|
গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় তার পক্ষে উন্মুক্ত হয়ে কথা বলার সাহস করছেন না পরিবারের সদস্যরাও
বরিশালে পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া ধর্ষক সিরাজের গ্রেফতারের তারিখ নিয়ে রহস্য
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালে হেফাজতে মারা যাওয়া কলেজছাত্রী সাদিয়া আক্তারকে গণধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুমের মামলার প্রধান আসামি সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতারের তারিখ নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। মঠবাড়িয়ার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বরিশাল মহানগর পুলিশ ও মঠবাড়িয়া থানা পুলিশ সিরাজকে ২ ডিসেম্বর আটক করে নিয়ে যায়। তবে ৫ ডিসেম্বর বরিশালে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, তাকে আটক করা হয়েছে ৩ ডিসেম্বর। ৫ ডিসেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। ওই রাতে সে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিল। তবে হাসপাতালের রেজিস্টার খাতায় দেখা গেছে, সিরাজকে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে ৮ ডিসেম্বর এবং ৯ ডিসেম্বর শনিবার রাতে সে মৃত্যুবরণ করে। শেবাচিম হাসপাতালের প্রিজন সেলের রক্ষী মো. রিয়াজ হোসেন বলেন, হাসপাতালে আনার সময় সিরাজ মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। শরীরের সব জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। কোমরের নিচের অংশে মনে হয় পচন ধরেছিল। মাথায়ও আঘাত ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে তাকে প্রিজন সেল থেকে ৯ ডিসেম্বর শনিবার মেডিসিন ওয়ার্ডে নেয়া হয়। ওই দিন তার মাথার সিটিস্ক্যান করা হয়। কিন্তু রাতে তার অবস্থা একবারেই খারাপ হয়ে যায়। কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে, কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের আগে হাসপাতালে ভর্তি ছিল সিরাজ। হস্তান্তরের পর পুনরায় তাকে কারা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া হাসপাতালে মৃত্যুর কারণেও ফিজিক্যাল অ্যাসাল্টের কথা উল্লেখ করা হয়। বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার বদরুদ্দোজা জানান, সিরাজের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল; তবে তিনি সিরাজের বিষয়ে নতুন করে কিছু বলতে রাজি হননি। মৃত সিরাজের গ্রামের বাড়ি মঠবাড়িয়ার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের প্রতিবেশীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যে ছেলেটি অকপটে পুলিশের কাছে সব কথা স্বীকার করেছে, তাকে মারধর বা নির্যাতনের দরকার ছিল বলে মনে হয় না। তবে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় তার পক্ষে উন্মুক্ত হয়ে কথা বলার সাহস করছেন না পরিবারের সদস্যরাও। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে রিপোর্ট পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে ফোনে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, ১৯ নভেম্বর বরিশালের বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির প্যাথলজি বিভাগের ছাত্রী ও নগরীর ২৭নং ওয়ার্ডের আলমগীর খানের মেয়ে সাদিয়া আক্তারকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেয় তার পুরনো প্রেমিক সিরাজুল ইসলাম। এখনও সাদিয়ার লাশ পাওয়া যায়নি।
Post Views:
১৪৫
|
|