|
শীতের শুরুতেই তাদের বেঁচা-কেনা মোটামুটি ভালো
বরিশালে জমে উঠেছে শীতবস্ত্র বেঁচা-কেনা
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালে ফুটপাতে মুরু হয়ে গেছে শীতবস্ত্রের জমজমাট বেঁচা-কেনা। মধ্যবৃত্ত, নিম্ন মধ্যবৃত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষসহ প্রায় সকল শ্রেণীপেশার মানুষ ফুটপাত বাজারগুলো থেকে শীতের কাপড় কেনাকাটা করছে। দক্ষিনাঞ্চলে যেন বইছে শীতের হিমেল হাওয়া। গ্রামের তুলনায় শহরে শীতের তীব্রতা কম। এরপরও সর্দি, কাশিসহ শীতকালীন নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছেন বরিশালবাসী। কিনছেন হালকা ও মাঝারি ধরণের শীতের যত গরম পোশাক। নগরীর জেলা পরিষদের সামনে দেখা যায় ক্রেতাদের ভীড় শুধু তাই নয় হাজী মোহাম্মাদ মহাসিন মার্কেট, সিটি মার্কেট, নতুল্লাবাদ বাস ট্রার্মিনাল, রূপাতলী বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, সদর রোর্ডসহ বরিশাল নগরের বিভিন্ন স্থানের ফুটপাত ও মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে শীতবস্ত্র বেঁচা-কেনার ধুম। মানুষকে ঈদ বাজারের মত আগ্রহ নিয়ে শীতের কাপড় কিনতে দেখা গেছে। ভিড়ের কারণে দরাদরি ও যাচাই-বাছাই করে কেনার সুযোগ পর্যন্ত নেই। শুধু শীতের কাপড় পছন্দ হলেই একদামেই কিনছেন ক্রেতারা। কালেক্টর সামনে ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ী সালাম বলেন, আমরা বছরে ঈদ-কোরবানী ছাড়া এই শীতে একটু বাড়তি ব্যবসা কারার সুযোগ পেয়ে থাকি। তবে সব বছর আবার এ সুযোগ পাওয়া যায় না বলে তিনি জানান। অন্য আরেক ব্যাবসায়ী শহিদ বলেন, গত বছরও শীতবস্ত্রের মার্কেট জমজমাট ছিল। তবে এবার শীত আসতেই ক্রেতারা আগে ভাগে শীতের কাপর কিনে নিচ্ছে। খেয়াঘাটের জনৈক এক বাসিন্দা বলেন, শীতের প্রভাব বেশি পড়ার আগেই এবার শীতের পোষাক কেনার জন্য ফুটপাতের মার্কেটে এসেছি। তিনি আরো বলেন,আমরা গরীব তাই আমাদের বেশি দামের পোষাক কেনার সামার্থ্য নেই। তাই ফুটপাতের পেষাকই আমাদের একমাত্র ভরসা। অন্য দিকে সদও রোডের আরেক ক্রেতা বলেন, শীত শুরুর আগেই মার্কেটে ভীড়। মানুষের ভিড়ের কারণে দোকানেই ঢোকা কস্টের ব্যাপার। দরদাম করে কেনা তো দূরের কথা। তার পরও একটু আগে ভাগে কিনতে আসলাম। না হলে পরে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে। মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শীত বস্ত্রের মধ্যে বেশি বেঁচা-বিক্রি হচ্ছে ছোট বাচ্চা ও বয়স্কদের কাপড়। মাথার টুপি, পায়ের মোজা, হাত মোজা, মাফলার, স্যুায়েটার, জাম্পার, ফুলহাতা গেঞ্জির দোকানেই বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে। মহাসিন মার্কেট ও সিটি মার্কেটের কম্বল দোকানগুলোতেও তীব্র ভিড়। শীত বস্ত্রের দোকানে ক্রেতার ভিড় বেড়ে যাওয়ায় সুযোগ বুঝে বিক্রেতারাও