|
সদররোড, নথুল্লাবাদ ও লঞ্চঘাটে ফাঁদ পাতে রোগীর দালালরা
বরিশালে ফের বেসামাল রোগীর দালালরা
স্টাফ রিপোর্টার : একের পর এক সংবাদ প্রকাশ,প্রশাসনের সাথে সমঝোতার পরেও থামছেনা নগরীর রোগীর দালালদের অপকর্ম।বরং আগের তুলনায় আরো বেসামাল হয়ে তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নগরীর প্রানকেন্দ্রে সদর রোড ও নথুল্লাবাদসহ বেশকিছু অলিগলি।বরিশালের এ দুই প্রানকেন্দ্রে রিক্সা/অটোরিক্সা নিয়ে দাড়িয়ে থেকে দূর দূরান্ত থেকে আসা সহজ সরল রোগীদের বিপথে নিয়ে আসছে তারা।মুহুর্তের মধ্যে বরিশালের বিখ্যাত চিকিৎসকদের মেরে ফেলে কিংবা শ্বশুরালয়ে পাঠিয়ে অখ্যাত/কুখ্যাত ডাক্তারদের চেম্বারে নিয়ে এসে তাদের চিকিৎসা না দিয়েই রোগীদের সর্বস্ব হাতিয়ে নিচ্ছে।এক্ষেত্রে দালালদের সহযোগীতা ও শেল্টার দিয়ে যাচ্ছে নগরীর বেশ কয়েকটি কসাইখানা খ্যাত ডায়াগনস্টিক সেন্টার/ক্লিনিক মালিক ও ডাক্তাররা।এদের প্রতারনার ফাঁদে পড়ে প্রত্যান্ত এলাকা থেকে আসা গরীব ও অসহায় রোগীরা নাম সর্বস্ব কিছু ভুয়া পরীক্ষা নিরীক্ষার কাগজপত্র সাথে নিয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।কিন্তু কারও কপালে সঠিক চিকিৎসা সেবা কিংবা ওষুধ কেনার সামর্থ্য জোটে না।এসব দালালরা একাধিকবার বরিশালের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বসে আর দালালি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে ফের শুরু করেছে একই অপকর্ম।জানা গেছে, নগরীর সদর রোডে দালাল কমান্ডার স্বপনের নেতৃত্বে সুমন, আনোয়ার, তপন, সাবু, ইমন, মিন্টু, সাদ্দাম, মামুন, শাহিন ও মজিবর সহ প্রায় ২০/২৫ জন দালাল রোগী ধরার কাজে ব্যস্ত থাকে।তারা রোগীদের ভুলভাল বুঝিয়ে নানা ছলচাতুরীর মাধ্যমে দালাল নির্ভর ডায়াগনস্টিক/ক্লিনিকে নিয়ে যায়।সেখানে রোগী প্রতি ১০/১২ হাজার টাকার প্যাথলজি টেস্ট দিয়ে তার তিনের একাংশ দালালদের হাতে ধরিয়ে দেয় তারা। শুধু তাই নয় দালালদের কেউ প্রশাসনের হাতে আটক হলে সেসময়ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে এসব নাম সর্বস্ব ডায়াগনস্টিক ক্লিনিক মালিকেরা। নগরীর নথুল্লাবাদে আজাহার, কাদের, ইসমাইল, খলিল, কালু, রানা বাদল, ফজলুসহ প্রায় ডজন খানেক দালাল ওৎ পেতে বসে থাকে। বাস এসে থামলেই এসব দালালদের তৎপরতা বেড়ে যায়। নানা কুট-কৌশল ও প্রতারনার জাল ফেলে অসহায় রোগীদের সাথে থাকা টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়াই ওদের প্রধান কাজ। একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, একশ্রেণীর ডায়াগনষ্টিক ও ক্লিনিক ব্যবসায়ী সাংবাদিক, প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের শেল্টারে বছরের পর বছর ধরে ওরা অসহায় রোগীদের বিপথে পরিচালিত করে আসছে।ফলে রিক্সাচালকবেশি এসব দালালদের ফাঁদে পরা রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা না পেয়ে দিনে দিনে মৃত্যুর দুয়ারে ধাবিত হচ্ছে, হয়েছে।কিন্তু প্রত্যান্ত এলাকা থেকে আগত এসব অসহায় রোগীদের গলাকেটে হাতিয়ে নেয়া টাকায় কোটিপতি বনে যাচ্ছে দালালদের শেল্টারদাতা ডায়াগনষ্টিক ও ক্লিনিক ব্যবসায়ীরা।অন্যদিকে দিনে শুধুমাত্র একবার রিক্সায় যাত্রীবহন করে কমিশনের নিদিস্ট হাজার হাজার টাকা রোজগার করছে জোয়ান দালালরা।সূত্রে জানা গেছে, দখিনার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বরিশালে আসা অসংখ্য নিরীহ মানুষকে অপচিকিৎসকের হাতে ধরিয়ে দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে এসব দালালরা।এসব দালালরা অসংখ্যবার প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হয়ে আইনের ফাক ফোকড় গলিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফের জড়িয়ে পরে দালালীসহ নানা অপকর্মে।জানা গেছে, সদরোডের কাকলীর মোড়, বিবির পুকুর পাড়, বাটার গলী, জেল খানার মোড়ে দিনরাত রোগী ধরার ফাঁদ পেতে বসে থাকে কখনো রিক্সা চালক, কখনো শার্টপ্যান্ট পরিহীত ভদ্রলোকবেশী দালাল চক্রের সদস্যরা।তাদের প্রতারনার ফাঁদে পরে অসংখ্য সহায় সম্বলহীন মানুষেরা কশাইখানায় জবাই হচ্ছে প্রতিনিয়ত।লঞ্চঘাটে ওহাব, সালাম, আনোয়ার, স্বপন, জামাল, চান্দুর নেতৃত্বে প্রায় ২৫জন রোগী ধরা দালাল ওৎ পেতে থাকে দূরদূরান্ত থেকে আসা সহজ সরল রোগীদের ভাগিয়ে নিতে। নথুল্লাবাদে আজাহার কাদেরের নেতৃত্বে ডজন খানেক রিক্সাচালকবেশি দালাল প্রতিনিয়ত অসংখ্য রোগীকে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে অপচিকিৎসকদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। এমনকি বাড়িতে যাবার ভাড়া টাকা পর্যন্তও। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এযাবত পর্যন্ত অসংখ্য বুকে ব্যাথা রোগীর হাঁটুতে এক্স-রে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে তথাকথিত ডাক্তারদের অকল্যানে।অনেক রোগী বাড়িতে যাবার পূর্বেই ভূঁয়া ভূঁইফোর ডাক্তারের ওষুধ খেয়ে মৃত্যু বরন করেছে।একবার চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারনার শিকার হয়ে মৃত্যুর পূর্বে চিকিৎসা নিতে আর বরিশালে আসার সুযোগ হয়নি অনেকের।তবুও থেমে নেই ওদের তেলেসমাতি, চলছে শেল্টার, আশ্রয়-প্রশয়।তাই এসব দালালদের গ্রেফতারপূর্বক দৃস্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য বরিশালের পুলিশ কমিশনারসহ প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী মহলসহ সুশীল সমাজ ও সচেতন মহলের লোকজন।
Post Views:
৮৬
|
|