Current Bangladesh Time
শনিবার জুলাই ১২, ২০২৫ ২:৪৫ অপরাহ্ণ
Latest News
প্রচ্ছদ  » স্লাইডার নিউজ » বরিশালে কাপড়ের তৈরি ফুল বিক্রি করছে শান্তামনি ও আকাশ 
Saturday April 14, 2018 , 7:30 pm
Print this E-mail this

পড়ার ফাঁকে শিশুর ফুল বিক্রিতে পরিবারে হাসি

বরিশালে কাপড়ের তৈরি ফুল বিক্রি করছে শান্তামনি ও আকাশ


মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : ৯ বছরের শান্তামনি। স্থানীয় একটি স্কুলে পড়াশোনা করে। পড়ার ফাঁকে বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ক্যাম্পাস জুড়ে তার বিচরণ। এ বিচরণ শুধু ঢং ঢং করে ঘুরে বেড়াতে নয়, এই সময়টায় ফুল ফেরি করে বিক্রি করে সে। তার মতো একই কাজ ছ’বছরের আকাশেরও। কলেজ খোলার প্রতিদিনই তাদের দেখা মেলে হাতে রং বেরঙের ফুল নিয়ে। বয়স অনুযায়ী, পড়াশোনার ফাঁকে বিকেল বেলার সময়টা খেলায় মগ্ন থাকার কথা থাকলেও তাদের কাটে ফুল বিক্রি করে। আশামনি ও আশাক জানায়, ফুল বিক্রির যা আয় হয় তা প্রতিদিনই বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেয়। জানা যায়, বরিশাল শহরের পশ্চিম কাউনিয়া খান বাড়ির ভাড়াটিয়া রিকশাচালক জসিম সরদারের মেয়ে শান্তামনি। স্থানীয় সৈয়দুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে সে। একই বাড়ির ভাড়াটিয়া কাঠমিস্ত্রী উত্তম কুমার। তার ছেলে আকাশ স্থানীয় আনন্দ স্কুলের শিশু শ্রেণিতে পড়ে। আত্মীয় কিংবা পরিবারের সদস্য না হয়েও পাশাপাশি বাসা হওয়ায় দুই পরিবারের মধ্যে বেশ সখ্যতা রয়েছে। এক পরিবার অপরের সহায়তা করে, সন্তানদের দেখভালও করে মিলে মিশে। শান্তামনির মা অজিফা বেগম বলেন, শান্তার বাবা রিকশা চালিয়ে যা আয় করে তা দিয়ে ৫ সদস্যের এই সংসার কোনো মতে চলে যায়। শান্তার বোন বড় হয়ে গেছে, আর ছোট ছেলে কোলে। তাই মেঝ মেয়ে শান্তাই পরিবারের ভার নিয়েছে! তিনি জানান, পাশের বাসার রাধা রানী (আকাশের মা) দীর্ঘদিন ধরে নন ওভেন টিস্যু/ফ্রেবিকের জুট দিয়ে নানা ধরনের ফুল তৈরি করেন। তার বড় ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া নয়ন প্রতিদিন বিকেলে সেসব কৃত্রিম ফুল মুক্তিযোদ্ধা পার্কে নিয়ে বিক্রি করেন। অজিফার ভাষায়, ২/৩ মাস আগে রাধা ভাবির সঙ্গে কথা বলে তার কাঁচামাল দিয়ে ফুল বানানোর কাজ শুরু করি। এরপর তা বিক্রির জন্য শান্তামনিকে বলি-সেও রাজি হয়ে যায়। পড়ার ফাঁকে শিশুর ফুল বিক্রিতে পরিবারে হাসি আর এখন সেখান থেকে বেশ ভালো একটা আয় হয়। ‘ঘরের সৌন্দর্য্যরে জন্য এসব ফুল বেশ মানায়। এজন্য চাহিদাও রয়েছে বেশ।’ সঙ্গে আকাশের মা রাধা জানান, প্রায় চার বছর ধরে ফুল বানানোর এ কাজ করছেন তিনি। এজন্য স্থানীয় একটি নন-ওভেন টিস্যু/ফ্রেবিকের তৈরি ব্যাগ কারাখানা থেকে জুট কিনে আনেন। এরপর সে জুট বাছাই করে কেটে, আঠা ও নারিকেল পাতার শলার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ফুল তৈরি করা হয়। বর্তমানে তিনি ও অজিফা বেগম মিলে বাড়িতে ফুল বানানোর কাজ করেন। আর সে ফুল তার ২ ছেলে ও অজিফা বেগমের মেয়ে শান্তামনি মিলে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্রি করে। ‘তবে সবার আগে পড়াশোনা, এরপর ফুল বিক্রি। এ কাজে তাদের পড়াশোনায় কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি বরং বাড়তি আয়ে পরিবারের সবার মুখে হাসি রয়েছে,’ বলেন রাধা রানী। পাশ থেকে শান্তামনি বলেন, ‘ফুল বিক্রি করাটা অনেক আনন্দের। খেলার ছলেই আমরা এসব বিক্রি করি।’ পড়াশোনা করে বড় কিছু হওয়ার কথা জানিয়ে এই শিশু বলেন, নিয়মিত বাসায় পড়াশোনা করি এবং স্কুলে যাই। অবসর সময়ে বিকেলটায় কিংবা ছুটির দিনে ফুল বিক্রি করি। এই টুকুন বয়সে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আনন্দিত ও গর্বিত শান্তামনির শিক্ষকরাও। সৈয়দুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুলতান আহামেদ বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এমন মনোভাব ও কর্মকাণ্ডে আমরা বেশ গর্বিত।




Archives
Image
খুনের পর লাশের ওপর লাফায় ঘাতকরা
Image
খুলনায় বাসার সামনে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা
Image
বরিশাল ক্যাডেট কলেজের সব পরীক্ষার্থী পেল জিপিএ-৫
Image
নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ বলার নির্দেশনা বাতিল
Image
বিএনপির জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে : মির্জা ফখরুল