Current Bangladesh Time
বুধবার জুলাই ১৬, ২০২৫ ৩:৫৬ পূর্বাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » সাব-লিড-১ » বরিশালে জেলি মিশ্রিত চিংড়িতে বাজার সয়লাব 
Tuesday January 2, 2018 , 12:38 pm
Print this E-mail this

কম দামে চিংড়ি পেয়ে ক্রেতার সংখ্যাও প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে

বরিশালে জেলি মিশ্রিত চিংড়িতে বাজার সয়লাব


বড় সাইজের এক কেজি চিংড়ি (কেজিতে ১০ থেকে ১২টি মাছ) মাছের দাম ৪০০ টাকারও কম। হাট-বাজার এমনকি নগরীর অলি-গলিতেও ফেরি করে এই দরে চিংড়ি বিক্রি করা হচ্ছে। কম দামে চিংড়ি পেয়ে ক্রেতার সংখ্যাও প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্রেতাই জানেন না টাকা দিয়ে তারা বিষ কিনে খাচ্ছেন। সূত্রমতে, চিংড়ি মাছে জেলি মিশিয়ে ওজন বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে কম দামে। মিশ্রিত ওই জেলি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বরিশালের মৎস্য ব্যবসায়ীরাও স্বীকার করেছেন, প্রতিদিন বরিশালে কমপক্ষে ৩০ মন জেলি মিশ্রিত চিংড়ি বিক্রি করা হয়ে থাকে। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা খুলনা, সাতক্ষিরা ও বাগেরহাট থেকে জেলি মিশ্রিত চিংড়ি আমদানি করছেন। স্থানীয় পাইকারী বাজার থেকে ওই চিড়িং ছড়িয়ে পড়ছে নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাট ও বাজারে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক নগরীর এক ক্রেতা জানান, রবিবার সকালে নগরীর পোর্ট রোড মৎস্য মোকামে তিনি চিংড়ি ক্রয় করতে গিয়ে দেখেন বিক্রেতা দাম চাচ্ছেন প্রতি কেজি ৩৮০টাকা। এতে তার মনে সন্দেহ হয়। পরে প্রতিটি চিংড়ি যাচাই করে তিনি দেখতে পান সব চিংড়িতে জেলি দেয়া। ব্যবসায়ীরা জানান, মৎস্য আড়তদাররা এ ধরনের চিংড়ি এনেছেন। পোর্ট রোডের প্রায় সব ব্যবসায়ীর কাছেই ওই চিড়িং রয়েছে। উন্নয়ন সংগঠক কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, অতিসম্প্রতি এক মাছ বিক্রেতার কাছ থেকে চিংড়ি ক্রয় করতে গিয়ে দেখি সব চিংড়িতে জেলি মেশানো। ওই মাছ বিক্রেতা জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে বেলতলা, লাহারহাটের নদী থেকে চিংড়ি এনে তাতে অনেক ব্যবসায়ী ওজন বাড়াতে জেলি মিশিয়ে থাকে। এ ব্যাপারে বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি অজিত দাস বলেন, পোর্ট রোডসহ বিভিন্ন বাজারে যে চিংড়ি বিক্রি হয় তা মানসম্মত নয়। খুলনা, সাতক্ষিরা, বাগেরহাট থেকে আমদানী হওয়া চিংড়িতে জেলি মেশানো থাকে। এজন্য বিদেশে চিড়িং রপ্তানি হচ্ছে না। অজিত দাস আরও বলেন, বরিশালের মোকামে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ মন ঘেরে চাষ করা বড় চিংড়ির আমদানি হয়। এর অধিকাংশেই জেলি মিশ্রিত। একই সাইজের নদীর চিংড়ির কেজি সাড়ে পাঁচ থেকে ছয়শ’ টাকা হলেও জেলি মেশানো চিংড়ি বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকা দরে। তিনি বলেন, ২/১ দিনের মধ্যে সব ব্যবসায়ীকে চিঠি দিয়ে জেলি মিশ্রিত চিংড়ি বিক্রি না করার জন্য সতর্ক করা হবে। পাশাপাশি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্যও তিনি দাবি করেন। কনজুমার এ্যাসেশিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বরিশাল শাখার সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ দত্ত বলেন, অসৎ ব্যবসায়ীরা চিংড়িতে জেলি দিয়ে ওজন বাড়াচ্ছে। যার ফলে ভোক্তারা একদিকে যেমন ওজনে মাছ কম পাচ্ছেন তেমনি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছেন। তিনি আরও বলেন, ভোক্তা অধিকার অধিদফতর ও বাজার মনিটরিং কমিটির সভায় তিনি এ বিষয়টি তুলবেন। জেলা মৎস্য অধিদফতরের মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, গত বছর পোর্ট রোডসহ বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়ে দুই মণ জেলি মেশানো চিংড়ি জব্দ করা হয়েছিলো। এ বছরও একই অভিযোগ উঠেছে। বিমল দাস আরও বলেন, তরল জেলি সিরিঞ্জ দিয়ে চিংড়ি শরীরে পুশ এবং মাথার মোচার নিচে মেশানো হয়। এটি ‘আগার’ জাতীয় ক্যামিকেল। ব্যাকটেরিয়া কালচার করার জন্য পাউডার জাতীয় এ ক্যামিকেল ব্যবহৃত হয়। যা পানির সংস্পর্শ পেলে ফুলে যায়। এটি ম্যাজিক বলের আকৃতির। যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। এর বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই নগরীর বাজারগুলোতে অভিযান চালানো হবে। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, এ জাতীয় জেলি মানুষের দেহের লিভার, কিডনি দুটোরই ক্ষতি করে থাকে। এ জন্য তিনি সর্বসাধারণকে এ ধরনের চিংড়ি না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

শামীম আহমেদ, অতিথি প্রতিবেদক




Archives
Image
বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ার জন্যই জুলাই গণঅভ্যুত্থান : ভোলায় নাহিদ
Image
বরিশালে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা
Image
আর্থিক খাতে সরকারের পদক্ষেপ, বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের প্রশংসা
Image
প্রাথমিকের ৩২ হাজার শূন্য পদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ
Image
মাকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে