তদন্তের পাশাপাশি অপরাধীদের খোঁজে নামে পুলিশের একটি চৌকশ টিম
বরিশালে ছদ্মবেশী প্রতারক চক্র, গ্রেপ্তার ৬
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশালে অপরাধ জগতের যুক্ত হয়েছে ছদ্মবেশী একটি প্রতারক চক্র। এই চক্রটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়ে মানুষের সরলতা সুযোগ খুঁজছে। বিশেষ করে সহজ সরল নারীদের ট্রাপে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ অর্থসহ মুল্যবান সামগ্রী। দীর্ঘদিন যাবৎ শহরে তাদের এই প্রতারণা দেদারছে চলমান থাকলেও পুলিশ কিছুই আঁচ করতে পারছিল না। ফলে অনেকটা নিরাপদ ভাবে বরিশাল শহরের বেশ কয়েকটি অবাসিক হোটেলে আশ্রয় নিয়েছিল। এই প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে এক নারী নিস্ব হয়ে থানায় অভিযোগ করার পরে পুলিশের তৎপরতায় বেরিয়ে আসে পুরো অপরাধ চিত্র। বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি পুলিশের বিশেষ অভিযানে সোমবার এই চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারের পরে পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে এই ৬ সদস্য যে তথ্য উপাত্ত প্রকাশ করেছে তাতে খোদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন মামুনও শুনে রীতিমত ‘থ’ বনে গেছেন। মুলত: এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতেই ওসি ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামিমসহ বেশ কয়েকজন অফিসার অভিযান করে তাদের বাগে নিয়ে আসতে সক্ষম হন। গ্রেফতারদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ, রুপগঞ্জ, চাঁদপুর ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। পুলিশের ভাষায়- এই সব অপরাধীরা অনেকটা গোপনে বরিশালে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নেয়। যেই বিষয়টি বরিশাল পুলিশ প্রশাসনও বুঝতে বা জানতে পারেনি। হোটেলে মাসের পর মাস ভাড়া দিয়ে দিনের বেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় সহজ সরল নারীদের খোঁজে নামে চক্রটি। বিশেষ করে শহরের প্রাণকেন্দ্র চকবাজার, সদর রোড, রুপাতলি ও নতুল্লাবাদ এলাকার নারীদের টার্গেট হিসেবে নেয় তাদের মধ্যে কেউ কেউ। বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন মামুন জানান, এই চক্রটি সম্পতি শহরের সদর রোড এলাকার মোহনা জেনারেল স্টোর মালিকের বোনকে ফাঁদে ফেলে নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কার ও দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এই ঘটনায় তিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের সূত্র ধরে তদন্তের পাশাপাশি অপরাধীদের খোঁজে নামে পুলিশের একটি চৌকশ টিম, যার নেতৃত্বে ছিলেন ওসি আওলাদ হোসেন মামুন নিজেই। এই টিমটি তদন্ত করে নিশ্চিত হয় অপরাধ চক্রের অবস্থান শহরের দক্ষিণপ্রান্ত রুপাতলী। পরবর্তীতে ওসি কৌশলী ভূমিকা রেখে সোমবার বিকালে চক্রের এই ৬ সদস্যকে ওই এলাকার আবাসিক হোটেল মুন থেকে গ্রেফতার করেন। পরবর্তীতে তাদের থানা হেফাজতে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। অবশ্য সেখানে পুলিশকে বিস্তার তথ্য উপাত্ত দিয়েছে এই চক্রটি। পুলিশ তাদের তথ্য নিয়ে আরও ছদ্মবেশি অপরাধীকে বাগে টানতে মাঠে নিয়োজিত রয়েছে। যদিও গ্রেফতার ৬ অপরাধীর বিষয়ে আপাতত কোন তথ্য দেয়নি। তবে মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) সকালে থানায় আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার ব্যাখ্যা তুলে ধরার বিষয়টি জানিয়েছেন ওসি।