্রার্থী সান্টু সন্ত্রাসীদের নিয়ে বানারীপাড়ায় এলে এলাকাবাসী তাদের পথরোধ করে। এসময় নিজের পিস্তল দিয়ে ৪ থেকে ৫ রাউন্ড গুলি ছোড়েন সান্টু। গুলিতে একজন এবং তাদের হামলায় আরও ৫ নেতাকর্মী আহত হন।’ এই বিষয়ে জানতে চাইলে বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন,‘এই ঘটনায় দুইটি মামলা হয়েছে। দুইটি মামলাই ক্ষতিগ্রস্থরা দায়ের করেছেন। আমরা ঘটনার পর ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। সব পক্ষকে নির্বাচনি আচারণবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছি।’ গ্রেফতারের বিষয় ওসি বলেন,‘কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও অভিযান চলছে। আমি থানার বাইরে রয়েছি।’ এই মুহূর্তে গ্রেফতারের সংখ্যা তিনি বলতে পারবেন না বলেও জানান।




Archives
Image
বরিশালে ছিনতাই মামলায় ছাত্রদল নেতা কারাগারে
Image
জীবিত অবস্থায় জাতীয় পুরস্কার দিতে চায় সরকার : প্রধান উপদেষ্টা
Image
বরিশালে বিএনপি নেত্রী নাসরিনের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া-মোনাজাত
Image
জরুরি অবস্থা জারি নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে : স্বরাষ্ট্রসচিব
Image
অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করা ৫ পুলিশ বরখাস্ত