|
অনেকে বলেন পুলিশ-সাংবাদিক পরস্পর বিরোধী পেশা,কিন্তু এটা ঠিক নয় – পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন
বরিশালে প্রথম আলোর সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : প্রথম আলোর কাছে মানুষের প্রত্যাশা অন্য অনেকের চেয়ে বেশি। তাই প্রথম আলোর সত্য ও ন্যায়ের পথে নেতৃত্ব দেওয়ার মানসিকতাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে জোরালো ও সাহসী ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে। বরিশালে প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে বক্তারা এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। আজ শনিবার বিকেলে নগরের স্ব-রোডের পার্টি হাউস মিলনায়তনে এই সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, নগর পুলিশ কমিশনার, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। সুধী সমাবেশে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বলেন, একটি সংবাদ কতটা বস্তুনিষ্ঠ, তা যাচাইয়ের একটি মাধ্যম হলো প্রথম আলো। কারণ, পত্রিকাটিতে নির্ভুল তথ্য থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও নানা মতের মানুষের মতামত প্রদানের ক্ষেত্রে এই পত্রিকাটি অনুসরণযোগ্য। তাই এই পত্রিকার কাছে মানুষের প্রত্যাশাও বেশি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নেওয়া, তরুণদের স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এর অবস্থান আরও জোরালো করার তাগিদ দেন তিনি। পাঠকদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ ছিল অনুষ্ঠানে। কেউ বলেন, প্রথম আলো এ দেশের সংবাদপত্র জগতের বাতিঘর, কারও প্রশ্ন ছিল, পত্রিকার পাতাজুড়ে এত বিজ্ঞাপন কেন? কারও প্রত্যাশা, সমাজে ভালো কাজ করছেন, এমন ব্যক্তিদের নিয়ে আরও বেশি প্রতিবেদন, কেউবা দাবি জানান বরিশাল অঞ্চলের খবর আরও বেশি, আরও বড় করে প্রকাশ করার। প্রথম আলোর বরিশাল প্রতিনিধি সাইফুর রহমানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, ‘প্রথম আলোর চলার পথে সবচেয়ে বড় শক্তি পাঠক। আর আমরা এই পথচলায় অনুপ্রেরণা পাই বাঙালির ইতিহাস থেকে। কারণ বাঙালি জাতির সাহস আছে, সেই সাহসে আমরা বলীয়ান। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা সেই সাহসের প্রমাণ দেখেছি। এ জন্য আমরা প্রথম আলোর ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্লোগান দিয়েছি সাহসী ১৯ বছর।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, গড় আয়ু বেড়েছে, শিল্প, সাহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান, দর্শন সবকিছুতে এগোচ্ছে। অচিরেই আমাদের দেশ মধ্য আয়ের দেশের কাতার থেকে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হবে। দেশের এই উন্নয়ন-অগ্রগতির সঙ্গে প্রথম আলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে পাঠকের যে প্রত্যাশা, সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন যাতে প্রতিদিনের পত্রিকায় থাকে, আমরা সেই চেষ্টা করি এবং ভবিষ্যতেও সেভাবেই পাঠকের সামনে হাজির হতে চাই।’ পাঠকের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে প্রথম আলো নতুন কলেবরে, ভিন্ন আঙ্গিকে হাজির হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি। এরপরই বন্ধ হয়ে যায় মিলনায়তনের সব আলো। প্রজেক্টরের পর্দায় ভেসে ওঠে সাত সাহসী কিশোরী ও তাদের সংগঠন ‘ঘাসফুল’ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র। বাল্যবিবাহ ও ইভ টিজিং প্রতিরোধে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এই সাত সাহসী। পিনপতন নীরবতায় সেই প্রামাণ্যচিত্র উপভোগ করেন অতিথিরা। প্রামাণ্যচিত্র শেষ হতেই দর্শকদের হাততালিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো মিলনায়তন। অনুষ্ঠানে বরিশাল নগর পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন বলেন, ‘অনেকে বলেন পুলিশ-সাংবাদিক পরস্পর বিরোধী পেশা। কিন্তু আমি মনে করি এটা ঠিক নয়। কারণ, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এই দুই পেশার ব্যক্তিরা যতক্ষণ সৎ থাকেন, ততক্ষণ তারা একে অপরের পরিপূরক।’ বরিশাল-৩ আসনের সাংসদ শেখ মো. টিপু সুলতান বলেন, ‘আমরা চাই দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, প্রথম আলো সেই ধারাকে লেখনীর মাধ্যমে এগিয়ে নেবে।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সিটি মেয়র আহসান হাবিব, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মইদুল, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন মানিক, বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন, জাতীয় পার্টির নেতা মহসিন উল ইসলাম হাবুল, নারীনেত্রী শাহ সাজেদা, বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী নাসির উদ্দীন বাবুল, বরিশাল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কাজী মফিজুল ইসলাম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাই মাহবুব প্রমুখ। সমাবেশে পাঠকের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক রাশেদুল আলম ও প্রথম আলোর বরিশালের নিজস্ব প্রতিবেদক এম জসীম উদ্দীন।
Post Views:
১২৬
|
|