মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : বরিশাল নগরীতে সন্ধ্যা রাতে কলেজ ছাত্রীকে সড়কে আটকে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। সংবাদকর্মী পরিচয় দিয়ে ৪ যুবক ওই নাট্যকর্মীকে উত্যক্ত করে। এই ঘটনায় পুলিশ তথাকথিত সংবাদকর্মী ইসমাইল হাওলাদার ও তার সহযোগী উজ্জ্বল সাহাকে গ্রেপ্তারে সফল হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর বগুড়া রোডের এই ঘটনায় বরিশাল মিডিয়া পাড়ায় বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর ধৃত ইসলমাইল ও তার সহযোগী পুলিশের সম্মুখে কলেজ ছাত্রীর কাছে হাত-পা ধরে ক্ষমা চাইলেও শেষ রক্ষা হয়নি। কারন ইসমাইল একে তো বেয়াদব তার উপরে গুরুতর এই অভিযোগের কারনে তার পক্ষে বরিশালের কোন সাংবাদিক-ই অবস্থান নেয়নি। ফলে পুলিশও সেখান থেকে নিশ্চিত ইসমাইল এই ঘটনার অনুঘটক। যে কারনে পুলিশও বিষয়টি নিয়ে বিলম্ব না করে রাতেই একটি মামলা রুজু করে। ওই মামলায় ইসমাইলের সহযোগী অন্তু (২৮), রনি সাহা (২৮) ও আটক উজ্জ্বল সাহা (২৯) সহ অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে অভিযুক্ত করে। পুলিশ জানায়, শহরের একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া নাট্যকর্মী সন্ধ্যার পরে অশ্বিনী কুমার হলে একটি নাটকের মহরত শেষে বন্ধুর সাথে মোটরসাইকেল যোগে নিবাস ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিএম কলেজ এলাকায় যাচ্ছিলেন। শহরের নতুনবাজার টেম্পুস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছানো মাত্রই দেখতে পায় ইসমাইল বাহিনীর অবস্থান। সেই দৃশ্য দেখে কলেজ ছাত্রীর বন্ধু মোটরসাইকেল আরোহী পথ ঘুরিয়ে নগরীর বগুড়া রোডে দিকে যায়। অবশ্য ইসমাইলসহ বাহিনীর অপরাপর সদস্যরাও কলেজ ছাত্রীর পিছু নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে পিছনে ছুটে যায়। কলেজ ছাত্রীর বন্ধু তাকে সেখানে রেখে চলে যাওয়ার সুযোগে ইসমাইল বহিনী তাকে চার দিক থেকে ঘিরে রেখে ছবি তুলতে শুরু করে। এমনকি ওই ছবি পত্রিকায় প্রকাশের ভয়ভিতি দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকাও দাবি করে। কিন্তু কলেজ ছাত্রীর কাছে টাকা নেই জানিয়ে দেয়ার পর ইসমাইলের সহযোগী অন্তু দাবিকৃত টাকা মিটিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেয় এবং তার বিনিময়ে ১ ঘন্টা তার সাথে (অন্তু) একান্তে সময় দেয়ার দাবি করে। এই দাবিতে কলেজ ছাত্রী সম্মত হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয় বাসায় গিয়ে বোরকা পড়ে বের হবার জন্য। কিন্তু মিনিট পাঁচেক পরেই ইসমাইল বাহিনী মোটরসাইকেল যোগে ফের বিএম কলেজ এলকায় কলেজ ছাত্রীর রিক্সার গতিরোধ করে। এমনকি কলেজ ছাত্রীর বন্ধু সোলায়মানকে পেয়েছে জানিয়ে নতুনবাজার এলাকায় আটকে রাখে এবং কলেজ ছাত্রীকে রিক্সা থেকে টেনে নামায়। একপর্যায়ে কলেজ ছাত্রীকে নতুন বাজারে এনে বন্ধু সোলায়মানের পাশে দাড় করিয়ে অশ্লিল ছবি বা ভিডিও চিত্র ধারণ করে ইসমাইল ও তার সহযোগীরা। সেই ছবি পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়। এই খবর বরিশাল পুলিশের কাছে পৌঁছে যাওয়ার পর পরই সংশ্লিষ্ট নতুন বাজার ফাঁড়ির একদল পুলিশ ইসমাইলকে ঘটনাস্থল থেকেই ধরে ফেলে। পরবর্তীতে সেখান থেকে তাকে কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। থানা পুলিশ নিশ্চিত হয় ইসমাইল বাহিনী কলেজ ছাত্রীকে জিম্মি করে নগরীর কোন একটি হোটেলে নিতে চাইছিল। এরই মধ্যে কাকতালিয়ভাবে ইসমাইলের সহযোগী উজ্জ্বল ফোন করে জানান, হোটেল পুরোপুরি রেডি তুমি কেন আসছো না। ইসমাইলের এই ফোনটি তখন রিসিভ করেছিলেন কোতয়ালী মডেল থানার এসি রাসেল। ফলে ইসমাইল বাহিনী যে কি চাচ্ছিল তা আর বলার অপেক্ষা থাকে না। পরে সেই হোটেলে অভিযোন চালিয়ে ইসমাইলের সহযোগী উজ্জ্বলকেও আটক করে। এদিকে এই ঘটনায় ইসমাইল ও উজ্জলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।