বরিশালে এবার কোন আসনের প্রার্থী হবেন তালুকদার মো: ইউনুস !
মুক্তখবর ডেস্ক রিপোর্ট : উজিরপুর-বানারীপাড়া নিয়ে বরিশাল-২ আসন। এ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার মো. ইউনুস। তার বাড়ি বরিশাল শহরে। তালুকদার মো. ইউনুস একেক সময় একেক এলাকায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় এবার তার আসন কোনটি হবে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। আর এ সুযোগটি কাজে লাগাতে মরিয়া বিএনপি। শিল্পপতি এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু এবার কোমর বেঁধে নামবেন ধানের শীষ নিয়ে। ২০০৮ সালে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর অনুপস্থিতিতে বরিশাল-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন এ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস। ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাকে দেয়া হয় বরিশাল-২ আসন। বিএনপি-জামায়াত বিহীন এ নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জাতীয় পার্টির নাসিরউদ্দিন। ওই নির্বাচনে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৮ ভোট, নাসির পেয়েছেন ৫ হাজার ৮৮ ভোট। ইউনুসের বাড়ি বরিশাল মহানগরীর সদর রোডে। বানারীপাড়া বা গৌরনদীতে তার কোনো বাসভবনও নেই। তাই এবার বানারীপাড়াবাসীর মন জয় করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন। এছাড়া বরিশাল-২ আসনে এবার এ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস মনোনয়ন পাচ্ছেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে নানা ধূর্মজাল। এ্যাডভোকেট ইউনুস ছাড়াও সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনিও এবারও মনোনয়নের জন্য লবিং শুরু করেছেন। মূলত: অদৃশ্য কারণে গতবার মনি মনোনয়ন পাননি। অবশ্য তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ দুর্নীতির নানা অভিযোগ ছিল। বরিশালে এসে টেন্ডার বাগিয়ে নিতে প্রকৌশলীর রুমে তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটায় মনি। মূলত: টেন্ডারবাজির কারণেই কেন্দ্রীয় নেতারা তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। কিন্তু এসব পিছনে ফেলে মনি এবারও মনোনয়ন চাইছেন। কেন্দ্রে ব্যাপক লবিং শুরু করেছেন। এছাড়াও মনোনয়ন চাইবেন বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহে আলম, শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হকের দৌহিত্র ফাইয়াজুল হক রাজু প্রমুখ। এর মধ্যে ইউনুস যদি মনোনয়ন না পান তবে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক কিছুটা এগিয়ে থাকবেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। তবে মাঠে নেমে ফায়জুল হক গণসংযোগ শুরু করে দিয়েছেন। শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হকের যোগ্য উত্তরসূরি আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী ফাইজুল হক রাজু এরই মধ্যে চিন্তায় ফেলে দিয়েছেন অন্য প্রার্থীদের। শের-ই-বাংলার পুত্র সাবেক এমপি ফাইজুল হকের পুত্র হওয়ায় আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে রাজুর। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় দ্রুত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। তাছাড়া গত শারদীয় দুর্গা উৎসব উপলক্ষে তিনি এই আসনের সব ক’টি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও নগদ অর্থ প্রদান করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। একাধিক তৃণমূল কর্মীর মতে, দল এমন কাউকে মনোনয়ন দিক সে যেন এলাকার লোক হন। বিএনপিতে এ আসনে একাধিকবার বিজয়ী হন শহিদুল হক জামাল। ১/১১ পরবর্তী সংস্কারপন্থি আখ্যা দিয়ে যে কয়জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় তার মধ্যে শহিদুল হক জামাল অন্যতম। বর্তমানে বয়সের ভারেও তিনি ন্যুব্জ। দলের সঙ্গেও শহিদুল হক জামালের সংশ্লিষ্টতা নেই। জামাল পরবর্তী দলের হাল ধরেছেন নির্বাহী কমিটির সদস্য সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। যদিও তিনি ২০০৮-এর নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন মনির কাছে। সে সময়ে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তাকে নির্বাচনের সময় এলাকায় প্রবেশ করতে না দেয়ার অভিযোগ ছিল। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেক। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তিনি দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন একটি মসজিদ তৈরি করেছেন। নেতা-কর্মীদের ধারণা মিরাকল কিছু না হলে বিএনপির মনোনয়ন পাবেন সান্টুই। তার হাত ধরেই এ আসনটি উদ্ধারে মরণপণ লড়াইয়ে নামবে বিএনপি এটি নিশ্চিত। সান্টু ছাড়াও বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে রনকুল ইসলাম টিপু, দুলাল হোসেন, শহীদুল হক জামাল এবং সাংবাদিক ইলিয়াস খান। জাতীয় পার্টিতে এ আসনে চমক আসতে পারে। এ দল থেকে যাদের নাম আলোচিত হচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। এ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা নেছার উদ্দিন এর নামও এলাকায় আলোচনায় আছে। এ আসন থেকে জাসদের (আম্বিয়া-প্রধান) এ্যাডভোকেট আনিসুজ্জামান আনিস, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদলও মনোনয়ন প্রত্যাশী। সূত্র : দৈনিক মানবজমিন