আটককৃতরা হলেন মামলার প্রধান আসামি মো: তৌহিদুল ইসলাম ও তার বাবা মো: জাহাঙ্গীর কবির
বরিশালে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার দুই আসামি আটক
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে দায়ের করা মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত দুই আসামিকে আটক করেছে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর সিএন্ডবি রোড এলাকায় তাদের ভাড়া বাসা থেকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন মামলার প্রধান আসামি মো: তৌহিদুল ইসলাম (২৪) ও তার বাবা মো: জাহাঙ্গীর কবির। মামলার প্রধান আসামি তৌহিদুল ইসলাম বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ৪৫ ব্যাচের ছাত্র বলেও জানাগেছে। এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার এএসআই কামরুল জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে দায়ের করা মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত এই দুই আসামিকে আটক করা হয়। আটককৃতদের আদালতে প্রেরন করা হয়। ঢাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে দায়ের করা হয়, যার মামলা নং: ৩৮/২০১৮। ধারা ১১(গ)/৩০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন। মামলা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর মামলার আসামি মো: তৌহিদুল ইসলামের সাথে ২০ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ হয় মামলার বাদীনি রাবেয়া বসরী (২২)-এর। বিবাহের কিছু দিন ভালই চলছিলো তাদের সংসার জীবন। তারা একত্রে ঢাকা জেলার কলাবাগান থানার লেক সার্কাস (৪র্থ তলা) উত্তরপাশে একত্রে বসবাস করতো। বিবাহের কিছুদিন পরে রাবেয়া বসরীর স্বামী তার কাছ থেকে যৌতুক দাবী করে। দাবীর প্রেক্ষিতে রাবেয়া বসরী মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ক্রয় করার জন্য তার বাবার কাছ থেকে এনে যৌতুক বাবদ প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেয় মো: তৌহিদুল ইসলামকে। এ টাকা পাওয়ার পরেও মামলার ২ ও ৩ নম্বর আসামির প্ররোচনায় যৌতুকের দাবীতে রাবেয়া বসরীকে আরও টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে আসামি মো: তৌহিদুল ইসলাম মামলার বাদীনি রাবেয়া বসরীর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে ওষুধের ব্যবসা করার জন্য। রাবেয়া বসরী এত টাকা দিতে না চাইলে তৌহিদুল ইসলাম তাকে তালাক দিয়ে মোটা অংকের টাকা যৌতুক নিয়া অন্যত্র বিবাহ করবে বলে জানায়। ঘটনার কয়েকদিন পর তৌহিদুল ইসলাম তার বাবা ও মাকে নিয়ে বাদীনির বাসায় গিয়ে ১০ লক্ষ টাকা দাবী করে। টাকা না দিতে চাইলে মামলার ২ ও ৩ নম্বর আসামির প্ররোচনায় তৌহিদুল ইসলাম রাবেয়া বসরীক মারধর করে। এসময় তৌহিদুল ইসলামের বাবা-মা মামলার ২ ও ৩ নম্বর আসামিও রাবেয়া বসরীকে মারধর করে। আসামিদের মারধরে রাবেয়া বসরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে ফিরে রাবেয়া বসরী থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দেয়। পরে রাবেয়া বসরী ঢাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে তৌহিদুল ইসলাম, তার বাবা জাহাঙ্গীর কবির (৫০) ও তার মা মোসাম্মৎ রোকেয়া খানব (৪২)-কে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গ্রেপ্ততারি পরোয়ানা বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় আসলে থানা পুলিশ মামলার ১ নম্বর আসামি মো: তৌহিদুল ইসলাম ও ২ নম্বর আসামি জাহাঙ্গীর কবিরকে আটক করে। মামলার বাদীনি রাবেয়া বসরী জানায়, আসামি তৌহিদুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে পড়ার কথা বলে একাধিক মেয়ের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে। পরে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে অশালিন অঙ্গভঙ্গি করে ছবিও দেন। তৌহিদুল ইসলাম একজন প্রতারক বলেও জানান তিনি।