|
বে-সরকারীভাবে কিছু সংস্থা এদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে যা যথেষ্ট নয়
বরিশালে বাড়ছে শিশু শ্রম, দারিদ্রতাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল নগরীসহ সারা বাংলাদেশে বেড়েই চলছে শিশু শ্রম। এতে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ শিশু। অহরহ ঘটছে নানা ধরনের দূর্ঘটনা। বরিশাল নগরীর প্রায় সব জায়গাতেই দেখা যায় শিশুদের দিয়ে নানা কাজ করানো হচ্ছে। খাবার হোটেল থেকে শুরু করে রিক্সা, ভ্যান, বাসগাড়ি, অটোচালক, লেদ মেশিন চালনা, ভাঙ্গারি সংগ্রহ, ওয়ার্কশপ, ইটের ভাটা সহ নানা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের। এসব শিশুদের নানা ঝুঁকিপূর্ন কাজে ব্যবহারের জন্য দারিদ্রতাকে দায়ী করছেন সংশ্লীষ্টরা। কেননা বেশির ভাগ পরিবারই মাথাপিছু আয়ের নিচে বসবাস করছে। রিক্সা চালক ইউনুছ জানান, সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় ছেলেদের দিয়ে কাজ করাতে বাধ্য হচ্ছি। বড় ছেলে নির্মান শ্রমিক আর ছোট ছেলে একটি দোকানে কাজ করে। পড়াশুনার বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান বড় ছেলেটা ৭ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়েছিল এরপর আর পড়াশুনা করা হয়নি। আর ছোট ছেলে কাজের পাশাপাশি পড়াশুনা করছে। চাঁদমারী সংলগ্ন একটি ওয়ার্কশপ এর শিশু শ্রমিক রহমান (১২) জানায়, ছোট বেলা থেকেই এখানে কাজ করছি। কেননা ছোট বেলায় বাবা-মার সর্ম্পক বিচ্ছেদ ঘটার পর মা এখানে কাজে দিয়ে যায়। পড়াশুনা আর কপালে জোটেনি। তবে পরাশুনার অনেক শখ ছিল বলে জানান এই শিশু শ্রমিক। এসব শিশু শ্রমিকদের রুখতে সরকারিসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন কাজ করে থাকলেও কমছে না শিশু শ্রম। এ ব্যপারে শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, শিশুরা যাতে ঝুঁকিপূর্ন কাজে না জড়াতে পারে সেজন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে নানা ধরনের কাজ করে যাচ্ছি। তাদেরও সংগ্রহ করে নানা ধরনের বিনোদন মূলক অনুষ্ঠানসহ পড়াশুনার ব্যবস্থা করছি। কিন্তু ওদের পরিবারের আর্থিক যোগান দিতে বাধ্য হয়ে কাজে জড়িয়ে যাচ্ছে। যার ফলে কোন ভাবেই শিশু শ্রম রোধ করা যাচ্ছে না। তবে এর জন্য অনেকটা দায়ী করছেন বিভিন্ন দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীদের। কেননা তাদের টাকার প্রলোভন দেখে শিশুরা ঝুঁকিপূর্ন কাজে জড়াচ্ছে। যেখানে একটি কারখানায় পূর্নবয়স্ক লোকের জন্য যে বেতন দেয়া দরকার তা দিয়ে ২ থেকে ৩জন শিশুকে কাজে ব্যবহার করা যাচ্ছে। তাই বাড়তি লাভের আসায় দারিদ্র পরিবারের শিশুদেরকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কারখানা, ওয়ার্কশপ, ভাঙ্গারি সংগ্রহ, অটো, রিক্সা, হকারিসহ নানা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। বরিশালের অপরাজেয় বাংলাদেশ এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ফেরদৌসি সুলতানা জানান, শিশু শ্রম বাড়ার পেছনে দারিদ্রতাই প্রধান কারন। তবে এ পেশায় পথ শিশুরা আসছে না তবে গ্রামের শিশুরা আসছে।এদের কম বেতনে মালিক পক্ষ কাজ করিয়ে সুবিধা নিচ্ছে। বে-সরকারীভাবে কিছু সংস্থা এদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে যা যথেষ্ট নয়। তবে সরকারীভাবে উদ্যোগ নিলে শিশু শ্রম বহুলাংশে কমে যাবে। এ দিকে শিশুদের এহেন ঝুঁকিপূর্ন কাজে অগ্রসর না হবার জন্য সবার আগে পরিবারকে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Post Views:
১,১৮৪
|
|