Current Bangladesh Time
শনিবার সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪ ১১:২৮ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশালে চাল নিয়ে চালবাজি 
Thursday September 21, 2017 , 10:07 am
Print this E-mail this

চাল নিয়ে সরকারের কঠোর তদারকি থাকায় দর দু-চার দিনের মধ্যেই কমে আসবে

বরিশালে চাল নিয়ে চালবাজি


বিধান সরকার, অতিথি প্রতিবেদক : ভারত থেকে চাল আমদানীতে বাড়তি ট্যাক্স ধরায় সিংহভাগ ব্যবসায়ী বিষয়নি বুঝতে পেরে আড়ত খালি না করে উল্টো মওজুদ করে রেখেছেন।এমনি করে বাড়তি লাভের জন্য মৌসূমে ধান ক্রয় করে মওজুদ করে রেখেছেন মিল মালিকসহ একদল সুযোগ সন্ধানীরা।এর সাথে যুক্ত হয়েছে উত্তারঞ্চলের বন্যা।এই তিনের প্রভাবে এবছর চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল চাল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মো.ফারুক আলম।অপরদিকে সরকার খোলাবাজারে আতপ চাল দেয়াতে ক্রেতারা নিচ্ছেন না বলে এর কোন প্রভাব পড়েনি বাজারে।সিদ্ধ চাল দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন এমনটা জানান, আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা।তবে দু-চার দিনের মধ্যেই চালের বাজার কমে আসবে এমন মন্তব্য জেলা মার্কেটিং অফিসার মো.লিয়াকত আলীর।বরিশাল আঞ্চলের প্রধান ফলন আমন।আর বৈশাখে ওঠা ইরি হলো দ্বিতীয় প্রধান ফসল।তবে শ্রাবণ-ভাদ্রে যে আউশ ধান ওঠে তাতে বাজারে তেমন প্রভাব ফেলে না বলে উত্তরবঙ্গের চালের ওপর নির্ভর করতে হয়।পাশাপাশি ভারতীয় চাল আমদানী হলে বাজার দর সহনীয় পর্যায়ে থাকে এসময়।কোরবানীর ঈদের আগে যে চালের দর বুলেট স্বর্ণা ৩৭ টাকা কেজি ছিল তা চলছে ৪৭ টাকা দরে।অমনি হাইব্রীড মোটায় ১০ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।আর আমন মোটা ১১ টাকা বেড়ে ৬১ টাকা দর চললেও বাজারে মিলছে না।আঠাস চিকনে কেজি প্রতি ৯ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ টাকায়। আর মিনিকেটের বেলায় এই দর ৮ থেকে ৯ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬০ বা ৬১ টাকায়।চালের বাজার এমন হওয়াতে সদর উপজেলার চরকাউয়া গ্রাম থেকে আসা ক্রেতা আ. খালেক কেঁদেই ফেললেন।তার জমি কীর্তনখোলায় বিলীন হয়ে গেছে।অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছিলেন।সুস্থ হয়ে চার দিন পর ফিরে এসে দু’শ টাকা নিয়ে বাজারে এসেছেন।৩ কেজি চাল কিনতেই দেড়’শ টাকার উপরে চলে যাবে।তরিতরকারী কিনবেন কি দিয়ে সেই চিন্তায়ই বিভোর তিনি।ফরিয়াপট্টির শ্রমিক মো. সেলিম বলেন, চালের দাম বেড়েছে বটে, অথচ কাজের মজুরী বাড়েনি।এখন চাল কিনতে গিয়ে সন্তানদের পড়ালেখার খরচ যোগানোই মুশকিল হয়ে পড়েছে।আর জমিরউদ্দিন নামের এক দুধ বিক্রেতা বললেন, চালের দাম বাড়ায় প্রয়োজনের চেয়ে কম কিনতে হচ্ছে।বাড়ির বধূদের বলেছেন কম চাল দিয়েই পুষিয়ে নিতে। এখন কি করবেন বাধ্য হয়ে চাহিদার চেয়ে ভাত কম খেতে হচ্ছে।এতে করে গ্রামের ও কম আয়ের মানুষেরই বেশি সমস্যা হচ্ছে বলে এই দুধ বিক্রেতার অভিমত। ফরিয়াপট্টির কয়েক ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানান, সরকার বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে ক্রয় করেন ইরি ধান আর অগ্রহায়ণ-পৌষে কিনেন আমন ধান।নিয়ম হলেও ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে নামে মাত্র কিনতে পারেন।