অতিরিক্ত দাম হাকাচ্ছেন বলেও ত্রেতাদের অভিযোগ। বরিশাল সদর উপজেলার সাবেরহাট থেকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সামনে ফুটপাতে দোকানে শীতবস্ত্র কিনতে আসা সাথী বেগম বলেন, বাচ্চাদের শীতের কাপড় আগে যেটা ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় কেনা যেত এখন সেটা কিনতে হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। তিনি বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ করেন। সিটি কর্পোরেশনের আশপাশের পোশাকের দোকানে অনেকেই কিনছেন শীতের পোশাক। বিক্রেতারা বসেছেন গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে। নগরীর আনাচে-কানাচে ঘুরে ভ্যান গাড়িতে করে যারা ফেরিওয়ালা হিসাবে শীতের পোশাক বিক্রেতারা শীতের পোশাক বিক্রি করছেন তাদের ব্যবসাও জমজমাট। শীতের পোশাক কিনছেন আসা শাহানাজ পারভীন বলেন, তিনি পরিবারের জন্য শীতের চাদর ও সোয়েটার কিনেছেন। এখন তো আর হাড় কাঁপানো শীত নেই। তবে রাতের বেলায় কিছুটা শীত পড়ছে। আর এতেই সর্দি, কাঁশি যেন লেগেই আছে শিশুদের। তাই শীতের হালকা গরম কাপড় কিনতে হচ্ছে। নগরীর মাহাসিন মার্কেটে শীত মৌসুমের শুরুতেই বিপণী বিতানগুলোতে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে সোয়েটার, জ্যাকেট, কোর্ট, টুপিসহ বাচ্চাদের নানা রংয়ের ও ডিজাইনের শীতের সব পোশাক। বরিশাল নগরের সদর রোড, লঞ্চঘাট, জেলা পরিষদের সম্মুখে, বিএম স্কুল গেট, নতুন বাজার, রুপাতলী, কাশীপুর বাজার, মরকখোলার পুল, নথুল্লাবাদ বাসর্টামিনাল, সাগরদীসহ বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতের ওপর ও ভ্যান গাড়ীতে করে বাহারী রঙ্গের শীত বস্ত্র বিক্রি করতে দেখা গেছে। বিক্রেতারা সিংহ ভাগই মৌসুমী পোশাক বিক্রেতা। ভ্যান গাড়িতে করেও এলাকা ভিত্তিক বিক্রি হচ্ছে শীতের গরম পোশাক। তবে এর দাম অকেটাই কম। এখানে শীতের পোশাক বিক্রির জন্য বিশেষ মার্কেট হচ্ছে মহসিন মার্কেট। সেখানেও পুরনো কাপড়ের গাইড এনে বিক্রি করেন সব ব্যবসায়ীরা। তবুও এর মান ভাল এবং দাম তুলনা মূলক কম। তাই মধ্য বিত্তদের পাশাপাশি নগরীর বিত্তবানদেরও এ মার্কেটে শীতের পোশাক কিনতে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। মহসিন মার্কেটের ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ জানান, শীতের শুরুতেই তাদের বেঁচা-কেনা মোটামুটি ভালো। শীত আর একটু বাড়লেই ক্রেতারের সংখ্যা বেড়ে যাবে। জেলা পরিষদের সম্মুখে শীতের পোশাক ক্রয় করতে আসা এক রিক্সা চালক বলেন, অল্পদামেই প্রতি বছর এ ফুটপাত থেকে সে পোশাক ক্রয় করেন। চলতি মৌসুমের এতদিন তার পোশাক কেনার দরকার হয়নি। পুরনো যা ২/১ টা ছিল তা দিয়েই চালিয়ে দিয়েছেন। নিজের জন্য ও স্ত্রী সন্তানদের খুব কম দামের কয়েকটি গরম কাপড় ক্রয় করেছেন।
Post Views:
৫০৩
|
|