এর বেশির ভাগ ধানই উত্তরবঙ্গের মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা মওজুদ করেন।এরাই চালের বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করেন।নগরীর চৌমাথা বাজারের চাল ব্যবসায়ী মো. লুৎফর রহমান জানালেন, ৯টি মোকাম থেকে বরিশালে চাল আসে।এগুলো হলো-কুষ্টিয়ার খাজা নগর, নাটোর, নওগাঁ, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, ভোমরা আর সাতক্ষীরা বর্ডার দিয়ে ভারতীয় চাল,ঝিনাইদহ, পাবনা ও বগুড়া। এবারে সরকার ভারতীয় চালের আমদানী শুল্ক বৃদ্ধি করে ২৮ ভাগে নিয়ে যাওয়ার প্রভাবে চালের বাজার দর বৃদ্ধি পেয়েছে।অপরদিকে উত্তর বঙ্গে বন্যায় পানিতে চাতাল ডুবে গিয়ে মওজুদ করা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।আর কোরবানীর সময় চাতাল শ্রমিকরা ছুটিতে থাকায় উৎপাদন ব্যাঘাত হওয়ায় চালের বাজার বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে।এখন ভারতীয় চাল আমদানীর বেলায় মাত্র আড়াইভাগ শুল্ক করার বিষয়টিতে সরকার আরো আগে পদক্ষেপ নিলে বাজার এত বেপরোয়া হতো না বলে মন্তব্য এই ব্যবসায়ীর।রবিবার থেকে শুরু হওয়া খোলা বাজারে চাল বিক্রি কর্মসূচি বরিশালের চালের বাজারে কোন প্রভাব ফেলেনি।আতপ চালে এখানের মানুষ অভ্যস্থ নয়। তাই প্রথম দিনে ১টন মাল কিনে দুই দিনে মাত্র ২৫ কেজি বিক্রি করতে পেরেছেন বলে জানালেন ডিলার শেখ মো. মাসুদ রানা।তিনি জানান,পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার,বগুড়া ও খুলনা জেলা ছাড়া অন্যত্র আতপ চাল বিক্রি হয় না।কেবল ডিলারশিপ টিকিয়ে রাখার জন্য আতপ চাল উঠিয়েছেন।এনিয়ে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজা মোহাম্মদ মহসিন জানালেন, আতপ চাল বরিশাল অঞ্চলে বিক্রি না হওয়ার বিষয়টি তাদের মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন। এখানে সিদ্ধ চাল বিক্রির জন্য দ্রুতই সিদ্ধান্ত আসাবে বলে মনে করেন তিনি।জেলাতে এখন ৩ হাজার ৩৬৫ মে.টন চাল মওজুদ আছে।ওএমএস, ভিজিডি, ভিজিএফ (মৎস্য) এমন জনবান্ধব কর্মসূচির জন্য মাসে গড়ে ৭ হাজার টন চাল প্রয়োজন হয়।এজন্য পাইপ লাইনে আরো সাড়ে ৪ হাজার মে.টন চাল বরিশালে আসার পথে।এতে করে বেগ পেতে হবে না।জেলা মার্কেটিং অফিসার জানান, চালের দামের সাথে আটা,ময়দা, মুড়ি ও চিড়ার দর সম্পৃক্ত।যেমন দু’মাস আগে খোলা আটা কেজি ছিল ২৩-২৪ টাকা।বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৬-২৭ টাকায়।৩৮-৪০ টাকার ময়দা এখন ৪৩-৪৪ টাকায়।অমনি করে ৮৫-৯০ টাকার মুড়ি এখন ৯০-৯৫ টাকা কেজি।আর ৪৪-৪৬ টাকার চিড়া এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে।তবে এই কর্মকর্তা মনে করেন চাল নিয়ে সরকারের কঠোর তদারকি থাকায় দর দু-চার দিনের মধ্যেই কমে আসবে।




Archives
Image
সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, ঝড়ের শঙ্কা, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত
Image
ঝালকাঠিতে ডাকাতি ও হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কুপিয়ে হত্যা
Image
মুখ খুললেন ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের অ্যাডমিন শামীমা তুষ্টি
Image
আড়াই ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
Image
সীমান্তে পিঠ দেখাবেন না : বিজিবিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা